Thursday, September 28, 2023
Homeসাহিত্যআসরে কবিতা শোনালেন আশির পাঁচ কবি

আসরে কবিতা শোনালেন আশির পাঁচ কবি

Published on

সাম্প্রতিক সংবাদ

একাদশে ভর্তিতে বাড়তি ফি নেয়া বন্ধ

রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির সময় বাড়তি ফি আদায়ের নৈরাজ্য দেখা যায়।...

ঝিনাইদহে আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস পালিত

মো. মহিউদ্দীন, ঝিনাইদহ “তথ্যের অবাধ প্রবাহে ইন্টারনেটের গুরুত্ব” এ প্রতিপাদ্যকে সামনে নিয়ে ঝিনাইদহে আন্তর্জাতিক...

বটিয়াঘাটায় দুষ্কৃতিকারী কর্তৃক আমন ধানের ফসল নষ্ট

বটিয়াঘাটা প্রতিনিধি বটিয়াঘাটা উপজেলার সুরখালী ইউনিয়নের গজালিয়া মৌজায় কৃষকের জমিতে অনধিকার প্রবেশ করে প্রায় ৪বিঘা...

শিক্ষা ব্যবস্থাকে আধুনিকায়ন করতে সরকার বদ্ধ পরিকর : এমপি রণজিৎ

শান্ত দেবনাথ, বাঘারপাড়া যশোর-৪ আসনের সংসদ সদস্য রণজিৎ কুমার রায় বলেছেন, বর্তমান সরকারের আমলে দেশের...

