বার্তাকক্ষ বাংলাদেশের পানির অধিকার বিষয়ে বিগত পাঁচ দশকে ফারাক্কা নিয়ে ভারতের অনড় অবস্থানে বিশেষ পরিবর্তন হয়নি। তবে ফারাক্কার কারণে বাংলাদেশ যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং হচ্ছে ভারতও এখন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে খুব সম্প্রতি ভারতেও ফারাক্কার বিরুদ্ধে জনমত জোরালো হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া।মঙ্গলবার (১৬ মে) ঐতিহাসিক ফারাক্কা লংমার্চ দিবসের ৪৭তম বার্ষিকী উপলক্ষে ‘পথ মওলানা ভাসানী’ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার ফারাক্কা ব্যারাজ ভেঙে ফেলার প্রস্তাব দিয়েছেন। মেধা পাটেকরের মতো অ্যাক্টিভিস্টসহ বিশেষজ্ঞরাও মনে করছেন ভারতেও ফারাক্কা এখন সুবিধার চেয়ে অসুবিধাই বেশি ঘটাচ্ছে- কাজেই এটি অবিলম্বে ‘ডিকমিশন’ করা দরকার। ফারাক্কার মারাত্মক বিরূপ প্রভাব বাংলাদেশে পড়ছে তেমন ভারতেও নানা ধরনের বিপদ ডেকে এনেছে। বিহারে প্রতিবছরের ভয়াবহ বন্যার জন্য ফারাক্কাকেই দায়ী করা হয়। যে কলকাতা বন্দরের নাব্য ঠিক রাখতে এই ফারাক্কা নির্মাণ সেটাও আজ ভয়াবহ হুমকির মুখে। তাই ভারতীয় বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন ফারাক্কা বাঁধের প্রভাব খুবই ধ্বংসাত্মক, ফলে এই বাঁধ ভেঙে ফেলা উচিত।
তিনি আরও বলেন, ফারাক্কার বিরূপ প্রভাবের এই বিষয়টি মওলানা ভাসানী তখনই উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন। আর এই কারণেই তিনি জাতীয় স্বার্থে ৪৪ বছর আগেই ফারাক্কার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। তিনি মনে করতেন গঙ্গার পানিতে আমাদের ন্যায্য অধিকার, এটা আমাদের প্রাকৃতিক অধিকার, এ অধিকার পশু-পাখি, গাছপালা, কীটপতঙ্গ প্রাণবান সবকিছুর জন্মগত অধিকার। এ অধিকার হরণ করার ক্ষমতা কারও নেই।
সভায় আলোচকরা বলেন, মওলানা ভাসানীর আগে কোনো রাজনৈতিক নেতা বা কোনো পরিবেশবিজ্ঞানী আমাদের জাতীয় জীবনে ফারাক্কা বাঁধের ফলে সৃষ্ট দুর্যোগ সম্পর্কে আলোকপাত করেননি। মজলুম জননেতার ফারাক্কাং লংমার্চের ৪৭ বছর পরও আমাদের শাসকগোষ্ঠী ফারাক্কা সমস্যা সমাধান ও পানির অধিকার আদায় করতে পারেনি। জাতীয় জীবনে এমন একটা সংকট, এতবড় অন্যায় আমাদের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, শাসকগোষ্ঠী চোখ বুঝে সহ্য করে যাচ্ছেন।
তারা আরও বলেন, আন্দোলন ও সংগ্রামের মধ্য দিয়েই অধিকার আদায় করতে হয়, সে পথ আমাদের দেখিয়ে গেছেন চিরপ্রতিবাদী মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী। ফারাক্কা লংমার্চ করে তিনি পানি নিয়ে ভারত যে বাংলাদেশের সঙ্গে খেলছে সে বিষয়ে বিশ্ববিবেককে সজাগ করেছিলেন। অনুরূপ মানবপ্রেমী মানুষ আজ বিরল। তিনি মুকুটহীন সম্রাট।
বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভুইয়ার সভাপতিত্বে ও সমন্বয়কারী সৈয়দ হারুন অর রশিদের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ স্বাধীনতা পার্টি সাধারণ সম্পাদক এ এ এম ফয়েজ হোসেন, জাগপা প্রেসিডিয়াম সদস্য আসাদুর রহমান খান, নয়া গণতান্ত্রিক পার্টি সভাপতি এম এ মান্নান, বাংলাদেশ গণমুক্তি পার্টির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোনেম, ফরওয়ার্ড পার্টির সদস্য সচিব মাহাবুবুল আলম চৌধুরী, পিপলস গ্রিন পার্টির চেয়ারম্যান রাজু আহমেদ খান, এনডিএমের সাংগঠনিক সম্পাদক জাবেদুর রহমান জনি, বাংলাদেশ পিস ফোরামের আহ্বায়ক জসিম উদ্দিন রাজা, রাজনীতিক এম এম মাসুদ, আবু সুফিয়ান প্রমুখ।
