বার্তাকক্ষ ,,রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষের ঘটনার দুদিন পরও ক্যাম্পাসে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সোমবার (১৩ মার্চ) সকাল থেকে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের আনাগোনা খুবই কম। ছাত্রনেতারা বলছেন, আন্দোলনে যাওয়ার বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। এদিকে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে ধীরে ধীরে যান চলাচল স্বাভাবিক হচ্ছে। রবিবার রাত থেকে ছোট ছোট যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে।
সরেজমিন দেখা যায়, মহাসড়ক দিয়ে অটোরিকশাসহ ছোট ছোট যানবাহন চলাচল করছে। বাস-ট্রাকের মতো বড় যানবাহন চলাচল করছে বিকল্প পথে রাজশাহী বাইপাস সড়ক দিয়ে। যান চলাচল নির্বিঘ্ন করতে বিনোদপুর ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এর আগে রবিবার (১২ মার্চ) বেলা ১২টায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের একটি অংশ অগ্নিসংযোগ, ইট ও গাছের গুঁড়ি ফেলে সড়ক অবরোধ করেন। পরে তারা সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে সরে গিয়ে চারুকলা অনুষদ সংলগ্ন রেললাইনে অবস্থান নেন। এ সময় তারা ব্যানার, টায়ার পুড়িয়ে বিক্ষোভ করেন। এতে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে রাত ১১টার দিকে পুলিশের উপস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা ফিরে যান। রাত ১২টা থেকে ট্রেন চলাচল শুরু হয়।
এদিকে যান চলাচল স্বাভাবিক হলেও পুরো ক্যাম্পাস ফাঁকা। শিক্ষার্থীদের আনাগোনা নেই বললেই চলে। তবে জানা গেছে, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষার্থীরা আবারও বিক্ষোভ করতে পারেন।
ঘটনার শুরু শনিবার (১১ মার্চ)। সেদিন বগুড়া থেকে বাসে করে রাজশাহীতে আসছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী। বাসের আসনে বসা নিয়ে তার সঙ্গে ওই বাসের চালক ও সহকারীর বাগবিতণ্ডা হয়। পরে বাসটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনোদপুর ফটকে পৌঁছালে তাদের সঙ্গে আবার বাগবিতণ্ডায় জড়ান ওই শিক্ষার্থী। এ সময় স্থানীয় এক দোকানি ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে তর্কে জড়ান। এক পর্যায়ে উভয়ের মধ্যে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। পরে শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে ওই দোকানির ওপর চড়াও হলে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা একজোট হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেন। তখন শিক্ষার্থীরাও তাদের ধাওয়া দেন। এরপর থেকে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় পুরো বিনোদপুর এলাকা। স্থানীয় ব্যক্তিদের হামলা-সংঘর্ষ ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ছোড়া কাঁদানে গ্যাসের শেলে আহত হয়েছেন দুই শতাধিক শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে এখনও ৯০ জন রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) আছেন এক শিক্ষার্থী। ছয় জন শিক্ষার্থীর চোখে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে।