বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে হোযাইটওয়াশ করে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতে ইতিহাস গড়েছে বাংলাদেশ। যেই ই-টোয়েন্টিকে ধরা হতো বাংলাদেশের দুর্বলতার জায়গা, সেই টি-টোয়েন্টিতেই টাইগাররা বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের হোযাইটওয়াশ করেছে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নতুন এক বাংলাদেশের দেখা পেয়েছে ক্রিকেট বিশ্ব। প্রথমবারের মতো কোনো ফরম্যাটে ইংল্যান্ডকে হোযাইটওয়াশ করে সিরিজ জিতলেন টাইগাররা। হোযাইটওয়াশ করে এ সিরিজ জয়ে নায়কের ভূমিকা পালন করেছেন লিটন দাস এবং বাঁহাতি ব্যাটসম্যান নাজমুল হাসান শান্ত। এছাড়া অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে টাইগারদের জয় পেতে বড় ভূমিকা রাখেন মেহেদী হাসান মিরাজ। টাইগারদের এ সাফল্যগাথা ক্রিকেট ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। সোনার ছেলেদের নিপুণ ক্রিকেটশৈলীতে আমরাও উল্লসিত। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে আমাদের প্রাণঢালা অভিনন্দন। চট্টগ্রামে প্রথম ম্যাচে ইংল্যান্ডকে ৬ উইকেটে হারিয়ে সিরিজের দুর্দান্ত সূচনা করেছিল বাংলাদেশ। ঢাকায় দ্বিতীয় ম্যাচেই টাইগারদের সামনে ছিল সিরিজ জয়ের হাতছানি। জয়ের লক্ষ্যেই টসে জিতে বোলিং নেন টাইগার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। বাকি কাজটা করে দেন বাংলাদেশের বোলাররা। বলতে গেলে মিরাজ একাই ভেঙে দেন ইংলিশদের ব্যাটিং লাইনআপ। ৪ ওভারে মাত্র ১২ রান দিয়ে নেন ৪ উইকেট। ৭ বল হাতে রেখেই ৪ উইকেটের জয় তুলে নিয়ে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ নিশ্চিত করেছে টাইগাররা। আর শেষ ম্যাচে চমক দেখিয়েছে টাইগাররা। আর এই জয়ের মধ্যদিয়ে ইংলিংশদের প্রথমবারের মতো বাংলাওয়াশ করল সাকিব-লিটনরা। শেষ ম্যাচে ১৬ রানে জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। ডানহাতি এই ব্যাটার লিটন এদিন আউট হয়েছেন ক্যারিয়ার সেরা ৭৩ রানের ইনিংস খেলে। সাকিব আল হাসানের পর দ্বিতীয় বাংলাদেশি বোলার হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে ১০০ উইকেট নেয়ার কৃতিত্ব দেখালেন বাংলাদেশের তারকা পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। লিটনের ৫৭ বলে ১০ চার আর ১ ছক্কায় গড়া ৭৩ রানের ইনিংসে ভর করেই লড়াকু সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ। দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলার সুবাদে ম্যাচসেরার পুরস্কার উঠেছে লিটনের হাতে। তবে সিরিজসেরা হয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। শান্ত তিন ম্যাচেই রান পেয়েছেন (আগের দুই ম্যাচে ৫১ আর অপরাজিত ৪৬)। গতকাল ৩৬ বলে খেলেছেন ৪৭ রানের হার না মানা ইনিংস। সবমিলিয়ে এই সিরিজে সর্বোচ্চ রান (১৪৪) সংগ্রাহক এই বাঁহাতি। এক সময় বাংলাদেশ বড় দলগুলোর সঙ্গে খেলার আগেই হেরে যেত। এখন আমরা অস্ট্রেলিয়া, সাউথ আফ্রিকা, ইংল্যান্ড, ভারত, পাকিস্তানের মতো শক্তিশালী দলকে মোকাবিলা করছি। তাদের সঙ্গে জয়ী হয়েছি একাধিকবার। টাইগারদের ক্রিকেট জ্ঞান-ধ্যান, সাহস, টেকনিক, আত্মবিশ্বাস ও দায়-দায়িত্ব অনেক গুণ বেড়ে গেছে। বিশ্ব ক্রিকেটেই বাংলাদেশ এখন এক দুর্নিবার শক্তি। ক্রিকেটাররা যে বিশ্ব দরবারে শাসন করতে প্রস্তুত হচ্ছে, তাও বুঝিয়ে দিয়েছে ইংরেজদের বাংলাওয়াশ করার মাধ্যমে। এতে আত্মহারা হলে চলবে না, আত্মবিশ্বাসী হতে হবে। এই আত্মবিশ্বাসকে কাজে লাগানোর দৃঢ় সংকল্প নিতে হবে। টাইগারদের জয়ের ধারা অব্যাহত থাকুক-এই শুভকামনা আমাদের।