বার্তাকক্ষ
একের পর এক বিস্ফোরণের ঘটনায় শঙ্কার মধ্যে রয়েছে মানুষ। সম্প্রতি পাইপলাইনের গ্যাস, এলপিজি এবং সিএনজি থেকে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে চলেছে। তবে বিস্ফোরণের বেশ কিছু ঘটনার নিশ্চিত কারণ জানাতে পারছে না কেউই। এসব ঘটনায় মৃত্যু ঠেকাতে ব্যবহারকারীর সচেতনতার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারি বাড়ানোর কোনও বিকল্প নেই বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। গত একযুগে দেশে বড় অগ্নিকাণ্ড এবং বিস্ফোরণের ১৩টি ঘটনায় অন্তত ৫৬৬ জন প্রাণ হারিয়েছে। আহত হয়েছে কয়েকশ’ মানুষ। কিন্তু সাধারণ মানুষের সচেতনতা আর যথাযথ কর্তৃপক্ষ ঠিকঠাক নজরদারি করলেই পরিস্থিতি সামলানো কঠিন হতো না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। গত ৭ মার্চ রাজধানীর পুরান ঢাকার সিদ্দিকবাজার বিস্ফোরণের পর গত ১২ মার্চ নারায়ণগঞ্জে আরও একটি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। নারায়ণগঞ্জের যে বাসাটিতে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে সেখানে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি) কিংবা গ্যাস সিলিন্ডার ছিল না। তবে বাসাটিতে পাইপলাইনের গ্যাস ব্যবহার করা হতো। একই দিন দিনগত রাত ২টার দিকে ময়মনসিংহের ত্রিশালে একটি মাইক্রোবাস উল্টে যায়। এতে মাইক্রোবাসের গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনায় আরও পাঁচ জন নিহত হয়েছেন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশে যত সিএনজিচালিত পরিবহন রয়েছে, সেগুলোর সিলিন্ডার প্রতি পাঁচ বছরে একবার টেস্ট করা প্রয়োজন। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে সেগুলো আরও তিন বছর চলতে পারে। এরপর সেগুলো বদলে ফেলার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীরা সেটি না মানায় ঝুঁকি সৃষ্টি হচ্ছে। ঝুঁকিপূর্ণ এই পরিবহনগুলোর সিএনজি সিলিন্ডার কখন বিস্ফোরিত হবে তা কেউ জানে না। গ্যাস বিপণন বিধিমালা অনুযায়ী তিতাসের পাইপলাইনগুলো কাটার পর স্থায়ীভাবে অপসারণের বিধান রয়েছে। কিন্তু মগবাজার এবং সিদ্দিকবাজারে তিতাসের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হলেও পাইপলাইনটি স্থায়ীভাবে বন্ধ করা হয়নি বলে পুলিশ জানিয়েছে। এতে করে পাইপলাইনটিতে লিকেজ সৃষ্টি হয়ে সেখান দিয়ে গ্যাস বের হয়ে এই দুর্ঘটনা ঘটারও শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। তবে তিতাসের ঢাকা মেট্রোর ডিজিএম মো. সিদ্দিকুর রহমান ৮ মার্চ ঘটনা ঘটার পর স্থানটি পরিদর্শন করে জানান, তিতাসের গ্যাস থেকে এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেনি। গত ১২ মার্চ তিতাসের ১৮ সদস্যর আরেকটি দল স্থানটি পরিদর্শন শেষেও একই ধরনের কথা বলেন। এদিকে বিস্ফোরণের পর গ্যাস থেকে বিস্ফোরণ বলা হলেও শেষ পর্যন্ত দায় এড়িয়ে যাচ্ছে তিতাস। তারা বলছে, এটি পাইপলাইনের গ্যাস নয়। অথচ বেশ কয়েক জায়গায় পাইপলাইন পাওয়াও গেছে। তিনি বলেন, একে অপরকে দোষ না দিয়ে সঠিক কারণ খুঁজে বের করা এখন জরুরি। পাশাপাশি নিজেদের সচেতনতা এবং সংস্থাগুলোর নজরদারি বাড়াতে হবে বলে তিনি মনে করেন।