বার্তাকক্ষ
ঢাকা: আশির দশক থেকে কবিতা লিখছেন তারা। সে সময় বাংলা কবিতায় যে নতুন মাত্রা যোগ হয়, তাতে তাদের সবার নামই গুরুত্বপূর্ণ।
এমন পাঁচ কবিকে নিয়ে অনুষ্ঠিত হলো ‘পাঁচ কবির কবিতা পাঠের আসর’।
বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর কাঁটাবনের পাঠক সমাবেশে এই আসরের আয়োজন করে সাহিত্য পত্রিকা ‘অনন্য’। আসরে কবিতা পাঠ করেন কবি রেজাউদ্দিন স্টালিন, শাহীন রেজা, সরকার মাসুদ, জুয়েল মাজহার এবং শান্তা মারিয়া।কবিদের কবিতা নিয়ে আলোচনা করেন কবি জাহিদুল হক এবং আসরে সভাপতিত্ব করেন ‘অনন্য’ সম্পাদক কবি মাহবুব হাসান। আসর সঞ্চালনা করেন কবি কামরুজ্জামান।বিকেলের আসরে প্রথমেই কবিতার মৌতাত ছড়ান কবি শান্তা মারিয়া। এসময় তিনি বলেন, কবিতার ঘোরের ভেতর একবার যে প্রবেশ করেছে, তার এই ঘোর থেকে বের হওয়া বেশ কঠিন। আমারও ঠিক তাই!স্বল্পকথা শেষে কবি পাঠ করেন তার ‘ও লো শ্যাম’, ‘ব্যক্তিগত জ্যোৎস্না কুড়ানোর রাত’, ‘বিরল প্রেমিকদের জন্য’, ‘কালো নারীর কাব্য’সহ অন্যান্য কবিতা। আসরে এই কবির কবিতায় উপমা এবং মিথের শক্তির প্রতি কবি-সাহিত্যিকদের মুগ্ধতা লক্ষ্য করা যায়। বিশেষ করে কবিতায় মিথ প্রয়োগের স্ফূর্তির ফলে কবির কবিতায় অভিনব কাব্যভাষা সৃষ্টি হয়েছে বলে মন্তব্য করেন শ্রোতারা।আসরে স্বরচিত কবিতা পাঠের আগে কবি সরকার মাসুদ বলেন, আধুনিক কবিতা শোনার জিনিস নয়, আধুনিক কবিতা পড়ার বিষয়। শোনার জিনিস হলো রোমান্টিক ঘরানার কবিতা। যে কবিতা বিনোদন দেয়, সেটা আধুনিক কবিতার সাথে যায় না। তবুও আমরা বৈচিত্রের সন্ধান করি। সেখান থেকেই আমার কবিতা।
এসময় তিনি তার স্বরচিত ‘এখন’, ‘বিহ্বলতার ভাষা’, ‘সুপ্রিয়’, ‘হৈ চৈ শেষ হওয়ার পর’, ‘হাওয়া বাতাস’, ‘প্রিয় বন্ধু যখন আসে’, ‘একদিন’সহ আরও কয়েকটি কবিতা পাঠ করেন। তার কবিতার বিচিত্র প্রতীক-প্রতিমা উঠে আসে কবিতার সংরক্ত অভিব্যক্তি থেকে, কিছু আবার এই বাংলা-মাটিরই সোঁদা গন্ধ, ভেজা হাওয়া থেকে, যা পাঠককে মৌতাত-মৌ-মৌ ক’রে রাখে বলে মন্তব্য করেন কবিতা ভালোবাসা মানুষেরা।সরকার মাসুদের পর কবিতার খাতা মেলে ধরেন কবি শাহীন রেজা। এ সময় তিনি স্বরচিত ‘নীল চোখ’, ‘স্বাধীনতা’, ‘পাখির গল্প’, ‘শরৎ সৌরবে দুর্গা উড়ান’, ‘বৃশ্চিক’সহ বেশ কিছু কবিতা পাঠ করেন। আসরে এই কবির মুক্তিযুদ্ধে পিরোজপুরের স্মৃতি তুলে ধরে রচিত রূপক কবিতা ‘একদিন রবীন্দ্রনাথ এসেছিলেন আমার শহরে’ বিশেষ সাড়া ফেলে। বিশেষ করে শ্রোতাদের মন্তব্যে- এই কবির কবিতা ব্যক্তি-অভিজ্ঞতাকে পৌঁছে দেয় শাশ্বত-অভিজ্ঞতার সমীপে। ফলে কবিতায় যুক্ত হয় নতুন মাত্রা।এরপর কবি জুয়েল মাজহার একে একে পাঠ করেন- ‘মেগাস্থিনিসের হাসি’, ‘ক্রমহননের পথ’, ‘শীতের দৈত্য’, ‘রুবিকন’, ‘তন্দুরের পাশে বসে’ কবিতাগুলো। এছাড়া কবির আশির দশকের বন্ধুদের জন্য লেখা ‘মম প্রিয় বন্ধুগণ’ এবং কবি বীতশোক ভট্টাচার্যকে নিয়ে কবিতা ‘বীতশোক ফিরে এসো’ কবিতা দুটি সমাদৃত হয় আসরে। নানা উপমা-রূপক ভিড় করে আসে তার এসব কবিতায়। ইতিহাস-পুরাণ, ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা, স্বপ্ন আর সমকালের রূপকাশ্রিত বিচিত্র বিষয়ের ছাপ ও অভিঘাত টের পাওয়া যায় তার কবিতার ছত্রেছত্রে।আসরে সর্বশেষ কবিতা পাঠ করেন কবি রেজাউদ্দিন স্টালিন। আসরে তিনি ‘সূচনাপর্ব’, ‘প্রতিবিদ্যা’, ‘দুর্যোগ থেকে দুর্যোগের এক পা’, ‘নিষিদ্ধ পল্লী’, ‘সোনামুখী ধানশীষ পূর্ণপ্রাণ’, ‘সমকালে কালবেলা’সহ অন্যান্য কবিতা পাঠ করেন। তার কবিতায় ফুটে ওঠে একটি এলাকা, দেশ অথবা বিশ্বের রাজনৈতিক পরিস্থিতি, পর্যবেক্ষণ, আচরণ, ক্ষমতা ইত্যাদি। তার সেসব কবিতার শৈলী, কবিতার ভাষা ও তার ব্যবহার, ছন্দ ও অলংকার সহজেই মুগ্ধ করে আসরে আগত অতিথিদের।কবি রেজাউদ্দিন স্টালিন বলেন, একটা সময় বলা হতো কবিতা বেশি দিন বাঁচবে না; তবে এখন সবাইকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে কবিতা সাহিত্যের অন্যতম একটি প্রধান মাধ্যম। ভালো কবিতা সব সময় উচ্চারণ দাবি করে। আমরা আশা করি, আমাদের সামনে অনেক আলো। আর এই আলোর কবিতা মানুষের জন্য, উচ্চারণের জন্য।আয়োজনের শেষ অংশে পাঁচ কবির কবিতা নিয়ে আলোচনা করেন কবি জাহিদুল হক। এসময় তিনি বলেন, কবিতায় মিথের ব্যবহার নিয়ে আমাদের যেমন আরও কাজ করা দরকার তেমনি উপমা ও মিথের যথাযথ প্রয়োগ আমাদের কবিতাকে আরও সুন্দর করতে পারে। এই কবিদের কবিতা শুনে মনে হয়েছে এগুলো আধুনিক সময়েরই ইঙ্গিত দেয়। এছাড়া কবিতাতে ছন্দের কাজ রয়েছে দারুণ। কবিতায় প্রেম, চিত্রকল্প এবং উপমার ব্যবহার হয়েছে বেশ। বিশেষ করে প্রেমের সঙ্গে স্বদেশকে মিলিয়ে যে চিত্রকল্প তা শ্রোতাকে টানতে বাধ্য। এছাড়া কবি জুয়েল মাজহারের কবিতার আলাদা একটা শক্তি রয়েছে। তিনি রোমান ও গ্রিক অনুষঙ্গ প্রয়োগে আরও সুন্দর করে তুলেছেন তার কবিতা, যা মুগ্ধ করে পাঠকদের। আর রেজাউদ্দিন স্টালিনের কবিতায় নতুন বিভিন্ন অঞ্চল খোলার চেষ্টা রয়েছে। তার কবিতায় উঠে আসছে আমাদের আধুনিক সময়ে পৃথিবীর দেশে দেশে হারিয়ে ফেলা স্বাধীনতা আর আতঙ্ক। সেইসঙ্গে এর মধ্যে তিনি কবিতার আশাও জাগিয়ে রাখছেন, যা পাঠককে আকৃষ্ট করে।

spot_img
spot_img

এধরণের সংবাদ আরো পড়ুন

স্বপ্নবাজ

প্রতিদিনের ডেস্ক আহমদ সবসময় ভবিষ্যত নিয়ে ভাবে।ভবিষ্যতে সে কী হবে?কী করবে? এসব ভাবতে ভাবতে একসময়...

তাওসিফ মাইমুনের কবিতা

আড়ি ল্যাম্পপোস্টের আলোয় হবে আমাদের আড়ি অবাক দৃশ্যে যতটা পথ দাও না পাড়ি বেলা ফুরালে ফিরবো না...

ধ্বংসের পথে ৫০০ বছরের ফকির বালেগশাহ মসজিদ

প্রতিদিনের ডেস্ক তিন গম্বুজ ‘ফকির বাল্লেগ শাহ্ মসজিদ’ মোগল আমলে নির্মিত ,প্রায় ৫০০ বছরের...