মেহেরপুর প্রতিনিধি
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী নিশাত তাসনিম উর্মীকে হত্যার অভিযোগে স্বামী আশিকুজ্জামান প্রিন্স ও শ্বশুর হাসেম শাহকে গ্রেফতার করেছে গাংনী থানা পুলিশ। উর্মীর বাবা গোলাম কিবরিয়া বাদী হয়ে হত্যার অভিযোগ এনে থানায় লিখিত এজাহার দেন। এর পরপরই পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে। গ্রেফতার আশিকুজ্জামান প্রিন্স গাংনী শহরের কাথুলি মোড় এলাকার বিশিষ্ট হার্ডওয়্যার ব্যবসায়ী পদ্মা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী হাসেম শাহ’র ছেলে। স্থানীয়রা জানান, আশিকুজ্জামান প্রিন্স মাদকাসক্ত। কারণে-অকারণে তিনি তার স্ত্রী উর্মীকে মারধর করতেন। গত রাতে তাকে হত্যা করে আত্মহত্যার নাটক সাজানোর চেষ্টা করেছিল প্রিন্স।
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলায় নিশাত তাসনীম উর্মী (২৪) নামে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রীর বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) গভীর রাতে গাংনী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে পুলিশ ওই ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করে। উর্মি গাংনী উপজেলা শহরের পদ্মা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী হাসেম শাহের ছেলে আসিকুজ্জামান প্রিন্সের স্ত্রী ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বাঁশবাড়িয়া গ্রামের গোলাম কিবরিয়ার মেয়ে। উর্মীর বাবা গোলাম কিবরিয়ার অভিযোগ তার মেয়েকে নির্যাতন ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করে সেটি আত্মহত্যা বলে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। এদিকে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে শুক্রবার (৯ সেপ্টেম্বর) ১২টার দিকে সুরতহাল রিপোর্ট শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মেহেরপুর ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। উর্মীর বাবা গোলাম কিবরিয়া জানান, গভীর রাতে বেয়াই হাসেম শাহ্ মোবাইল ফোনে জানান, উর্মী অসুস্থ হওয়ায় তাকে গাংনী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়েছে। পরে তিনি বলেন, উর্মী ঘরের জানালার সঙ্গে ফাঁস দিয়েছে। সংবাদ পেয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এলে ডাক্তার জানান, উর্মী অনেক আগেই মারা গেছেন। উর্মীর শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাকে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। পরে পুলিশে খবর দেওয়া হলে গাংনী থানার এসআই শাহিন মিয়া মরদেহ থানা হেফাজতে নেন। গোলাম কিবরিয়া জানান, মেয়েকে বিয়ের পর থেকে কারণে-অকারণে নির্যাতন করে আসছিল জামায়। গতরাতেও মেয়ে আমার সঙ্গে কথা বলেছে। তিনি বলেন, আমার মেয়েকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে, আমি তার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই। গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, মেয়ের বাবা বাদী হয়ে হত্যার অভিযোগ এনে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। উর্মির সুরোতহাল রিপোর্ট করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জানা যায়, মেধাবী নিশাত তাসনিম উর্মী ও তার স্বামী প্রিন্স ভালোবেসে প্রায় চার বছর আগে বিয়ে করেন। তাদের ঘরে একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।
