আনিছুর রহমান, বেনাপোল :
যশোর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বেনাপোল পৌরসভার সাবেক মেয়র আশরাফুল আলম লিটন বলেছেন, আমারা বাঙালি জাতি আমাদের একটি বিশাল ঐতিহ্যবাহী ইতিহাস রয়েছে। বাংলাদেশ নামক ভূখ-টি কারও দয়ায় স্বাধীন হয়নি। বাঙালি জাতির নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসাম্প্রদায়িক আহ্বানে সাড়ে ৭ কোটি বাঙালি সেদিন ঐক্যবদ্ধ হযেছিল। এই ঐক্যবদ্ধ চেতনার মধ্যে হিন্দু মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সবার এক ও অভিন্ন চাওয়া ছিল। তাদের সকলের প্রবল প্রতিরোধের মাধ্যেমে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কাছ থেকে মুক্ত করে স্বাধীন হলো বাংলাদেশ। মাত্র ৯ মাসে এই দেশ এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্যে স্বাধীন হলো। কিন্ত আমরা সেই স্বাধীনতাকে অর্থবহ করতে পারলাম না। তার কারণ সেই স্বাধীন রাষ্ট্রের মহান নায়ক শেখ মুজিবুর রহমানকে মাত্র ৩ বছর ৬ মাসের মধ্যে হত্যা করা হলো। যে মানুষ ১৪ বছর এই রাষ্ট্রের মানুষের জন্য জেল খাটল। আর সেই মানুষটিকে তার স্বাধীন রাষ্ট্রে তাকে হত্যা করা হলো। শার্শার কায়বা ইউনিয়নের নেতা কর্মীদের সাথে মত বিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে আশরাফুল আলম লিটন এসব কথা বলেন।
মঙ্গলবার বিকেল ৫ টার দিকে শার্শার কায়বা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ আয়োজিত রুদ্রপুর বাজারে মত বিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগ নেতা তানজিল আলী। সভায় প্রধান অতিথি আশরাফুল আলম লিটন বলেন, জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমান হাজার বছরের পরাধীনতার শৃঙ্খলমুক্ত করে এই দেশকে স্বাধীন করেছিলেন। সেই স্বাধীন রাষ্ট্রের মহান স্থপতিকে দেশি-বিদেশি আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের মধ্যেমে হত্যা করা হলো। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সাথে যুদ্ধে সেদিন ২ লাখ মা বোনের সম্ভ্রমহানি আর ৩০ লাখ বাঙালি শহিদ হয়েছিল একটি স্বাধীন সর্বোভৌম রাষ্ট্রের জন্য। যে বাংলাদেশে বাঙালিরা স্বাধী ভাবে মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকতে পারে, বাঙালির ছেলেমেয়েরা স্বাধীনভাবে লেখাপড়া করতে পারে। বাঙালির সন্তানরা চাকরি করতে পারবে, ব্যবসা করতে পারবে। কিন্তু যারা যুদ্ধ করেছে যারা দেশকে মুক্ত করেছে তাদের নির্যাতন নিপীড়ন করে ক্ষমতা দখল করে রেখেছে স্বৈরাচার জিয়া এরশাদ। এই ভাবে বঙ্গবন্ধুবিহীন ২০টি বছর দেশ পরিচালিত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধর স্বপ্নকে ধ্বংস করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন জাতির জনকের কন্যা শেখ হাসিনা ২১ বছর লড়াই সংগ্রাম করে ক্ষমতায় এসেছেন ১৯৯৬ সালে। তিনি ক্ষমতায় এসে মুক্তিযোদ্ধদের সম্মানিত করেছেন। বিধবা মা, বয়স্কভাতা, পঙ্গুভাতা চালু করেছেন। পাড়ায় পাড়ায় মহল্লায় কৃষকের সার নিশ্চিত করেছেন। বিদ্যুতের ব্যবস্থা করেছেন। আজ আমাদের সকল স্বপ্ন তিনি পূরণ করে উন্নত সমৃদ্ধ রাষ্ট্র গড়ে তুলেছেন। আজ ওদশের প্রতি সেক্টরে উন্নত সরঞ্জাম আধুনিক ভবন তৈরি হয়েছে। সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে উন্নয়ন করেছেন।
জননেত্রী শেখ হাসিনা ১৯৭৫ এর ৬ বছর পর দেশে এসেছেন। তিনি জানতেন একদিকে তাকে হত্যা করা হবে, নয়ত জেলখানায় রাখা হবে। তারপরও তিনি থেমে নেই। তিনি এদেশে এসে লড়াই সংগ্রাম করে হাজার হাজার মেঠোপথ হেঁটে এদেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে ক্ষমতায় আসেন ১৯৯৬ সালে। তিনি বার বার মৃত্যর মুখোমুখি হয়েও পিছিয়ে যান নাই। আজ আবারও সেই জামায়াত-বিএনপি চক্র তাদের আস্ফালন করার অপচেষ্টা করছে। এই আগুন সন্ত্রাসীরা আবারও দেশকে অস্থিতিশীল পরিবেশে নেওয়ার জন্য চক্রান্ত করছে। এরা লুন্ঠন করে বাংলাদেশকে ৫ বার দুনর্িিততে চ্যাম্পিয়ন করেছে। এরা উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষ যে বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে এখন চলছে সেই মাথা নিচু করার জন্য তারা আবারও সন্ত্রাসী কর্মকা- ঘটাতে ষড়যন্ত্র করছে। এসব ষড়যন্ত্রর বিরুদ্ধে সকলকে সজাগ থেকে কাজ করতে হবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন যশোর জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য আহসান উল্লাহ মাস্টার, শার্শা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক বকুল, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মালেক, প্রচার সম্পাদক ইলিয়াছ আযম, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক শেখ কোরবান আলী, আওয়ামী লীগ নেতা আসাদুজ্জামান হাই, বেনাপোল পৌর সাবেক প্যানেল মেয়র সাহাবুদ্দিন মন্টু, বেনাপোল পৌর যুবলীগের আহ্বায়ক সুকুমার দেবনাথ, আওয়ামী লীগ নেতা আয়ুব হোসেন স্বাধীন, বেনাপোল পৌর ৯ নং ওয়ার্ড এর সাধারণ সম্পাদক আশাদুজ্জামান আশা প্রমুখ।