বার্তাকক্ষ
ঘরোয়া ক্রিকেট বিশেষ করে ঢাকার প্রিমিয়ার লিগে ভুল, বাজে ও পক্ষপাতদুষ্ট নিম্নমানের আম্পায়ারিং এখন নিত্যসঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে। মাঝে একটা সময় পক্ষপাতদুষ্ট আম্পায়ারিং ছিল আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। কোনো কোনো বিশেষ দলের পক্ষে আঙুল তোলার প্রবণতা ছিল কিছু কিছু আম্পায়ারের। আশার কথা, সেটা কিছুটা কমেছে।তবে এখন আম্পায়ারদের ভুল সিদ্ধান্তের ঘটনা বেড়েছে। তাতে করে প্রায় দিনই কোনো না কোনো নেতিবাচক পরিস্থিতির উদ্রেক ঘটছে।
ব্যাটে নয়, প্যাডে বা থাই প্যাডে লেগে যাওয়ার পরও আম্পায়াররা কট বিহাইন্ড দিয়ে দিচ্ছেন। বল লেগস্টাম্প মিস করতো, তারপরও আম্পায়ার লেগবিফোর উইকেটের সিদ্ধান্ত দিয়ে দিচ্ছেন। এসব ভুল সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন ক্রিকেটাররা।আম্পায়ারের আউটের সিদ্ধান্তে এবার ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে মেহেদি হাসান মিরাজ থেকে শুরু করে মাশরাফি বিন মর্তুজার মতো সিনিয়র ক্রিকেটারকেও। কেন এমন হচ্ছে? এই পরিস্থিতি থেকে উত্তোরণের উপায় কী? আম্পায়ার্স বোর্ডের চিন্তাইবা কী?
বিসিবি পরিচালক ও আম্পায়ার্স কমিটির চেয়ারম্যান ইফতেখার রহমান মিঠুর কথা শুনে মনে হচ্ছে, তারাও আম্পায়ারিংয়ের মান নিয়ে সন্তুষ্ট না। চিন্তিত। তিনি অকপটে স্বীকার করছেন, ভুল করছেন আম্পায়াররা। তবে মিঠু বলেন, ‘আমি শতভাগ নিশ্চয়তা দিয়ে বলতে পারি এগুলো ভুল। ইচ্ছেকৃত সিদ্ধান্ত নয়।’
ইফতেখার রহমান জানান, খেলা পরিচালনার মান বাড়ানোর চিন্তাভাবনা আছে তাদেরও। বিসিবি আম্পায়ার্স বোর্ড চেয়ারম্যানের সোজাসাপ্টা কথা, ‘আমাদের নতুন আম্পায়ার আনতে হবে। আমরা পরিকল্পনা করেছি নতুন আম্পায়ারের জন্য। কয়েকদিন পর বিজ্ঞপ্তি যাবে। ছেলে-মেয়ে দুই পক্ষ থেকে নতুন আম্পায়ার নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হবে। এটা কিন্তু একটা প্রক্রিয়া। ওই পরিকল্পনা যাচ্ছে। হাইয়ার ট্রেনিং এইড কী আনা যায়, এটা আমরা চেষ্টা করছি।’
নতুন আম্পায়ার নিয়োগ, আম্পায়ারদের উচ্চতর ট্রেনিংয়ের পাশাপাশি ক্রিকেটারদের প্রতিক্রিয়া কমানোর তাগিদও অনুভব করছেন আম্পায়ার্স কমিটি চেয়ারম্যান।
তিনি বলেন, ‘খেলোয়ারদের প্রতিক্রিয়া নিয়ে কথা বলা আমার এখতিয়ার না। তবে এটা সত্য, আজকাল খেলোয়াড়রাও কিন্তু রিয়্যাক্টটা বেশি করছেন।’
মিঠু যোগ করেন, এরপর সিসিডিএমের সঙ্গে বৈঠকে আম্পায়ারিং নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করার বিপক্ষে কড়া নিয়ম চালুর কথা বলা হবে, ‘এরপর যখন সিসিডিএমের সঙ্গে আলোচনা করবো, তারা নিয়মটা বানায়, আমাদের এটা মানতে হবে। প্লেয়ারদেরও ঠান্ডা হতে হবে। এরকম রিয়্যাকশন আপনি করতে পারেন না মাঠে।’
ক্রিকেটাররা আবেদন করতে গিয়ে আম্পায়ারদের ওপর তাৎক্ষণিকভাবে চাপ প্রয়োগ করছে। আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কড়া শাস্তি। সে ধরনের আইন ঘরোয়া ক্রিকেটে প্রচলনের চিন্তা আছে মিঠুর মাথায়।
তার শেষ কথা, ‘আমরাও যখন খেলতাম, প্রেশার-ট্যাকটিকস ব্যবহার করতাম। এটা কিন্তু প্লেয়াররা করবেই। কিন্তু তখনকার নিয়ম ও এখনকার নিয়মে আকাশ-পাতাল ফারাক। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এটা একদম বন্ধ। আপনি কিছু অসন্তোষ প্রকাশ করলেই ম্যাচ ফাইন। আমাদেরও আস্তে আস্তে ওই লেভেলে যাচ্ছে। দেখেন, মিরাজের ঘটনাতেও সর্বোচ্চ জরিমানা করা হয়েছে। আমার মতে এটা প্লেয়ারদের করা উচিত না। বাংলাদেশের প্লেয়ারদেরও আমাদের সাহায্য করা উচিত ক্রিকেটের মান উন্নয়নে।’
আম্পায়ার্স কমিটির চেয়ারম্যান বললেন ‘আম্পায়াররা ভুল করছে, তবে ইচ্ছে করে নয়’
Published on
