গত এক মাসে বিধ্বস্ত নগরীতে পরিণত হয়েছে পুরো গাজা উপত্যকা। সারা বিশ্বের সভ্যসমাজ অবাক বিস্ময়ে এমন নিষ্ঠুর বর্বরতা শুধু পর্যবেক্ষণ করছে না; তীব্র ঘৃণা ও নিন্দার সঙ্গে ইসরায়েলি আগ্রাসন প্রত্যাখ্যান করছে। এ নারকীয় তাণ্ডবের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকারও সোচ্চার। সোচ্চার দেশের জনগণ। গত ৩০ অক্টোবর জাতীয় সংসদে ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর বর্বর হামলার বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব উত্থাপিত হলে তা সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ফিলিস্তিনের আহত-অসহায় মানুষের জন্য চিকিৎসাসেবা ও জরুরি ওষুধসামগ্রী পাঠানো হয়েছে। আমরা এটাকে সাধুবাদ জানাই। পৃথিবীর ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চলগুলোর মধ্যে একটি গাজা। সেখানে প্রতিদিনই হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলের সেনারা। অব্যাহত বোমা হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১০ হাজার ২২ জনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে ৪ হাজার ১০৪ শিশু, নারী ২ হাজার ৬৪১ জন। আর উপত্যকাটিতে হামলায় আহত হয়েছেন ২৫ হাজার ৪০৮ জন ফিলিস্তিনি। গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা আন্দোলনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। ওই হামলায় ১ হাজার ৪০০ জনের বেশি মানুষ মারা যান। সেদিন থেকেই গাজায় নির্বিচার বোমা বর্ষণ করছে ইসরায়েলি বাহিনী। জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) জানিয়েছে, গাজা উপত্যকায় ২৩ লাখ মানুষের বসবাস। ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি হামলা শুরুর পর থেকে সেখানকার প্রায় ১৫ লাখ মানুষ অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। এ সংখ্যা গাজার মোট জনসংখ্যার প্রায় ৬৫ শতাংশ। নির্বিচার হামলার জেরে অবরুদ্ধ গাজায় দেখা দিয়েছে চরম মানবিক সংকট। ইসরায়েলি বোমার আঘাত থেকে বিদ্যালয়, হাসপাতাল, অ্যাম্বুলেন্স, শরণার্থীশিবির কিছুই বাদ যাচ্ছে না। লোকজন ক্ষুধা ও তৃষ্ণা নিয়েই প্রাণ বাঁচাতে এলাকা ছাড়ছেন। পথে তাদের ওপর হামলা হচ্ছে। ইসরায়েলের নিষ্ঠুরতা কেউ দেখতে চাচ্ছে না। ফিলিস্তিনিরা যুগের পর যুগ চরম অবিচারের সম্মুখীন। দেশ থেকে জোরপূর্বক বিতাড়নের মাধ্যমে ইহুদিবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েল যে দখলদারত্ব শুরু করেছিল, তা রোধে আজ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কার্যকর কোনো পদক্ষেপ পরিলক্ষিত নয়। সমগ্র পৃথিবী এবারের বর্বরতা-নিষ্ঠুরতাকে সমর্থন ও পৃষ্ঠপোষকতা করছে, যা সম্ভবত কখনো এমনভাবে দৃশ্যমান হয়নি। গাজাবাসী বর্তমানে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন রয়েছে। এমন মানবেতর পরিস্থিতির মুখেও স্বয়ং মুসলিম বিশ্বের পক্ষ থেকেও প্রয়োজনীয় সমর্থন ও সাহায্য পাচ্ছে না ফিলিস্তিন। প্রভাবশালী আরব দেশগুলোর কেউ কেউ ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করেছে আবার কেউ কেউ স্বাভাবিক করার প্রক্রিয়ায় আছে। ‘নিজেদের ক্ষমতাকে তারা চিরস্থায়ী করে রাখতে চায়। সংগত কারণেই তারা হয়তো মনে করে পপুলার সেন্টিমেন্ট যাই হোক ইসরায়েলকে ঘাঁটানো তাদের ঠিক হবে না। অন্যদিকে আমেরিকা, ন্যাটো ও পশ্চিমা বিশ্বের সম্মিলিত সাহায্য নিয়ে মাঠে ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী। এদিকে এই সহিংসতা এখন ফিলিস্তিন, ইসরায়েল থেকে ইরান ও লেবাননে ছড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। কারণ ইরান হলো হামাস ও হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর পৃষ্ঠপোষক। ইসরায়েলকে অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহকারী মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটের কারণেই আজ বিশ্ব এক ভয়ংকর চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। উত্তরণ কোথায় প্রশ্ন থেকেই যায়।

সাম্প্রতিক সংবাদ
লাইফ স্টাইল
কম বয়সীদের মধ্যে হৃদরোগ বাড়ার কারণ জানালেন বিশেষজ্ঞরা
প্রতিদিনের ডেস্ক
বর্তমান সময়ে হৃদরোগে আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আক্রান্তদের মধ্যে কম...
লাইফ স্টাইল
কোলেস্টেরল বেড়েছে? এড়িয়ে চলবেন যেসব খাবার
প্রতিদিনের ডেস্ক
জীবনযাপনে ব্যাপক অনিয়মের কারণেই মানুষের মধ্যে বাড়ছে হৃদরোগের ঝুঁকি। বিশেষ করে উচ্চ রক্তচাপ,...
সম্পাদকীয়
নির্বাচন নির্বিঘ্নে করতে অস্ত্র উদ্ধার জরুরি
আগামী শনিবার থেকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নির্বিঘ্ন করতে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও চিহ্নিত...
জাতীয়
গৌরবদীপ্ত বিজয়ের মাস
তাহমিনা আক্তার
২ লাখ মা-বোনের সম্ভম আর ৩০ লাখ শহীদের রক্ত রাঙা আমাদের প্রিয় স্বাধীনতা।...
এধরণের সংবাদ আরো পড়ুন
সম্পাদকীয়
নির্বাচন নির্বিঘ্নে করতে অস্ত্র উদ্ধার জরুরি
আগামী শনিবার থেকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নির্বিঘ্ন করতে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও চিহ্নিত...
সম্পাদকীয়
শিশুশ্রম বন্ধে সম্মিলিত প্রয়াস জরুরি
শিশুশ্রম রোধে সরকারি-বেসরকারি কোনো উদ্যোগ যেন কাজে আসছে না। দিন দিন যেন শিশু শ্রমিকের...
সম্পাদকীয়
কী হবে এই সংঘাতের ভবিষ্যৎ
গাজায় আবারো জোরেশোরে হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। যুদ্ধবিরতির পর তিন দিন ধরে গাজায় হামলা...