বার্তাকক্ষ
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৮৮৭ কোটি ৯০ লাখ ৪৮ হাজার টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে।শনিবার (২৪ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমানের সভাপতিত্বে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম জুম অ্যাপে অনুষ্ঠিত ২৫তম বার্ষিক সিনেট অধিবেশনে এ বাজেট ঘোষণা করেন ট্রেজারার অধ্যাপক আবদুস সালাম হাওলাদার।
প্রস্তাবিত বাজেটের মধ্যে রাজস্ব ৫০৯ কোটি ৬ লাখ ১ হাজার টাকা এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির জন্য ৩৭৮ কোটি ৮৪ লাখ ৪৭ হাজার টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে, যা দীর্ঘ আলোচনা শেষে সিনেটে অনুমোদিত হয়েছে। এছাড়া সিনেট অধিবেশনে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের ৪৭৪ কোটি ৪৫ লাখ ৭৮ হাজার টাকার সংশোধিত বাজেট অনুমোদিত হয়।
সিনেট চেয়ারম্যানের ভাষণে ড. মো. মশিউর রহমান বলেন, ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের ৩৫ লাখ শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবনের উৎকর্ষতা বাড়াতে আমরা ভূমিকা রাখতে সচেষ্ট। এটি আমাদের অঙ্গীকার। এ প্রিয় দেশমাতৃকার ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করা আমাদের শ্রেষ্ঠতম দায়িত্ব। আমাদের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আর নির্যাতিত মা-বোনদের আত্মত্যাগের সঙ্গে রয়েছে গভীর রক্ত ও আত্মিক ঋণ। এ কারণেই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অসাম্প্রদায়িক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, মুক্তবুদ্ধিচর্চার এক অনন্য বাংলাদেশ সৃষ্টিতে বদ্ধপরিকর। সে লক্ষ্যেই আমাদের নিরন্তর পথচলা। বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে আগামীর এ পথ চলা হয়ে উঠুক আরও মুক্তির, আরও সুন্দর। আসুন বিশ্বকে নেতৃত্ব দিতে বাংলাদেশকে অগ্রভাগে নিয়ে যাই স্বমহিমায়।’
দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির বিভিন্ন দিত তুলে ধরে উপাচার্য বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা আজ শুধু বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীই নন, তিনি গোটা জাতির অভিভাবক। তিনি একই সঙ্গে আজ বিশ্ববরেণ্য রাজনৈতিক নেতা। তার সততা, নিষ্ঠা, প্রজ্ঞা, দূরদর্শিতা, দক্ষতা আর রাষ্ট্রনায়কোচিত ভূমিকা আজ বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত। সাহসিকতার সঙ্গে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা ক্যারিশমেটিক নেতাদের বিরল এক দক্ষতা। বঙ্গবন্ধুকন্যা সেই গুণে গুণান্বিত। সে কারণেই তিনি বিশ্বব্যাংকের সিদ্ধান্তের বাইরে দাঁড়িয়ে আত্মমর্যাদার পদ্মা সেতু নির্মাণের সফল রাষ্ট্রনায়ক।
কূটনীতিতে বিশেষ রাষ্ট্রগুলোতে বিশেষ সুবিধা বা মর্যাদার বদলে তিনি সমতার কূটনীতি প্রতিষ্ঠা করেছেন। এর মধ্য দিয়ে বিশ্বের শক্তিধর রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে অন্যান্য সব রাষ্ট্র্রের কূটনীতিকদের একই মর্যাদায় শামিল করে মূলত, সমতা, সমমূল্যায়ন ও বিশেষ হস্তক্ষেপ নিরোধের যে সাহসিকতা প্রদর্শন করেছেন, তা বাংলাদেশ তথা বাঙালির আত্মমর্যাদা প্রতিষ্ঠার পরিচায়ক।’
দেশের প্রথিতযশা সমাজবিজ্ঞানী ড. মশিউর রহমান বলেন, ‘শেখ হাসিনা একজন দেশপ্রেমিক, প্রবল সাহসী ও দক্ষ রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে আগামী প্রজন্মের হৃদয়ে ঠাঁই করে নেবে। মূলত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ব্যক্তিত্ব ও নেতৃত্বের সফলতার বহুগুণ তার প্রিয় কন্যা শেখ হাসিনার মধ্যে অনুরণিত এবং তিনি তা গৌরবের সঙ্গে চর্চাও করেন বটে।
অধিবেশনে আরও বক্তব্য দেন- সাবেক শিক্ষামন্ত্রী সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদ, সংসদ সদস্য শহীদুজ্জামান সরকার, শফিকুর রহমান, আরমা দত্ত, আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও পিএসসির সাবেক সদস্য অধ্যাপক ড. শরীফ এনামুল কবির, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য স্থপতি অধ্যাপক ড. নিজামউদ্দিন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. হারুনর রশীদ খানসহ ২৫ জন সিনেট সদস্য।
এছাড়া বিভিন্ন সংসদীয় আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য, বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার, বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষসহ ৬৯ জন সম্মানিত সিনেট সদস্য ও চারজন আমন্ত্রিত সিন্ডিকেট সদস্য অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন।
অধিবেশনের শুরুতেই সিনেট সচিব বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোল্লা মাহফুজ আল-হোসেন শোকপ্রস্তাব উত্থাপন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়াত শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারী ও দেশবরেণ্য ব্যক্তিদের প্রতি শোক জ্ঞাপনে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
