দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা উন্নত হলেও চিকিৎসা ব্যয় বৃদ্ধি উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইতোমধ্যে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ও নানা কারণে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে। এ পরিস্থিতির মধ্যে চিকিৎসা ব্যয়ও ঊর্ধ্বমুখী। এতে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে চিকিৎসায় রোগীর নিজস্ব ব্যয় বেড়েছে। সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে চিকিৎসায় রোগীর নিজস্ব ব্যয় বেশি দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়। এই পরিসংখ্যান দুঃখজনক। চিকিৎসায় রোগীর নিজস্ব ব্যয় কমাতে ২০১২ সালে উদ্যোগ নেয় সরকার। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ২০৩২ সালের মধ্যে রোগীর নিজস্ব ব্যয় ৩২ শতাংশ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে। তবে দীর্ঘ এক যুগেও এ ব্যবস্থার উন্নতি হয়নি। চিকিৎসায় ব্যক্তির ব্যয় বেড়েই চলেছে। এতে সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা অর্জন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। চিকিৎসা মানুষের মৌলিক অধিকার। কাজেই এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া অত্যন্ত জরুরি। স¤প্রতি স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের প্রকাশিত এক গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮, ২০১৯ ও ২০২০ সালে চিকিৎসা ব্যয়ে সরকারের অংশ ছিল যথাক্রমে মোট ব্যয়ের ২৮, ২৬ ও ২৩ শতাংশ। আর ওই বছরগুলোতে ব্যক্তির নিজস্ব ব্যয় ছিল ৬৪, ৬৬ ও ৬৯ শতাংশ। এক্ষেত্রে দেখা যায় চিকিৎসা ব্যয়ে সরকারের অংশ ক্রমান্বয়ে কমছে আর ব্যক্তির নিজস্ব ব্যয় বাড়ছে। এ ব্যয় করতে গিয়ে বছরে ৮৬ লাখের বেশি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যাচ্ছে। চিকিৎসার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যয় হচ্ছে ওষুধ কিনতে। এতে ব্যয় ৬৪ দশমিক ৬ শতাংশ। এছাড়া রোগ শনাক্তের পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ১১ দশমিক ৭ শতাংশ, বিকল্প চিকিৎসাসেবায় ১৩ দশমিক ২ শতাংশ এবং হাসপাতালে খরচ ১০ দশমিক ১ শতাংশ। আগের বছরগুলোর তুলনায় চলতি বছর হাসপাতাল ও বিকল্প চিকিৎসাসেবা নেয়ায় ব্যয় বেড়েছে। এসব ব্যয়ের মধ্যে সরকার ও দাতা সংস্থা থেকে আসে ৩১ শতাংশ। শুধু সরকার বহন করে ২৩ দশমিক ১ শতাংশ। আমরা মনে করি, চিকিৎসা খাতে মানুষের ব্যয় না কমলে দেশে দক্ষ জনশক্তি তৈরি হুমকির মুখে পড়বে, যা দেশের টেকসই উন্নয়নেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। মুনাফালোভী এক শ্রেণির হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার আর কিছু অনৈতিক মানসিকতার চিকিৎসক ও ওষুধ কোম্পানির কারণে চিকিৎসা ব্যয় বাড়ছে। স্বাস্থ্য খাতে মানুষ প্রায় ৬৫ শতাংশ খরচ করছে ওষুধের পেছনে। তবে স্বাস্থ্যসেবার মান বাড়ানো, দুর্নীতি কমানো ও নজরদারি বাড়ানো দরকার। শুধু ওষুধ নয়; রোগ শনাক্তের খরচের পাশাপাশি অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষাও বন্ধ করতে হবে। বিভিন্ন জায়গায় সরকারি হাসপাতালের যন্ত্রপাতিসহ অনেক কিছু নষ্ট হয়ে যায়। ফলে রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে হয় বেসরকারি হাসপাতালে গিয়ে। এতে চিকিৎসা ব্যয়ের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। এ জন্য তদারকি ও জবাবদিহি বাড়াতে হবে। পাশাপাশি এসব যন্ত্রপাতির সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ জরুরি। অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি স্বাস্থ্য খাতেও সরকার ব্যয় বাড়িয়েছে। আমরা এর বাস্তবায়ন দেখতে চাই। মোটকথা, চিকিৎসা খাতে জনগণের খরচ কমাতে সরকারের কার্যকর পদক্ষেপ ও বরাদ্দকৃত অর্থের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।

সাম্প্রতিক সংবাদ
আইটি
নতুন আইফোনে অপরিবর্তিত থাকবে ক্যামেরা ও ডিসপ্লে
বার্তাকক্ষ
আইফোন ১৫ প্রো ম্যাক্সের উন্মোচনকে ঘিরে ব্যাপক আগ্রহ জেগেছে অ্যাপলপ্রেমীদের মধ্যে। সম্প্রতি স্মার্টফোনবিষয়ক তথ্যদাতা...
আইটি
সেলফ রিপেয়ার প্রোগ্রাম চালু করছে স্যামসাং
বার্তাকক্ষ
সেলফ রিপেয়ারিং প্রোগ্রামের বিষয়ে বর্তমানে অনেকেই অবগত। বিশ্বের সব দেশে সেভাবে এটি চালু না...
আইটি
সাড়ে ৪৩ কোটি ডলার বিনিয়োগ চায়না টেলিকমের
বার্তাকক্ষ
কোয়ান্টাম ইনফরমেশন টেকনোলজি গ্রুপ প্রতিষ্ঠায় ৩০০ কোটি ইউয়ান বা ৪৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার...
আইটি
এমএসআইয়ের নতুন ল্যাপটপ স্টেলথ ১৬ মার্সিডিজ-এএমজি
বার্তাকক্ষ
জার্মানির অন্যতম গাড়ি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান মার্সিডিজের সঙ্গে চুক্তি করেছে তাইওয়ানের প্রযুক্তি কোম্পানি মাইক্রো স্টার...
এধরণের সংবাদ আরো পড়ুন
সম্পাদকীয়
ই-সিগারেট : জনস্বার্থে আইনের কঠোর প্রয়োগ জরুরি
বিশ্বজুড়ে প্রতিরোধযোগ্য মৃত্যুর প্রধান ৮ কারণের মধ্যে ৬টির সঙ্গেই তামাক জড়িত। কোনোভাবেই ক্ষতিকর এই...
সম্পাদকীয়
কমাতে হবে খেলাপি ঋণ
দেশের ব্যাংকিং খাত খেলাপি ঋণের বৃত্ত থেকে বের হতে পারছে না। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো খেলাপি...
সম্পাদকীয়
পোশাক খাতের শঙ্কা কাটাতে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে
করোনা মহামারির পর তৈরি পোশাক খাত অনেকটা ঘুরে দাঁড়িয়েছিল। করোনার প্রাদুর্ভাবে স্থগিত ও বাতিল...