Friday, December 8, 2023
Homeশহর-গ্রামনৌকায় মানুষ পারাপার করে জীবিকা চলে সাজিদার

নৌকায় মানুষ পারাপার করে জীবিকা চলে সাজিদার

Published on

সাম্প্রতিক সংবাদ

কম বয়সীদের মধ্যে হৃদরোগ বাড়ার কারণ জানালেন বিশেষজ্ঞরা

প্রতিদিনের ডেস্ক বর্তমান সময়ে হৃদরোগে আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আক্রান্তদের মধ্যে কম...

কোলেস্টেরল বেড়েছে? এড়িয়ে চলবেন যেসব খাবার

প্রতিদিনের ডেস্ক জীবনযাপনে ব্যাপক অনিয়মের কারণেই মানুষের মধ্যে বাড়ছে হৃদরোগের ঝুঁকি। বিশেষ করে উচ্চ রক্তচাপ,...

নির্বাচন নির্বিঘ্নে করতে অস্ত্র উদ্ধার জরুরি

আগামী শনিবার থেকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নির্বিঘ্ন করতে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও চিহ্নিত...

গৌরবদীপ্ত বিজয়ের মাস

তাহমিনা আক্তার ২ লাখ মা-বোনের সম্ভম আর ৩০ লাখ শহীদের রক্ত রাঙা আমাদের প্রিয় স্বাধীনতা।...

উৎপল মণ্ডল,শ্যামনগর
জীবিকা নির্বাহ করার জন্য সকাল থেকে শুরু হয় সাজিদার খেয়া পারাপার। চলে রাত পর্যন্ত। কখনো কখনো নৌকায় বৈঠা রেখে ছুটে যান বাড়িতে রান্নাসহ অন্য কাজে। নৌকায় মানুষ পারাপার করে জীবন চলে এই নারীর।
সাজিদা খাতুনের (৩২) বাড়ি সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার রমজাননগর ইউনিয়নের মাদার নদীর তীরে কালিঞ্চী গ্রামে। সুন্দরবনসংলগ্ন গোলাখালী আর কালিঞ্চী গ্রাম আলাদা করেছে মাদার নদী। গোলাখালী গ্রামটি একেবারে সুন্দরবনের বুকের মধ্যে অবস্থিত। প্রায় ৯০০ বিঘা গ্রামটির আয়তন। ৮৮টি পরিবারে লোকসংখ্যা ৬০০ জন। গ্রামে কোনো দোকানপাট কিংবা প্রতিষ্ঠান নেই। প্রায় সাড়ে আট শ বিঘার জমির মালিক অন্য এলাকার মানুষ। তাঁরা এসব জমিতে মাছ চাষ করেন।ভেটখালী থেকে নদীপথে অথবা কালিঞ্চী থেকে মাদার নদী পার হয়ে গোলাখালী যেতে হয়। কালিঞ্চী-গোলাখালী মাঝখান দিয়ে প্রবাহিত মাদার নদীতে খেয়া পারাপার করেন সাজিদা খাতুন। প্রায় চার বছর ধরে তিনি এই কাজ করছেন। আজ খেয়া পার হওয়ার সময় নৌকায় বসে কথা হয় সাজিদার সাথে। সাজিদা কেন খেয়া চালায় জানতে চাইলে বলেন,এলাকায় কাজ না থাকায় চার বছর দুই মাস আগে তাঁর স্বামী ফারুক গাজী গেছেন ভারতে কাজের সন্ধানে। দুই মেয়ে নিয়ে মাদার নদীর চরে কালিঞ্চী গ্রামে নদীর চরে বসবাস তাঁদের। বড় মেয়ে ফারহানা খাতুন পড়ে কালিঞ্চী আবদুল গফ্ফার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। এইচএসসি পাস করার পর তাকে নার্সিংয়ে ডিপ্লোমা করানোর ইচ্ছা তাঁর।ছোট মেয়ে সোমা দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে স্থানীয় আকবর আলী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।প্রতিদিন সকাল ছয়টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত নদীতে থাকতে হয় সাজিদা খাতুনকে। মাঝখানে শাশুড়ি পিরু বিবির কাছে বৈঠা ছেড়ে দিয়ে রান্না করতে যান।চার বছর দুই মাস আগে স্বামী ভারতে গেলেও আর যোগাযোগ করেননি। তাই খরচপাতি দেওয়ার প্রশ্নও আসে না। চারজনের সংসার। দুই মেয়ে লেখাপড়া করে। সব মিলিয়ে তাঁদের মাসে ব্যয় হয় ছয় থেকে সাত হাজার টাকা। গোলাখালীর মানুষ পারাপারের জন্য তিনি মাসে পাঁচ হাজার করে পান। আর বাইরের লোকজন গ্রামে এলে তাঁদের কাছ থেকে পার হওয়ার জন্য জনপ্রতি নেন পাঁচ টাকা। এতে দিনে ৩০ থেকে ৬০ টাকা আয় হয়। সব মিলিয়ে দুমুঠো খেয়ে কোনো রকমে সংসার চলে তাঁর।গোলাখালী গ্রামের বাসিন্দা জামিরুল ইসলাম বলেন, রাত আটটার পর গ্রামের কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁদের দুগর্তির সীমা থাকে না। গ্রামে কোনো চিকিৎসক নেই। নেই কোনো ওষুধের দোকান। প্রাথমিকভাবে চিকিৎসক দেখানো কিংবা ওষুধ কেনার জন্য যেতে হয় আট কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে ভেটখালী বাজারে। তাঁরা বাজার করেন সপ্তাহে এক দিন। কালিঞ্চী গ্রামের বাচ্চু বলেন,সাজিদার স্বামী দীর্ঘ দিন ভারতে যেয়ে নিখোঁজ হয়েগেছে সেখান থেকে সাজিদার সংসার নদীতে খেয়া দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতে হয়। সাজিদা খাতুন বলেন,মানুষ ব্যবসা করতে পারলে হাতে টাকা থাকে। মানুষ তাঁদের এলাকায় বেড়াতে আসে। তখন নদী পার হয়ে গোলাখালী আর সুন্দরবন দেখতে এলে তাঁর আয় বাড়ে,তখন একটু ভালো থাকতে পারি।

spot_img
spot_img

এধরণের সংবাদ আরো পড়ুন

বাগেরহাটের রাধালীর খাল পুনঃখনন শুরু : উপকৃত হবেন ১০ হাজার কৃষক

কামরুজ্জামান মুকুল, বাগেরহাট বাগেরহাটের রামপালের রাধালীর খাল পুনঃখনন শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার...

সাতক্ষীরা-যশোর সড়কে পিকআপ ও পরিবহনের মুখোমুখি সংঘর্ষে আহত ৫

আব্দুল আলিম, সাতক্ষীরা সাতক্ষীরায় পিকআপ ও ঢাকাগামী একটি পরিবহনের মুখোমুখি সংঘর্ষে কমপক্ষে পাঁচ জন আহত...

শ্যামনগরে ৬০ কেজি হরিণের মাংস জব্দ

উৎপল মণ্ডল, শ্যামনগর সাতক্ষীরার শ্যামনগর থেকে চারটি বস্তায় ভর্তি ৬০ কেজি হরিণের মাংস উদ্ধার করেছে...