বার্তাকক্ষ
অভিনয়, ছবি আঁকা ও গান গাওয়ার পাশাপাশি অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরীর আরও একটি বিশেষ গুণ রয়েছে। তার এ গুণটি হচ্ছে অসাধারণ লেখনি শক্তি। তিনি যেন পেশাদার লেখকদের মতো করেই লিখছেন। এ লেখা প্রায় নিয়মিত প্রকাশ করছেন ফেসবুকে।
তার প্রতিটি লেখার শব্দে, বাক্যে বিষয়বস্তু অনুযায়ী ফুটে ওঠে আবেগ অনুরাগের কথা। তার লেখাগুলো ভক্ত-অনুরাগীদের মন ছুঁয়ে যায়। ফেসবুকে পোস্ট করা প্রতিটি লেখার মন্তব্য দেখেই তা বোঝা যায়।
এবার চঞ্চল চৌধুরী তার বাবাকে নিয়ে একটি স্মৃতিচারণামূলক লেখা পোস্ট করেছেন। আজ (১৫ এপ্রিল) দুপুর ১টার দিকে পোস্টে তিনি লিখেছেন, ইদানিং আমার চোখে মোটা ফ্রেমের চশমা আর ব্যাক ব্রাশ করা চুল দেখলেই আমার ভাই-বোনেরা বলে, আমি নাকি দেখতে দিন দিন বাবার মতো হয়ে যাচ্ছি।
নতুন বছরে বাবার কাছ থেকে আশীর্বাদ নেওয়া প্রসঙ্গে চঞ্চল লেখেন, বাংলা বছরের প্রথম দিনটা পার হয়ে গেল। অভ্যাসটা ছিল বাবা মাকে ফোন করে শুভ নববর্ষ বলা, আশীর্বাদ নেওয়া।
এবার আর ফোনে বাবাকে পাইনি!
কয়েক মাস আগে বাবা আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন অনন্তলোকে।
আমার ভেতরটা যে কি কয়, কেমন করে বাবার জন্য, কাউকেই বোঝাতে পারি না। হঠাৎ করেই যখন মনে হয় বাবা নেই! চারপাশটা অন্ধকার লাগে, দম বন্ধ হয়ে আসে।
বাবা ছাড়া কয়টা মাস, কি যেন এক ঘোরের মধ্যে বাস করছি। সমস্ত অস্তিত্বজুড়ে যেন বাবার চলাফেরা। আজ গরমের মধ্যে যখন বসে আছি ড্রইং রুমে, বিদ্যুৎ নেই, হঠাৎ নিজেকে দেখেই চমকে উঠলাম। সত্যিই তো, আমি তো দেখতে বাবার মতোই হয়ে যাচ্ছি।
গ্রীষ্মকালের স্মৃতি নিয়ে চঞ্চল লেখেন, বাবাকেও দেখতাম গরমের মধ্যে তালপাখা হাতে এরকম বসে থাকতে।
ছোট্ট বেলার আবছা রাতের স্মৃতি ভেসে উঠছে চোখের সামনে…।
তখন গ্রামে বিদ্যুৎ আসেনি…।
অবিচল দুটো হাত সারারাত পালাক্রমে তালপাখায় বাতাস দিয়ে ঘুম পাড়াচ্ছে আমায়…।
হাত দুটো ছিল বাবা আর মায়ের।
কি যে নেশা গো ঐ পাখার বাতাসে!
ভেজা চোখে এখনো দেখতে পাচ্ছি ঐ হাত, দুটি হাত, তালপাখা।
বাবা নেই, বাবা আমার কাছে বেশি করে আসে ইদানিং…!
আজ রাতেও এলো এই গরমে, তালপাখা হাতে নিয়ে, আমাকে বাতাস দিয়ে ঘুম পাড়াতেন।
