Tuesday, September 26, 2023
Homeজাতীয়ফিটনেসবিহীন গাড়ি: বিআরটিএ’র অভিযান নিয়ে প্রশ্ন

ফিটনেসবিহীন গাড়ি: বিআরটিএ’র অভিযান নিয়ে প্রশ্ন

Published on

সাম্প্রতিক সংবাদ

সংখ্যালঘু কমিশন এবার বাস্তবায়ন হোক

বিভিন্ন সময় দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন, অবৈধভাবে ভূমি দখল ও সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনার...

এমারেল্ড অয়েলের সঙ্গে যমুনা এডিবল অয়েলের চুক্তি

প্রতিদিনের ডেস্ক পুঁজিবাজারে খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি এমারেল্ড অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ...

শিল্পীর নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় পূর্ণতা পাচ্ছে দূর্গাপূজার প্রতিমা

নিজস্ব প্রতিবেদক আর কয়েক দিন পর শুরু হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা।...

‘কোনো কিছু না পাওয়ার চেয়ে কিছু পাওয়া ভালো’

প্রতিদিনের ডেস্ক ২০১০ সালে এশিয়ান গেমসে রৌপ্য পদক জিতেছিল বাংলাদেশ। এরপর ২০১৪ সালে আরও একবার...

