Sunday, June 4, 2023
Homeঅর্থনীতিআছে মামলা সংক্রান্ত জটিলতা, নামের ভুল: পাটকলের ২ হাজার শ্রমিক পাননি সঞ্চয়পত্র

আছে মামলা সংক্রান্ত জটিলতা, নামের ভুল: পাটকলের ২ হাজার শ্রমিক পাননি সঞ্চয়পত্র

Published on

সাম্প্রতিক সংবাদ

বাজেটে শুল্ক কমানোর উদ্যোগ ইতিবাচক

বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বেড়েই চলেছে। শুধু নিত্যপণ্য নয়, বেড়েছে বিদ্যুতের দাম, প্রাকৃতিক গ্যাস ও...

নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় সরগরম সিলেট নগরী

বার্তাকক্ষ নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা আর মাইকিংয়ে এখন সরগম সিলেট নগরী। কে হচ্ছেন আগামী দিনের নগরপিতা আওয়ামী...

ম্যানইউকে হারিয়ে ‘ডাবল’ চ্যাম্পিয়ন ম্যানচেস্টার সিটি

বার্তাকক্ষ ২৪ বছর পর ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের কোনো ক্লাবের ট্রেবল জয়ের দারুণ এক হাতছানি ম্যানচেস্টার...

৩০০ আসনের সীমানা চূড়ান্ত করে গেজেট প্রকাশ

বার্তাকক্ষ ৩০০ সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ করে চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ৷...

