প্রতিদিনের ডেস্ক॥বর্তমান সরকারের পদত্যাগ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে অক্টোবরের শেষ সপ্তাহ থেকে বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর হরতাল, অবরোধ কর্মসূচি চলছে। প্রায় ১০ মাস আগে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেল চালু হয়। আর উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত চলাচলের জন্য মেট্রোরেল খুলে দেওয়া হয় ৫ নভেম্বর।টানা অবরোধ কর্মসূচির কারণে গণপরিবহন পাওয়া যেখানে কঠিন সেখানে মেট্রোরেল যেন আশীর্বাদ হিসেবে এসেছে যাত্রীদের কাছে। উত্তরা থেকে মতিঝিল রুট চালু হওয়ার পর এর সুবিধা উপলব্ধি করছেন রাজধানীবাসী। নিরাপদে ও সময়মতো কর্মস্থলে বা গন্তব্যে পৌঁছাতে পেরে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন যাত্রীরা, যাদের বেশিরভাগই অফিসগামী কিংবা শিক্ষার্থী।
রোববার (১৯ নভেম্বর) মেট্রোরেলের পল্লবী ও সচিবালয় স্টেশনের যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় তদের অভিজ্ঞতা।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে বিএনপি ও সমমনাদের ডাকা ৪৮ ঘণ্টা হরতালে রোববার সড়কে গাড়ির সংখ্যা ছিল কিছুটা কম। সকাল থেকেই মিরপুরসহ বিভিন্ন স্থানে যাত্রীবাহী বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। দূরপাল্লার যানবাহন চলাচল প্রায় বন্ধ বললেই চলে। রাজপথে বাস কম থাকায় ভোগান্তিতে পড়ছেন কর্মজীবীরা। তবে তাদের অনেকের জন্য ভোগান্তি লাঘব করে স্বস্তি নিয়ে এসেছে মেট্রোরেল।
রোববার সকাল সোয়া ৯টায় পল্লবী স্টেশনে যাত্রীদের ভিড় দেখা যায়। এ সময় উত্তরা থেকে যাত্রীবোঝাই করে আসে মেট্রোরেল। প্রত্যেকটা বগি ছিল যাত্রীতে পরিপূর্ণ। কাজীপাড়া স্টেশন থেকে যাত্রীদের গাদাগাদি করে যেতে দেখা যায়। বেসরকারি ব্যাংকের চাকরিজীবী শাহজাহান আলীর অফিস মতিঝিলে। পল্লবী স্টেশনে কথা হয় তার সঙ্গে।
তিনি বলেন, মেট্রোরেল মতিঝিল পর্যন্ত চালু হওয়ার পর থেকে আমি অফিসে যাই মেট্রোতে চড়ে। সকালে দুই ঘণ্টা সময় বেঁচে যায়। রাস্তায় অবরোধের কারণে গাড়ি কম চলছে। আমার কোনো সমস্যা হচ্ছে না, সময়মতোই যেতে পারছি।
আরেক চাকরিজীবী সিরাজুল ইসলাম বলেন, যখন সবগুলো স্টেশন চালু হবে ও রাত অবধি মেট্রো চলবে তখন আমরা আরও বেশি সুবিধা পাবো।
তিনি বলেন, অবরোধের কারণে বাস চলছে কম। এখন হরতাল-অবরোধে যে অবস্থা চলছে বাসে উঠতেই ভয় লাগে। কখন না আবার বাসে আগুন দিয়ে দেয়। মেট্রোতে সেই ভয় নাই। মেট্রোতে উঠে অনেক সময় সরাসরি গন্তব্যে পৌঁছাতে না পারলেও, কাছাকাছি যেতে পারছি। যেমন আমার অফিসের কাজে সকালে বিভিন্ন সময় নিউমার্কেট যাওয়া লাগছে, আমি প্রেস ক্লাব নেমে রিকশা দিয়ে যাচ্ছি।
সচিবালয় স্টেশনে চাকরিজীবী ফারহানা মেট্রোর এমআরটি কার্ডের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। তিনি বলেন, মেট্রোতে আগুন দেওয়ার বা ভাঙচুর করার কোনো ভয় নেই। এখানে প্রত্যেক স্টেশনেই পুলিশ আছে। কড়া নিরাপত্তা আছে। অনেক সময় কার্ড না থাকায় দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে এমআরটি কার্ড সংগ্রহ করতে হয়। তাই আজকে নিয়ে নিলাম।
মেট্রোতে কী করা যাবে না, মেট্রো কোন স্টেশনে থামছে, নারীদের জন্য আলাদা বগির ব্যবস্থাসহ একাধিক বার্তা একটু পর পর বাজানো হয় প্রত্যেক বগিতে থাকা সাউন্ড সিস্টেমে। এতে যোগ হয়েছে নতুন বার্তা। তা হলো পকেটমার থেকে সাবধান থাকুন। এছাড়া মেট্রোরেলের চালক কিছুক্ষণ পর পর মাইকে বলছেন, মেট্রোতে ওঠা ও নামার সময় স্টেশনের দরজায় দাঁড়াবেন না বা দরজার ছবি তোলার চেষ্টা করবেন না।
