বার্তাকক্ষ ,,ট্রাভেল অ্যাডাপটার বিষয়টি সম্প্রতি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করেছে। কিন্তু অনেকেই জানেন না এই পণ্যটি কেন জরুরি এবং কি কাজেই বা আসে। তবে ল্যাপটপ কিংবা স্মার্টফোন, ইলেকট্রনিক গ্যাজেটের জন্য ইউনিভার্সাল ট্রাভেল অ্যাডাপটার সবসময় জরুরি।
আপনার বাড়িতে হয়ত চার্জার লাগানোর জন্য দুই পিনের প্লাগ আছে। আবার অনেক বাসায় তিন পিনের অ্যাডাপটার আছে। অনেক সময় দূরে কোথাও গেলে এবং তৎক্ষণাৎ চার্জ দেওয়ার প্রয়োজন হলে দেখা যায় আপনার চার্জারের সঙ্গে পোর্ট মিলছেনা। আবার ভোল্টেজ যদি ঠিকঠাক না থাকে তাহলে তো আপনার ডিভাইসেও সমস্যা হতে পারে। তাই সবসময় সঙ্গে একটি ইউনিভার্সাল ট্রাভেল অ্যাডাপটার রাখা ভালো।
যাদের দীর্ঘক্ষণ বাইরে থাকতে হয় অথবা ঘনঘন ট্যুরে যেতে হয় তাদের জন্য এই গ্যাজেটটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সচরাচর এই পণ্যটি কেনার সময় আমরা অনলাইনে কোনো মডেল দেখলে কিংবা কম্পিউটার গ্যাজেট শপে গিয়ে কয়েকটা দেখেই কিনে ফেলি। এক্ষেত্রে শুধু ডিজাইনটাকেই বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকি। এমনটা উচিত নয়। শুধু অ্যাডাপটার কিনে আনলেই হবে না। ইউনিভার্সাল অ্যাডাপটার নাম দেখে কিনলেই লাভ হবে না। সেজন্য কয়েকটি বিষয় খেয়াল রাখা জরুরি।
অ্যাডাপটার তো কিনবেন। কিন্তু কেন কিনবেন? দূরে গেলে লাগতে পারে সেজন্য? অবশ্যই না। আপনার সঙ্গে যে যে গ্যাজেট থাকে সেগুলোর কথা বিবেচনায় রেখে অ্যাডাপটার কিনতে হবে। অথবা দেশের বাহিরে যদি ট্রাভেল করেন তাহলে এটা কেনা এক কথায় অত্যাবশ্যক। অনেক সময় দেখা যায়, অ্যাডাপটার কিনে আনলেন কিন্তু সেই অ্যাডাপটার মোবাইল কিংবা ল্যাপটপের চার্জারের পিন ঢোকানো যাচ্ছেনা। গেলেও পরিশ্রম করতে হচ্ছে। এমনটা আপনার চার্জার পিনের জন্য স্বাস্থ্যকর তো নয়ই, অ্যাডাপটারের জন্যেও ভালো বলা যাবেনা। তাই দোকানে গেলে আপনার গ্যাজেটের বিষয়টি স্পষ্ট করবেন এবং অনলাইনে কিনলে ইউটিউবে মডেলের নাম খোঁজ করে দেখে নেবেন। তবে ভালো ব্র্যান্ডগুলোর বেশিরভাগ অ্যাডাপ্টারেই এই সমস্যাগুলো থাকে না। তারপরও যদি আমাদের সাজেশান চান তাহলে কমেন্টে জানাতে পারেন।
আপনার সঙ্গে থাকা ডিভাইসের বিষয়টি মাথায় রাখলেই প্লাগের ধরনটি নিয়ে ভাবতে হবে। এ বিষয়টি অত কঠিন কিছু নয়। আমাদের দেশে সচরাচর একই ধরনের প্লাগ ব্যবহার করা হয়। ক্ষেত্রবিশেষে কিছুটা আলাদা হতেই পারে। তবে আপনি যদি দেশের বাইরে নিয়মিত যাতায়াত করেন তাহলে ইউনিভার্সাল ট্রাভেল অ্যাডাপ্টারের ধরন মিলিয়ে নেবেন। সচরাচর টাইপ-এ এবং টাইপ-বি এই দুই ধরনের অ্যাডাপটার পাওয়া যায় বাজারে। তবে প্লাগের ধরন কিন্তু একদম টাইপ-আই পর্যন্ত হতে পারে। যাহোক, অতদূর খুব কম মানুষকেই ভাবতে হয়। আপনার যদি দুধরনের অ্যাডাপটারই প্রয়োজন হয় তবে মাল্টি অ্যাডাপটার নিয়ে নিতে পারেন।
ভোল্টেজের বিষয়টি কম গুরুত্ব দিলেও এটিকে এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। কারণ একেক ডিভাইস একেক ভোল্টেজে অপারেট করে। সব ডিভাইসে যে তা কার্যকর হবেনা তা আস্তে আস্তে মানুষ ধরতে পারছে। যেমন আজকাল স্মার্টফোনে ১৮ ওয়াটের চার্জার থাকে, ৬৪ ওয়াট থাকে আবার ১২০ ওয়াটও চলে এসেছে। এখন অ্যাডাপ্টার যদি এই ভোল্টেজ সাপোর্ট না করে তাহলে তো কোনো লাভ নেই। উল্টো আপনার ডিভাইসে চার্জ দেওয়ার সময় বাড়তি চাপ পড়বে।
অনেকে হয়তো এই বিষয়টি জানেনই না। ইউনিভার্সাল অ্যাডাপটার কেনার সময় আপনি কি ভোল্টেজ কনভার্টার খুঁজছেন নাকি ট্রান্সফর্মার খুঁজছেন তা জানতে হবে। এই দুটোতে আসলে ফারাক কি? ফারাক আছে। কনভার্টার অ্যাডাপটারগুলো একটানা ব্যবহারের জন্য তৈরি করা হয়নি। যেসব গ্যাজেট সামান্য সময়ের জন্য ব্যবহার করবেন সেসব গ্যাজেটের জন্য কনভার্টার অ্যাডাপ্টার নিতে হবে। হেয়ার ড্রায়ার, লন্ড্রি মেশিন, ইলেকট্রিক টুথব্রাশ এসব গ্যাজেটে কনভার্টার ব্যবহার করতে হয়। কনভার্টার মূলত ভোল্টেজকে আপনার গ্যাজেটের ভোল্টেজের পরিমাণ আউটপুট দিয়ে থাকে। একটানা ব্যবহারে তাই বিগড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। আর ট্রান্সফর্মার ফোন, ল্যাপটপ বা ট্যাবলেটের চার্জার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এমনকি ফ্রিজেও ট্রান্সফর্মার অ্যাডাপ্টার ব্যবহার করতে হয়। ট্রান্সফর্মারের কাজ কি? ট্রান্সফর্মার আপনার গ্যাজেটে যতটুকু বিদ্যুৎ প্রয়োজন ততটুকুই সাপ্লাই দেয়। তবে ট্রান্সফর্মার অ্যাডাপটার কেনার সময় লক্ষ্য রাখবেন, এই ইউনিভার্সাল অ্যাডাপ্টারের সক্ষমতা আপনার ডিভাইসের সক্ষমতা থেকে ২৫ শতাংশ বেশি যেন হয়।
সুত্র: টেকওয়ালস