খুলনা সংবাদদাতা
খুলনার বন্ধ হয়ে যাওয়া একটি পাটকলের শ্রমিক ছিলেন মন্টু মিয়া। পরিচয়পত্র জটিলতার কারণে আড়াই বছর ধরে সঞ্চয়পত্রের টাকা তুলতে পারছেন না তিনি। মন্টু মিয়া বলেন, মিলের লেবার অফিস থেকে জানিয়েছে নামের ভুল আছে। যে কারণে সঞ্চয়পত্রের টাকা পেতে সমস্যা হচ্ছে। এ জন্য এভিডেভিড করা হয়েছে। কাগজপত্রও জমা দিয়েছি, তবে সঞ্চয়পত্রের টাকা এখনও পায়নি। আড়াই বছর হয়ে গেল, এখনও ঘুরছি। আমার ৪ ছেলে-মেয়ে। বড় ছেলেটা দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজ করে। তার ইনকাম দিয়ে চলি। সঞ্চয়পত্র পেলে মাসে ব্যাংক থেকে কিছু টাকা পেতাম। এখন মাসের শুরুতে ঘরভাড়া দেওয়ার চিন্তা, বাজারঘাট, বিদ্যুৎ বিলসহ অনেক খরচ। মিল হঠাৎ করে বন্ধ হওয়াতে ছেলেদের উপর চাপ পড়েছে। খুব কষ্টের মধ্যে চলছি। কারও কাছে হাতও পাততে পারি না। না পারি চাইতে, না পারি কইতে। মন্টু মিয়া খুলনার প্লাটিনাম জুট মিলের যান্ত্রিক বিভাগের শ্রমিক ছিলেন। নগরীর খালিশপুর প্লাটিনাম জুট মিলের শ্রমিক-কর্মচারী কলোনীর ২নং গেট সংলগ্ন রোডের ভাড়া বাড়িতে থাকেন তিনি। তিনি আরও বলেন, নিজের ও বাবার নামে সামান্য ভুল থাকার কারণে সঞ্চয়পত্র পাওয়া নিয়ে আজও ভুগছি। তবে নগদ ৯ লাখ টাকা পেয়েছি। আরও ৯ লাখের বেশি সঞ্চয়পত্র পাব। স্ট্রোক করেছি প্রায় এক মাস। চিকিৎসা প্রয়োজন, কিন্তু করতে পারছি না। পয়সাকড়ি লাগে। পয়সা পাইলে এখান থেকে বাসা ছেড়ে চলে যেতাম গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জ কোটালীপাড়ায়। একই মিলের শ্রমিক ইউনুস বলেন, আইডি কার্ডের সঙ্গে মিলের গেট পাসের নামের ভুল ছিল। সেই ভুলের কারণে আজও ভুগছি। মিল থেকে অবসরের অর্ধেক টাকা পেলেও বাকি অর্ধেক টাকার সঞ্চয়পত্র এখনও পাইনি। এখনও ঘুরতে হচ্ছে। কবে পাব তাও জানি না। আমার কোনো সন্তান নেই। স্বামী-স্ত্রী ভাড়া বাসা নিয়ে থাকি। দুজনই অসুস্থ। টাকাগুলো পেলে উপকার হবে। অপর এক শ্রমিক মহিউদ্দিন বলেন, নামে ভুল ছিল। তার খেসারত এখনও দিতে হচ্ছে। মিল কর্তৃপক্ষ আমার নাম মহিউদ্দিনের পরিবর্তে মঈনউদ্দীন লিখেছে। এখন সেই ভুলে ভুগছি। তিনি বলেন, মিল বন্ধের পর নগদ ৭ লাখ ৯৯ হাজার টাকা পেয়েছি। বাকি অর্ধেক টাকা সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে দেবে বলে জানিয়েছে মিল কর্তৃপক্ষ। তবে অনেকে সঞ্চয়পত্র বুঝে পেলেও আমি পাইনি। আমার মতো অনেকেই এই সমস্যায় পড়েছে। পিপলস পাঁচতলা কলোনীর ১নং বিল্ডিংয়ে থাকি। ২ ছেলে ও ২ মেয়ে আমার। নাতি-নাতনি আছে। এখন ছেলেদের আয়ে চলি। খুব কষ্টে আছি। টাকাটা পেলে বাঁচতাম। কখন অসুস্থ হয়ে পড়ব। এই টাকা কে তুলবে। আমাদেরই তুলতে কষ্ট হচ্ছে, ছেলেরা তুলবে কীভাবে? দ্রুত আমাদের সঞ্চয়পত্রের টাকা দেওয়া হোক। তবে শুধু মন্টু মিয়া, ইউনুস আর মহিউদ্দিন নয়, নামের ভুলসহ নানা কারণে এখনও টাকা এবং সঞ্চয়পত্র পায়নি খুলনার রাষ্ট্রায়ত্ত ৭টি পাটকলের স্থায়ী ও বদলি শ্রমিকরা।
বিজেএমসি আঞ্চলিক কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের ২ জুলাই সরকার ২৬টি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের উৎপাদন বন্ধ করা হয়। এরপর শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ কার্যক্রম শুরু হয়। তবে এনআইডি কার্ডের সঙ্গে গেটপাসের নামের ভুল, মামলা সংক্রান্ত জটিলতার কারণে খুলনা ও যশোর অঞ্চলের আলিম, ইস্টার্ন, স্টার, প্লাটিনাম, জেজেআই, কার্পেটিং ও ক্রিসেন্ট জুট মিলের স্থায়ী ও বদলী (অস্থায়ী) ২ হাজার ১৭ জন শ্রমিকের সঞ্চয়পত্র ও নগদ অর্থ আটকে আছে। এরমধ্যে স্থায়ী ২১৮ জন শ্রমিকের নগদ অর্থ এবং ১ হাজার ৪৬৪ জন শ্রমিকের সঞ্চয়পত্রের টাকা এখনও পরিশোধ করা হয়নি। এছাড়া টাকা পায়নি ৩৩৫ জন বদলী শ্রমিকও। খুলনা অঞ্চলের এই সাতটি পাটকলের ১৫ হাজার ৩২ জন স্থায়ী শ্রমিকের মধ্যে ১৪ হাজার ৮১৪ জন শ্রমিককে নগদ ৭৬৫ কোটি ২ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। এখনও ২১৮ জন স্থায়ী শ্রমিকের ৬ কোটি ৪৭ লাখ টাকা বকেয়া রয়েছে। অপরদিকে ১৪ হাজার ৮৩ জন স্থায়ী শ্রমিকের মধ্যে ১২ হাজার ১১৯ জনকে ৬৭৭ কোটি ৮৪ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র প্রদান করা হয়েছে। আর বকেয়া রয়েছে ১ হাজার ৪৬৪ জন শ্রমিকের ৮১ কোটি ৯৪ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র। এছাড়া পাটকলগুলোর ১৪ হাজার ২৭৬ জন বদলী শ্রমিকের মধ্যে ১৩ হাজার ৯৪১ জনকে ১০৯ কোটি ২১ লাখ টাকা প্রদান করা হয়েছে। আর ৩৩৫ জন শ্রমিকের ১ কোটি ১০ লাখ টাকা বকেয়া রয়েছে। বিজেএমসির খুলনা আঞ্চলিক সমন্বয়কারী মো. গোলাম রব্বানী বলেন, অধিকাংশ শ্রমিকদের বকেয়া পাওনা পরিশোধ করা হয়েছে। তবে নামের ভুল ও মামলা সংক্রান্ত জটিলতার কারণে কিছুসংখ্যক শ্রমিকের সঞ্চয়পত্র দেওয়া এখনও বাকি রয়েছে। দ্রুত সমস্যার সমাধান করা হবে।

spot_img
spot_img

এধরণের সংবাদ আরো পড়ুন

৩০০ আসনের সীমানা চূড়ান্ত করে গেজেট প্রকাশ

বার্তাকক্ষ ৩০০ সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ করে চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ৷...

৫ জুন রাত পর্যন্ত উৎপাদনে থাকছে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র

বার্তাকক্ষ কয়লা সংকটে উৎপাদন বন্ধ হচ্ছে দেশের বৃহত্তম কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পায়রার। তবে ৩ জুন কেন্দ্রটি...

শ্রমিক কল্যাণবান্ধব চা শিল্প গড়ে তুলতে হবে: বাণিজ্যমন্ত্রী

বার্তাকক্ষ শ্রমিক কল্যাণবান্ধব চা শিল্প গড়ে তোলার জন্য চা বাগান মালিকসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান...