ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :
সকল জল্পনাকল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে আজ রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) ঝিনাইদহ পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। প্রায় সাড়ে ১১ বছর পর চলতি বছরের গত ১৫ জুন এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও এক স্বতন্ত্র প্রার্থীর ওপর হামলার অভিযোগে নৌকা প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করে নির্বাচন কমিশন। দীর্ঘ আইনি জটিলতা কাটিয়ে শেষে উচ্চ আদালত দ্রুত নির্বাচন করার নির্দেশ দিলে নির্বাচন কমিশন ১১ সেপ্টেম্বর ভোট গ্রহণের দিন ধার্য করে। নির্বাচনে মোট চারজন প্রার্থী মেয়রপদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরা হলেন, নৌকার প্রার্থী আব্দুল খালেক, স্বতন্ত্র প্রার্থী কাইয়ুম শাহরিয়ার জাহেদী হিজল (নারিকেল গাছ), মিজানুর রহমান মাসুম (মোবাইল ফোন) ও ইশা আন্দোলনের মাওলানা সিরাজুল ইসলাম হাত পাখা নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এদিকে নির্বাচন উপলক্ষে নেয়া হয়েছে বাড়তি সতর্কতা ও নিরাপত্তা। র্যাব, পুলিশ ও আনসার সদস্যের পাশাপাশি ৫ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া ইভিএমে সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণের জন্য প্রতিটি কেন্দ্রে থাকবে একজন করে নির্বাচন অফিসার। ভোটের দিন ১৮ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট গোটা পৌর এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করবেন। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ৯ সেপ্টেম্বর মধ্য রাত থেকেই নির্বাহী ম্যজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে বিজিবি সদস্যরা পৌর এলাকার বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় টহল দিচ্ছেন। সারা শহর নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। প্রার্থীদের সকল ধরনের প্রচারণা বন্ধ থাকলেও রাতের আঁধারে মানুষের আনোগোনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুস ছালেক জানান, ঝিনাইদহ পৌরসভায় মোট ভোটার ৮২ হাজার ৬৯৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৪০ হাজার ৪৪৬ জন ও নারী ভোটার ৪২ হাজার ২৪৯ জন। ইভিএমে ভোট গ্রহণের জন্য ৪৭টি কেন্দ্র্র ও ২৬৫টি বুথ প্রস্তুত করা হয়েছে। জেলা নির্বাচন অফিসার আব্দুস ছালেক আরও জানান ভোট শান্তিপূর্ণ করতে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ভোট কেন্দ্রে কেউ কোনো ঝামেলা করার চেষ্টা করলে প্রশাসন কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলে তিনি জানান।
উল্লেখ্য ২০১১ সালের ১৩ এপ্রিল সর্বশেষ ঝিনাইদহ পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর সীমানা নির্ধারনী মামলায় বছরের পর বছর আটকে যায় পৌরসভার নির্বাচন। দীর্ঘদিন নির্বাচন স্থগিত থাকার কারণে পৌরসেবার মান কমে আসে। নাগরিকরা ঠিকমতো সেবা পায় না। রাস্তাঘাটের বেহালদশার পাশাপাশি ময়লা, আবর্জনা ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা নাজুক হয়ে পড়েছে। এই অবস্থায় ঝিনাইদহ পৌরসভার নির্বাচন নাগরিকদের জন্য খুবই আশার আলো সঞ্চার করেছে বলে সাধারণ ভোটাররা মনে করেন।