ফিলিস্তিনের গাজার আল-আহলি আল-আরাবি হাসপাতালে নৃশংসতম বোমা হামলায় প্রায় ৫০০ বেসামরিক নাগরিক হত্যার পরও থামছে না ইসরায়েলের নির্বিচার বিমান হামলা। গত বুধবার রাতভর তারা গাজার আরো নতুন নতুন এলাকায় নির্বিচার বিমান ও বোমা হামলা চালিয়েছে। তাদের হামলা থেকে রেহাই পাচ্ছে না শিশুরাও। ইউনিসেফ বলছে, গাজায় ৭ অক্টোবর থেকে চালানো ইসরায়েলের হামলায় ৭০০-এর বেশি শিশু নিহত হয়েছে। সমগ্র পৃথিবী এবারের বর্বরতা-নিষ্ঠুরতাকে সমর্থন ও পৃষ্ঠপোষকতা করছে, যা সম্ভবত কখনো এমনভাবে দৃশ্যমান হয়নি। মুক্ত বিশ্ব কোথায়? নির্যাতিত মানুষের ওপর গণহত্যা চলছে। দেখার কেউ নেই। লাগাতার ইসরায়েলি হামলার মুখে আল-আহলি আল-আরাবি হাসপাতালকে নিরাপদ ভেবেছিলেন গাজাবাসী। নানা জায়গায় হামলা হলেও অন্তত হাসপাতালে হামলা হবে না- এমনটাই ভেবেছিলেন তারা। তাই অনেকে সেখানে আশ্রয় নিয়েছিলেন। ছিলেন আহত ও অসুস্থ ব্যক্তিরা। আরো ছিলেন চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীরা। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। গাজায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। গত ১১ দিনে ইসরায়েল কয়েক হাজার টন বোমা বর্ষণ করেছে, বাড়ি-ঘর গুঁড়িয়ে দিয়েছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, অ্যাম্বুলেন্স কিছুই রক্ষা পায়নি। তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ জারি করেছে। সর্বাত্মক অবরোধে গাজায় পানি নেই, জ্বালানি নেই, ওষুধ নেই। শিশুখাদ্য তো বটেই, সামগ্রিকভাবেই খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে গাজায়। লোকজন ক্ষুধা ও তৃষ্ণা নিয়েই প্রাণ বাঁচাতে এলাকা ছাড়ছেন। পথে তাদের ওপর হামলা হচ্ছে। ইসরায়েলের নিষ্ঠুরতা কেউ দেখতে চাচ্ছে না। যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় সমর্থক, পৃষ্ঠপোষক। একই নীতি ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়ার। আরব বিশ্বের নীতি-নির্ধারণে আমেরিকাই শেষ কথা। ইরান ছাড়া অন্য প্রায় সবাই ইসরায়েলের সঙ্গে বন্ধুত্ব স্থাপনে ব্যস্ত। এ সংকট ১০০ বছরের পুরনো। সংকট নিরসনে কয়েকবার নেয়া হয়েছে শান্তি উদ্যোগ। কিন্তু পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। বরং দ্ব›দ্ব বাড়ছে। মীমাংসা হচ্ছে না। নতুন নতুন সংকট তৈরি হচ্ছে। সংঘাত নেপথ্যের একদিকে ইসরায়েলের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার, অন্যদিকে ফিলিস্তিনের মানুষের নিজ বাসভূমে নিরাপদে বসবাসের স্বপ্ন। ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনিরা বেশকিছু ইস্যুতে মোটেই একমত হতে পারছে না। এর মধ্যে আছে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের ব্যাপারে কী হবে; পশ্চিম তীরে যেসব ইহুদি বসতি স্থাপন করা হয়েছে সেগুলো থাকবে, নাকি সরিয়ে নেয়া হবে; জেরুজালেম নগরী কি উভয়ের মধ্যে ভাগাভাগি হবে; আর সবচেয়ে জটিল ইস্যু হচ্ছে- ইসরায়েলের পাশাপাশি একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের প্রশ্ন। গত ২৫ বছর ধরেই শান্তি আলোচনা চলছে থেমে থেমে। ফিলিস্তিনের মুক্তি কিংবা স্বাধীনতার ব্যাপারে ২২ সদস্যবিশিষ্ট আরব লিগও তেমন কোনো অর্থবহ ভূমিকা পালন করতে ব্যর্থ হচ্ছে। প্রশ্ন হলো, এই সংঘাত শেষ হবে কীভাবে? কল্পনাতীত অস্থিরতা চলবে আর কতদিন? আর কত মানুষ প্রাণ হারাবে বুলেট-বোমার আঘাতে? এমন সব জিজ্ঞাসা মনের মধ্যে উঁকি দিচ্ছে স্বাভাবিকভাবেই।

সাম্প্রতিক সংবাদ
বিশেষ প্রতিবেদন
গৌরবদীপ্ত বিজয়ের মাস
জিনিয়া রাজিন
আজ ডিসেম্বরের ৩ তারিখ। একাত্তরের এই দিনে একদিকে যেমন বাংলার বুকে এগিয়ে চলছিল...
সম্পাদকীয়
ভোটের আগে ও পরে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন
জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে এলেই ভয়-আতঙ্কে ভুগতে থাকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। এ ভয়ভীতি, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা মোটেই...
রাজনীতি
শরিকদের বেকায়দায় ফেলে এগোচ্ছে আওয়ামী লীগ!
প্রতিদিনের ডেস্ক
বিগত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসন ভাগাভাগি করে ভোটে অংশ নিয়েছিল আওয়ামী লীগের...
আইন আদালত
ফার্মগেটে ককটেল বিস্ফোরণ: দুই মোটরসাইকেল আরোহী আহত
প্রতিদিনের ডেস্ক
রাজধানীর ফার্মগেটে দুটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় দুই জন আহত হয়েছেন।...
এধরণের সংবাদ আরো পড়ুন
সম্পাদকীয়
ভোটের আগে ও পরে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন
জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে এলেই ভয়-আতঙ্কে ভুগতে থাকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। এ ভয়ভীতি, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা মোটেই...
সম্পাদকীয়
বন্ধ হোক শিশুর প্রতি সহিংসতা
প্রতিনিয়ত দেশে শিশু নির্যাতনের খবর গণমাধ্যমে আসছে। গত ৯ বছরেরও বেশি সময় আগে শিশু...
সম্পাদকীয়
এবার চালের বাজারে অস্থিরতা
বাজারে অধিকাংশ নিত্যপণ্যের দাম মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। এমতাবস্থায় চালের বাজারেও অস্থিরতা দেখা...