খুলনা সংবাদদাতা
শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. নিশাত আব্দুল্লাহর ওপর হামলায় অভিযুক্ত এএসআইকে গ্রেফতার না করা পর্যন্ত খুলনায় চিকিৎসকদের কর্মবিরতি চলবে। একই সঙ্গে ডা. নিশাতের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ)। বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) দুপুরে বিএমএ’র নির্বাহী পরিষদের বৈঠক শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে সংবাদ সম্মেলনে বিএমএ খুলনার সভাপতি ডা. শেখ বাহারুল আলম এ তথ্য জানান। সংবাদ সম্মেলনে বাহারুল আলম বলেন, ‘পুলিশকে আমরা প্রতিপক্ষ বানাতে চাই না। কিন্তু পুলিশ নাঈমের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে বিচার চাইতে চাইতে আর পারছি না। তার কাছে আর কোনও আবেদন করবো না, স্মারকলিপিও দেবো না। এবার স্মারকলিপি দেবো প্রধানমন্ত্রীর কাছে। আর পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অভিযুক্ত এএসআই নাঈমকে গ্রেফতার না হওয়া ও ডা. নিশাত আব্দুল্লাহর নামে মিথ্যা যৌন হয়রানির মামলা প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মবিরতি চলবে।‘আগামী ৪ মার্চ বেলা ১১টায় আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসকদের বিক্ষোভ সমাবেশ হবে। একই দিন সন্ধ্যায় বিএমএ মিলনায়তনে সাধারণ সভা হবে। ওই সভা থেকে দাবি আদায়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত আসতে পারে। সেখানে চিকিৎসকদের গণপদত্যাগের সিদ্ধান্তও হতে পারে।’ এদিকে সকাল থেকে খুলনায় সরকারি-বেসরকারি সব হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দ্বিতীয় দিনের মতো চিকিৎসকদের কর্মবিরতি চলছে। ডা. নিশাত আব্দুল্লাহর ওপর হামলায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে এ কর্মবিরতি বুধবার সকাল থেকে শুরু হয়। টানা দুই দিন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসক না থাকায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন রোগীরা। এ ঘটনায় এএসআই নাঈমকে ক্লোজড করা হয়েছে। বুধবার রাতে তাকে সাতক্ষীরা সদর থানা থেকে সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ লাইনে ক্লোজড করা হয়। ডা. শেখ বাহারুল জানান, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি খুলনার শেখপাড়ায় অবস্থিত হক নার্সিং হোমে অপারেশন চলাকালীন হামলা করেন সাতক্ষীরা জেলা পুলিশে কর্মরত এএসআই নাঈম ও তার সঙ্গীরা। ডা. শেখ নিশাত আব্দুল্লাহকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন তারা। অপারেশন থিয়েটার ভাঙচুর করা হয়। তার মেয়ের এক মাস আগে করা অপারেশনের জটিলতার কথা বলে তারা এই হামলা চালান। অপারেশন মাঝপথে বন্ধ করে দেন তারা। এই ঘটনায় ওই পুলিশ কর্মকর্তাসহ অজ্ঞাত কয়েকজনের বিরুদ্ধে বুধবার সোনাডাঙ্গা থানায় মামলা করেন ডা. নিশাত আব্দুল্লাহ। আর যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে ডা. নিশাত আব্দুল্লাহ ও হক নার্সিং হোমের ডা. নুরুল হক ফকিরের বিরুদ্ধে মামলা করেন ওই এএসআই’র স্ত্রী।