বার্তাকক্ষ
দেশের এখন ফিটনেসবিহীন গাড়ির সংখ্যা কত এর সঠিক কোনও সংখ্যা নেই সরকারের হাতে। কয়েকটি সূত্র বলছে, রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে বর্তমানে সাড়ে পাঁচ লাখের বেশি ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল করছে। তবে হিসাব না থাকলেও ফিটনেসবিহীন গাড়ি বন্ধে বছরব্যাপী অভিযান চালিয়ে আসছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। গত ১২ মাসে তিন হাজার ১৯৩টি মামলা হয়েছে। লাখ লাখ অবৈধ যানের বিরুদ্ধে এত কম সংখ্যক অভিযান নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে।
বিআরটিএ জানিয়েছে, ঢাকাসহ সারা দেশে তাদের নিবন্ধিত বৈধ যানবাহনের সংখ্যা ৫৩ লাখ ৪৮ হাজার ১৬০টি। এর মধ্যে অন্তত সাড়ে পাঁচ লাখের মতো ফিটনেসবিহীন গাড়ি রয়েছে বলে দাবি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের। ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে ফিটনেসবিহীন গাড়ির সংখ্যা ৪ লাখ ৮১ হাজার ২৯টি বলে জাতীয় সংসদকে জানিয়েছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
এদিকে বিআরটিএ’র ফিটনেসবিহীন গাড়ির ভ্রাম্যমাণ আদালত সংক্রান্ত প্রতিবেদন বলছে, ২০২১ সালের জুলাই থেকে ২০২২ সালের জুলাই (১২ মাস) পর্যন্ত অভিযানে মোট তিন হাজার ১৯৩টি মামলা দায়ের করা হয়। এসব মামলায় ৬৭ লাখ ৪৫ হাজার ৮৯০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। এর মধ্যে মাস হিসেবে সর্বোচ্চ মামলা দায়ের এবং জরিমানা আদায়ের ঘটনা গেলো বছরের সেপ্টেম্বরে। ওই মাসের মামলা সংখ্যা ৪১৯টি। আর জরিমানার পরিমাণ ৮ লাখ ৫৭ হাজার টাকা। সবচেয়ে কম মামলা হয়েছে গত বছরের জুলাই মাসে। ১০২টি মামলা এবং জরিমানা ২ লাখ ২ হাজার ৫০০ টাকা।
কোন মাসে কত মামলা
মাসভিত্তিক হিসাব অনুযায়ী, ২০২১ সালের জুলাইয়ে মামলার সংখ্যা এবং জরিমানার পরিমাণ যথাক্রমে ১০২টি ও ২ লাখ ২ হাজার ৫০০ টাকা, আগস্টে ১৬১টি ও ৩ লাখ ২৬ হাজার ১০০ টাকা, সেপ্টেম্বরে ৪১৯টি ও ৮ লাখ ৫৭ হাজার টাকা, অক্টোবরে ৩৫৪টি ও ৫ লাখ ৯৮ হাজার টাকা, নভেম্বরে ২২১টি ও ৪ লাখ ৪১ হাজার টাকা, ডিসেম্বরে ২৬৪টি ও ৫ লাখ ৩৭ হাজার টাকা।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে মামলার সংখ্যা এবং জরিমানার পরিমাণ যথাক্রমে ২৩২টি এবং ৫ লাখ ৭১ হাজার ৫০০ টাকা, ফেব্রুয়ারিতে ২৫৫টি এবং ৫ লাখ ৯৯ হাজার টাকা, মার্চে ২৯৯টি এবং ৬ লাখ ৭৭ হাজার টাকা, এপ্রিলে ৩১৬টি এবং ৬ লাখ ৬২ হাজার ৬০০ টাকা, মে মাসে ২০০টি এবং ৪ লাখ ২ হাজার ৬০০ টাকা, জুনে ২১৫টি এবং ৫ লাখ ৬ হাজার ৫৯০ টাকা, জুলাইয়ে ১৫৫টি এবং ৩ লাখ ৬৫ হাজার টাকা।
সবশেষ আগস্টের শুরুর দিকে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর সঙ্গে সমন্বয় করতে গণপরিবহনের ভাড়া বাড়ানো হয়। এক মাসের শেষে তেলের দাম কমায় ভাড়াও কিছুটা কমানো হয়। আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ঠেকাতে এবং ফিটনেসবিহীন গাড়ির চলাচল বন্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে বিআরটিএ। সে সময় ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরে ৯ থেকে ১১টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে মামলা দায়ের এবং জরিমানা আদায়ের কথা জানায় সংস্থাটি। অভিযানে দিনে ৬০-৭০টি মামলা দায়ের এবং ২-৩ লাখ টাকার মতো জরিমানা আদায় করতে দেখা যায়।
কী কী অভিযোগ
যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালত যথাযথ প্রক্রিয়ায় পরিচালিত না হওয়ায় পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে না। লাখ লাখ বাস চলাচল করছে সড়কে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক যান ফিটনেসবিহীন। মাত্র ১০-১১টি ভ্রাম্যমাণ আদালত দিয়ে কী এত বিপুল সংখ্যক গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব? অবৈধ অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে বিষয়টি দেখভাল করার দায়িত্বে থাকা মহলকে ম্যানেজ করে চলছেন মালিকরা। এখন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে কে?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সড়কে চলাচলের জন্য যে কোনও ভেহিক্যালের যান্ত্রিক ও কাঠামোগত ফিটনেস থাকতে হয়। কাঠামোগত দিকটি চোখে দেখে দেওয়া গেলেও যান্ত্রিক দিক পুরোপুরি পরীক্ষা-নিরীক্ষার ওপর নির্ভর করতে হয়। পুরো প্রক্রিয়াটি দেখভাল করার মতো প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত ও পদ্ধতিগত সক্ষমতা এই মুহূর্তে বিআরটিএ’র নেই। এক্ষেত্রে সংস্থাটির আন্তরিকতার অভাবের পাশাপাশি লোকবল সংকটও রয়েছে। অর্থের বিনিময়ে ফিটনেসবিহীন গাড়িকে ফিটনেস সনদ দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ আছে। বৈজ্ঞানিক উপায়ে ফিটনেস পরীক্ষা না করায় প্রক্রিয়া নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে বলে মনে করেন তারা।বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান বলেন, ফিটনেসবিহীন গাড়ি বন্ধে বিআরটিএ’র অভিযান আরও জোরদার এবং ব্যাপক পরিসরে পরিচালনা করতে হবে। যানবাহন ও মালিকদের বিরুদ্ধে আইনের যথাযথ প্রয়োগ করতে হবে। অন্যথায় ফিটনেসবিহীন গাড়ির সংখ্যা ক্রমাগত বাড়তে থাকবে।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান বলেছেন, ফিটনেসবিহীন গাড়ি বন্ধে সড়ক পরিবহন আইনটি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না। একটি অসাধু চক্রের কারণে এসব গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। ভ্রাম্যমাণ আদালতের সংখ্যা বাড়ানো দরকার। ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে বিআরটিএ ও পুলিশকে।
অভিযোগ রয়েছে, ফিটনেসবিহীনসহ নানা অনিয়ম-অপরাধের বিরুদ্ধে বিআরটিএ অভিযানে নামলেই হঠাৎ সড়কে বাস নামানো কমিয়ে দেন মালিকরা। বিশেষ করে কোনও সড়কে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসলে সেই রুটের ফিটনেসবিহীন তখন বন্ধ রাখেন তারা। বিআরটিএ’র অভিযানের তথ্য আগেই পরিবহন মালিকদের কাছে পৌঁছে যায় বলেও শোনা যায়।
যা বলছে বিআরটিএ ও পুলিশ
এ বিষয়ে বিআরটিএ’র পরিচালক (রোড সেফটি) মাহবুব-ই-রব্বানী বলেন, ফিটনেসবিহীন গাড়ি বন্ধে নতুন আইন অনুযায়ী নিয়মিতভাবে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। বিষয়টি দেখার দায়িত্ব পুলিশের, তাদের বিপুল সংখ্যক লোকবল আছে।
বিষয়টি নিয়ে রমনা ট্রাফিক বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার জয়দেব চৌধুরী বলেন, গাড়ির ফিটনেস সনদ দিয়ে থাকে বিআরটিএ। আমরা নিয়মিত সড়কে অভিযান চালিয়ে থাকি। ফিটনেসবিহীন গাড়ি পেলে ডাম্পিং করা হয়, মামলাও দেওয়া হয়।

spot_img
spot_img

এধরণের সংবাদ আরো পড়ুন

লালবাগে মিষ্টির দোকানে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৯ ইউনিট

প্রতিদিনের ডেস্ক রাজধানীর লালবাগে মদিনা মিষ্টান্ন ভান্ডার নামে একটি মিষ্টির দোকানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাস্থলে...

‘এলপিজির দাম বেশি নিলে ডিলারদের লাইসেন্স বাতিল’

প্রতিদিনের ডেস্ক সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে তরলীকৃত পেট্রেলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম বেশি নিলে প্রয়োজনে ডিলারদের...

বিশ্বের মানুষ পশ্চিমাদের প্রতারণার শিকার

প্রতিদিনের ডেস্ক বিশ্বের বেশিরভাগ মানুষ পশ্চিমাদের প্রতারণার শিকার বলে মন্তব্য করেছেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ।...