বার্তাকক্ষ
ইলোন মাস্ক যখন টুইটার কেনার ঘোষণা দেন, তখন তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার কথা বলেছিলেন। ট্রাম্প অবশ্য ‘ট্রুথ সোশ্যাল’ নামে নিজের নতুন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিয়ে আসছেন। সম্প্রতি ইহুদিবিরোধী পোস্টের কারণে নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে প্রবেশাধিকার হারিয়েছেন র্যাপার কানিয়ে ওয়েস্ট। কিছুটা মাস্ক ও ট্রাম্পের অনুসরণ করে নিজেই এবার অধিগ্রহণ করতে যাচ্ছেন ‘পার্লার’।
অনেকেই পার্লারকে মাইক্রোব্লগিং প্লাটফর্ম টুইটারের বিকল্প নামে ডাকেন। তাই সম্ভবত টুইটার অ্যাকাউন্টের নিয়ন্ত্রণ হারানোর পর বিকল্প এ মাইক্রোব্লগিং প্লাটফর্মটি কেনার উদ্যোগ নিয়েছেন কানিয়ে। পার্লার নিজেদের প্রচারণা চালায় প্রযুক্তি সেবার বাজারে ‘বাকস্বাধীনতায় বিশ্বাসী’ প্লাটফর্ম হিসেবে। সম্প্রতি এক বিজ্ঞপ্তিতে কোম্পানিটি কানিয়ে ওয়েস্টের সঙ্গে মালিকানা হাতবদলের চুক্তির কথা জানায় বলে খবর প্রকাশ করেছে টেকক্রাঞ্চ।
অ্যাকাউন্টের নিয়ন্ত্রণ হারানের পর বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অধিগ্রহণের নতুন ঝোঁক হয়ে উঠেছে ক্ষ্যাপাটে কিছু বিলিয়নেয়ারদের। কিন্তু কানিয়ে ওয়েস্ট কিছুদিন আগে তিনি তার নাম পরিবর্তন করে রেখেছেন ‘ইয়ে’। তার মতো বিতর্কিত বিলিয়নেয়ার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের মালিকানা পাওয়ার জন্য কতটা নিরাপদ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে তা নিয়ে। কারণ কানিয়ে মূলত আরেকজন রক্ষণশীল মানুষের প্রতিনিধিত্ব করেন, যিনি সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মের ওপর নিয়ন্ত্রণ ও প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছেন বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্যকে উসকে দেয়া এবং ডানপন্থী মতাদর্শ জারি রাখার ছদ্মবেশ হিসেবে বাকস্বাধীনতার ধারণাটি ব্যবহার করে।
এদিকে পার্লার কর্তৃপক্ষ ওয়েস্টের সঙ্গে সমঝোতায় এসেছে। এ বছরের মধ্যেই অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে দুটি পক্ষ।
পার্লার অধিগ্রহণ প্রসঙ্গে ওয়েস্টের মন্তব্য অনেকটা এমন, যে বিশ্বে রক্ষণশীল মতামতকে বিতর্কিত হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে, সেখানে আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে আমাদের স্বাধীনভাবে মনের ভাব প্রকাশের অধিকার আছে।
পার্লারের মূল কোম্পানি ‘পার্লামেন্ট টেকনোলজিস’ও চুক্তির বিষয়ে আগ্রহী বলে খবর প্রকাশ করেছে প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট ভার্জ। কোম্পানির পক্ষ থেকে বলা হয়, চুক্তিটি এমন একটি মজবুত ইকোসিস্টেম তৈরি করবে, সেখানে সবার কণ্ঠকেই স্বাগত জানানো হবে।অক্টোবরের শুরুতেই নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে প্রবেশাধিকার হারানোর পর পরই নিজের টুইটার অ্যাকাউন্টেও নিয়ন্ত্রণ হারান কানিয়ে।
কাকতালীয়ভাবে পার্লার অ্যাপটির সিইও হলেন জর্জ ফার্মার, যিনি কানিয়ের নতুন বন্ধু এবং রক্ষণশীল রাজনৈতিক পণ্ডিত ক্যান্ডেস ওয়েন্সের স্বামী। গতকাল চুক্তিটি ঘোষণা করার সময় পার্লারের পক্ষ থেকে বলা হয়, কানিয়ে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছেন। তাকে আর কখনো সোশ্যাল মিডিয়া থেকে সরে যাওয়ার ভয় করতে হবে না।
মার্কিন প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলোন মাস্ক জানিয়েছেন, তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে টুইটারের মালিক হওয়ার পর সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর থাকা এ মাইক্রোব্লগিং সাইটের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবেন। ট্রাম্পকে ফিরিয়ে দেবেন তার টুইটার অ্যাকাউন্ট। টুইটার কেনার এ চুক্তি সফল হলে এটি মাস্ককে সবচেয়ে প্রভাবশালী মিডিয়া প্লাটফর্মগুলোর কর্তৃত্ব এনে দেবে। ইলোন মাস্কের টুইটার কেনার পরিপ্রেক্ষিতে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অবশ্য বলেছেন, অ্যাকাউন্ট পুনর্বহাল করা হলেও তিনি আর এ প্লাটফর্মে ফিরবেন না।
