বর্তমান সরকার রেলপথ উন্নয়নে নানামুখী কাজ করছে। সর্বশেষ গত রোববার অনানুষ্ঠানিকভাবে আটটি কোচ ও একটি ইঞ্জিনের স্পেশাল ট্রেনযোগে দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ প্রকল্পের কারিগরি তদারকি করেন কর্মকর্তারা। ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রকল্পটি উদ্বোধন করবেন। এই উদ্বোধন সামনে রেখে রুটটি পরিদর্শন করেন সরকারি রেল পরিদর্শক। এর মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথে নিরবচ্ছিন্নভাবে নতুন যুগের সূচনা হলো। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে কক্সবাজারে পর্যটন শিল্পের নতুন দিগন্তের সূচনা হবে। এতে কম সময়ে, কম খরচে আরামদায়কভাবে যাতায়াত করতে পারবেন এই অঞ্চলের মানুষ। দেশের অর্থনীতির গতি বাড়বে বহুগুণ। হবে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা। চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেলপথের দূরত্ব ১৫০ কিলোমিটার। দোহাজারী থেকে সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, চকরিয়া, রামু হয়ে পর্যটন নগরী কক্সবাজার পর্যন্ত চলে গেছে এই রেল লাইনটি। বাংলাদেশ রেলওয়ের একটি মেগা প্রকল্প এটি, গ্রহণ করা হয় ২০১০ সালের ১ জুলাই। তিন বছরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ১২ বছরেও তা হয়নি। চার দফায় মেয়াদ বৃদ্ধি করে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত সময় নির্ধারিত হয়েছে। ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১৫০ কিলোমিটার রেললাইন প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সম্প্রতি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় নির্মাণাধীন দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ। এটি ট্রেন চলাচল শুরু করার ক্ষেত্রে তেমন একটা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেনি। বন্যায় ক্ষতি হওয়া লাইনের মেরামত ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। চাহিদা থাকায় বাংলাদেশে রেলের সম্ভাবনা উজ্জ্বল। বাংলাদেশ রেলে সোনালি যুগের সূচনা করার সময় বয়ে চলেছে। দেশের ভেতরে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠতে পারে রেল। কিন্তু নানা কারণে নিরাপদ বাহন হয়ে উঠেছে অনিরাপদ। বিষয়গুলো গুরুত্ব দেয়া উচিত। দেশের অধিকাংশ রেলপথে ঝুঁকি নিয়ে চলছে রেল। লাইনচ্যুত হওয়াসহ ছোটখাটো দুর্ঘটনা লেগেই আছে রেলপথে। যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনায় বিপুল প্রাণহানি ঘটলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। রেললাইনে পাথর থাকা অপরিহার্য হলেও মাইলের পর মাইল রেললাইনে পাথর নেই, চুরি হয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ রেলওয়ের অধিকাংশ সেতুই নির্মিত হয়েছে ব্রিটিশ আমলে। এসব সেতুর বেশির ভাগই ঝুঁকিপূর্ণ-জরাজীর্ণ। জোড়াতালি দিয়ে মেরামত করা এসব সেতুর ওপর দিয়েই চলছে ট্রেন। ফলে একটু উনিশ-বিশ হলেই ঘটছে দুর্ঘটনা। দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার অন্যতম প্রধান মাধ্যম হলো রেলওয়ে। অথচ দীর্ঘ কয়েক দশক অবহেলার শিকার হয়ে আসছিল রেলওয়ে। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতাসীন হয়ে রেলের দিকে দৃষ্টি ফেরায়। স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয় হয়েছে রেলওয়ে। রেল উন্নয়ন মহাপরিকল্পনাও হাতে নেয়া হয়েছে, যা দেশবাসীকে খুবই আশান্বিত করেছে। তবে এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নে শ্লথগতি, সংশ্লিষ্ট উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর অগ্রগতি অনাকাক্সিক্ষত প্রতিবন্ধকতায় পড়ার খবর আমাদের স্বভাবতই হতাশ করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী সময়মতো প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হলে সত্যিকার অর্থে রেল যোগাযোগে একটা বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটবে। তার সুফল পড়বে দেশের সার্বিক অগ্রগতিতে। পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্প উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে ৪৩ থেকে ৪৭ জেলা রেল যোগাযোগে যুক্ত হয়েছে। এটি আমাদের মাইলফলক অর্জন বলা যায়।

সাম্প্রতিক সংবাদ
শহর-গ্রাম
শ্যামনগরে আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবস পালিত
উৎপল মণ্ডল,শ্যামনগর
সাতক্ষীরার শ্যামনগরে পালিত হয়েছে আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবস। "উন্নয়ন, শান্তি ও নিরাপত্তার...
খুলনা
পাইকগাছায় আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবস পালিত
আব্দুর রাজ্জাক বুলি, পাইকগাছা
পাইকগাছায় জেলা দুর্নীতি দমন কমিশন, উপজেলা প্রশাসন ও দূর্নীতি প্রতিরোধ...
যশোর
যবিপ্রবির ৮ শিক্ষার্থী বহিষ্কার
রুহুল আমিন, যবিপ্রবি
মারধরের ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্তার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের...
শহর-গ্রাম
পেঁয়াজের ঝাঁঝে দমবন্ধ সাধারণ ক্রেতার, ৩ জনকে জরিমানা
উৎপল মণ্ডল, শ্যামনগর
অস্থির হয়ে উঠেছে পেঁয়াজের বাজার। ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ ঘোষণার পর এক...
এধরণের সংবাদ আরো পড়ুন
সম্পাদকীয়
গ্যাসের পরিকল্পিত ব্যবহার জরুরী
প্রতি বছর শীত এলেই গ্যাসের সংকট মারাত্মক আকার ধারণ করে। এবারো ব্যতিক্রম নয়। এতে...
সম্পাদকীয়
নির্বাচন নির্বিঘ্নে করতে অস্ত্র উদ্ধার জরুরি
আগামী শনিবার থেকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নির্বিঘ্ন করতে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও চিহ্নিত...
সম্পাদকীয়
শিশুশ্রম বন্ধে সম্মিলিত প্রয়াস জরুরি
শিশুশ্রম রোধে সরকারি-বেসরকারি কোনো উদ্যোগ যেন কাজে আসছে না। দিন দিন যেন শিশু শ্রমিকের...