বার্তাকক্ষ
কক্সবাজার শহরের নাজিরারটেক সমুদ্র উপকূলে ট্রলার থেকে উদ্ধার ১০ লাশের রহস্য দ্রুত সময়ের মধ্যে উদঘাটন করা হবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আনোয়ার হোসেন।
তিনি বলেন, ‘এটি অনেক বড় একটি হত্যাকাণ্ড। ঘটনার রহস্য উদঘাটনে কাজ করছে পুলিশের একাধিক টিম। দ্রুত সময়ের মধ্যে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।’
সোমবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে লাশগুলো দেখতে গিয়ে এসব কথা বলেন ডিআইজি আনোয়ার হোসেন। এ সময় মর্গের সামনে অপেক্ষায় থাকা নিহতদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। তার সঙ্গে ছিলেন চট্টগ্রাম সিআইডির ডিআইজি মো. হাবিবুর রহমান। বেলা ১১টার দিকে ডিআইজি আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশের বিশেষ প্রতিনিধি দল সদর হাসপাতালে লাশগুলো দেখতে যান। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আনোয়ার হোসেন।
‘কীভাবে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, কারা ঘটিয়েছে, সে বিষয়ে আমরা এখনও নিশ্চিত হতে পারিনি’ বলেও উল্লেখ করেন আনোয়ার হোসেন। বলেন, ‘এটি অনেক বড় ঘটনা। এর পেছনে কারা রয়েছে, কীভাবে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, তা নিয়ে তদন্ত চলছে। রহস্য উদঘাটনে আমাদের একাধিক টিম কাজ করছে। সিআইডি ও পিবিআই অনুসন্ধান শুরু করেছে। ঘটনায় যারা জড়িত, তাদের দ্রুত চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি আমরা।’
এদিকে, ১০ লাশের পরিচয় এখনও পুরোপুরি শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। স্বজনরা লাশ শনাক্ত করলেও পুলিশ বলছে, তারা পুরোপুরি নিশ্চিত নয়। নিশ্চিত হওয়ার পরই লাশ হস্তান্তর করা হবে। পরিচয় নিশ্চিতে ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে।
এ বিষয়ে ডিআইজি আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘১০ জনের মধ্যে চার লাশ শনাক্ত করতে পেরেছেন স্বজনরা। বাকি লাশগুলো স্বজনরা শনাক্ত করলেও আমরা পুরোপুরি নিশ্চিত নই। কারণ লাশগুলো এতই বিকৃত হয়ে গেছে যে, কে কার স্বজন তা নিশ্চিত করা কঠিন। আবার লাশের একাধিক দাবিদার থাকতে পারে। এ জন্য পরিচয় নিশ্চিতে ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে। পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পরই লাশ হস্তান্তর করা হবে।’
মর্গে অপেক্ষায় থাকা স্বজনদের দাবি, ১০ জেলের মধ্যে ছয় জন মহেশখালীর এবং চার জন চকরিয়া উপজেলার বাসিন্দা। তবে লাশগুলো বিকৃত হয়ে যাওয়ায় কে কার আত্মীয়, তা নিশ্চিত হতে দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়েছেন তারা।
স্বজনরা জানিয়েছেন, গত ৭ এপ্রিল ওসব জেলে ট্রলার নিয়ে সাগরে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন। তাদের সঙ্গে ছিলেন ট্রলারের মালিক সামশুল আলমও।
এর আগে রবিবার সকালে রশি দিয়ে ট্রলারটি টেনে নাজিরারটেক মোহনায় নিয়ে আসেন স্থানীয় জেলেরা। খবর পেয়ে দুপুর ২টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে ১০ জনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস। পরে লাশগুলো ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। রবিবার বিকাল ও সন্ধ্যায় সদর হাসপাতালের মর্গে এসে স্বজনরা ১০ জনের লাশ শনাক্ত করেন।
স্বজনদের দাবি, নিহতরা হলেন হোয়ানক ইউনিয়নের ছনখোলা পাড়ার রফিক মিয়ার ছেলে ট্রলার মালিক সামশুল আলম (২৩), শাপলাপুর ইউনিয়নের মিটাছড়ি গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে সাইফুল ইসলাম (১৮), জাফর আলমের ছেলে সওকত উল্লাহ (১৮), মুসা আলীর ছেলে ওসমান গনি (১৭), সাহাব মিয়ার ছেলে সাইফুল্লাহ (২৩), মোহাম্মদ আলীর ছেলে পারভেজ মোশাররফ (১৪), মোহাম্মদ হোসাইনের ছেলে নুরুল কবির (২৮), চকরিয়া উপজেলার কোনাখালী ইউনিয়নের কবির হোসাইনের ছেলে সাইফুল ইসলাম (৩৪), শাহ আলমের ছেলে মোহাম্মদ শাহজাহান (৩৫) ও চকরিয়া পৌরসভার চিরিঙ্গা এলাকার জসিম উদ্দীনের ছেলে তারেক জিয়া (২৫)।
