বার্তাকক্ষ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) প্রশাসনিক ভবনে (রেজিস্ট্রার বিল্ডিং) দাপ্তরিক কার্যক্রম শুরুর নির্ধারিত সময়ের পরও ২৫৪ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অনুপস্থিত পাওয়া গেছে।বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত সরেজমিনে প্রশাসনিক ভবনের বিভিন্ন দপ্তর ঘুরে এ দৃশ্য দেখা যায়।
গত ২৪ আগস্ট থেকে ঢাবির দাপ্তরিক সময় সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত করা হয়েছে। কিন্তু দিনের দাপ্তরিক সময়ের শুরুতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ধেকের চেয়ে বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারী ছিলেন অনুপস্থিত।
সরেজমিনে দেখা যায়, ঢাবির প্রশাসনিক ভবনের আইসিটি সেলের ১৩টি চেয়ারে কেউ নেই, ৩১৩(ক) নম্বর রুমে ১১ জন, ৩১৯ নম্বর রুমে ১২ জন, ২০৮ নম্বর রুম ১০ জন, ২০৭ নম্বর রুমে ৬ জন অনুপস্থিত ছিলেন। সকাল ৯টায় হিসাব শাখা পুরোপুরি বন্ধ। সাড়ে ৯টায়ও এ শাখার ১২৩(ক) নম্বর কক্ষে ৬ জন অনুপস্থিত। উপ-হিসাব পরিচালক মশিউর রহমান আসেন সকাল ১০টার দিকে। ৯টা ২০ মিনিটের দিকে পেনশন শাখায় অধিকাংশ চেয়ারই ছিল ফাঁকা। এসময় হিসাব শাখার পরিচালকসহ এ শাখায় ১৩ জন অনুপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া প্রধান প্রকৌশলী আধঘণ্টা বিলম্বে আসেন সকাল সাড়ে ৯টায়। সহকারী প্রকৌশলী প্রীতম দত্তকে তখনো অনুপস্থিত দেখা যায়। একই সময়ে কোষাধ্যক্ষের কার্যালয়ে একজন অনুপস্থিত, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অফিসে (কক্ষ নম্বর ১১৮) ৩ জন, হিসাব শাখার আওতাধীন ১২৩/ক নম্বর কক্ষে ৬ জনের সবাই, ১২৪/খ নম্বর কক্ষে ৩ জন, চেক দেওয়ার কক্ষে ৪ জন, ১২৪/গ নম্বর কক্ষে ভর্তি শাখায় ৪ জন, ১২৪/ঘ নম্বর কক্ষে ট্রাস্ট ফান্ড শাখার ৪ জনের সবাই, ১২৭ নম্বর কক্ষে ১৩ জন, ১১৭ নম্বর কক্ষে ৩ জনের সবাই, ১১৬ নম্বর কক্ষের ২ জন, ১১৫ নম্বর কক্ষে ৮ জন, ১১৩ নম্বর কক্ষে ১ জন, ১০৩ নম্বর কক্ষে কোষাধ্যক্ষের অফিসে একজন এবং উপাচার্য অফিসে একজন অনুপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া প্রকৌশল দপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী ও ই-টেন্ডার রুম, পরীক্ষা উপ-নিয়ন্ত্রক ড. হিমাদ্রি শেখর চক্রবর্তী এবং ডেপুটি রেজিস্ট্রার (প্রশাসন ৩) সৈয়দা মাসুদা আক্তারের কক্ষ ছিল তালাবদ্ধ। তবে ২১২, ২১২ (ক), ২০৩, ২০৫ নম্বর কক্ষের সবাই উপস্থিত ছিলেন।
অফিস শুরুর নির্ধারিত সময়ে আসেননি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত এস্টেট ম্যানেজার মিসেস ফাতেমা বিনতে মুস্তফা। এ বিষয়ে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন, অফিস টাইমে আসিনি, এটা কি দেখার দায়িত্ব আপনার? আমি তো রাউন্ডে থাকবো। রাউন্ড দিয়ে তারপর অফিসে আসবো। আপনি তো এসব কথা জিজ্ঞেস করতে পারেন না। আপনার কাছে বলারও কিছু নেই।এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকারকে ফোন করলে তিনি একটি কাজে আছেন বলে জানান এবং এ বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানান।
বিষয়টি নিয়ে ঢাবির উপ-উপাচার্য প্রশাসন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ বলেন, এটা আসলে কাম্য নয়। আমি দায়িত্ব পাওয়ার পর সবার যথাসময়ে অফিসে আসা নিশ্চিত করার একটি উদ্যোগ নিয়েছিলাম। এখন এটা আবার কিছু কারণে চলছে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের যিনি সর্বোচ্চ দায়িত্বের জায়গায় আছেন তিনি উদ্যোগ নিলে আমরা এটি বাস্তবায়নে সহযোগিতা করবো।
ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, এটা মোটেও কাম্য নয়৷ আমরা আমাদের প্রশাসনের বিভিন্ন অফিসের প্রধানদের বলে দেবো যেন তারা সঠিক সময়ে অফিসে আসা-যাওয়া নিশ্চিত করেন। যারা নিয়মের ব্যত্যয় করবেন তাদের সতর্ক করে দিতেও বলবো।
