বাঁধ নির্মাণকাজ শেষ হবে কবে

0
15

হাওড়ের ফসলরক্ষা বাঁধের নির্মাণকাজে ধীরগতি কৃষকদের শঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি সুনামগঞ্জের হাওড়ের ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণ ও মেরামতের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও কাজের মেয়াদ বাড়িয়ে তা ৭ মার্চ করা হয়। নির্ধারিত তারিখের পরও কাজ শেষ না হওয়া দুঃখজনক। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা প্রশাসনের দাবি, ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ প্রায় ৯৫ শতাংশ শেষ হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় কাজ শেষ হয়েছে সর্বোচ্চ ৭৫ শতাংশ। এখনো অনেক বাঁধে ফেলা হচ্ছে মাটি। কোনো কোনো প্রকল্পে এখনো হয়নি দুর্মুজ, ঘাস লাগানো ও প্যালাসাইটিংয়ের কাজ। কাজের এমন দীর্ঘসূত্রতায় কৃষকদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। দেশের ৭টি জেলা পড়েছে হাওড় অঞ্চলে। এগুলো হলো কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, সিলেট, হবিগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া। হাওড় এলাকার একমাত্র ফসল হচ্ছে বোরো ফসল। এই অঞ্চলের মানুষের প্রধান খাদ্য নির্ভর করে এ বোরো ফসলের ওপর। হাওড় অঞ্চলে প্রায় ১০ লাখ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়ে থাকে। ধান উৎপাদনের বিশাল এই এলাকা বরাবরই উপেক্ষিত হয়ে আছে। পাহাড়ি ঢলে হাওড় এলাকায় বারবার ফসলহানি ঘটে। এছাড়া বন্যার কারণে ফসল ঘরে তুলতে পারে না কৃষক। হাওড়ের এই খাদ্য ঘাটতি দেশের মোট খাদ্যশস্য উৎপাদনের ওপর প্রভাব পড়ে, সন্দেহ নেই। বিষয়গুলো সংশ্লিষ্টদের মাথায় রাখা উচিত। প্রতি বছরই আগাম বন্যার হাত থেকে ফসল রক্ষায় হাওড়ে নির্মাণ করা হয় বাঁধ। প্রতি বছরই এই বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম ও দীর্ঘসূত্রতার অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। এবারো একই অভিযোগ তাদের। নির্ধারিত সময়ে এবারো বাঁধের কাজ শেষ না হওয়ায় ধান নিয়ে শঙ্কিত হাওড় পাড়ের কৃষকরা। ঠিকাদাররা নির্মাণকাজ অসম্পূর্ণ রেখে বিল তুলে নেন। হাওড়ের ফসলরক্ষায় বাঁধ নির্মাণের জন্য এবার সর্বোচ্চ বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। সরকারের এ উদ্যোগকে আমরা সাধুবাদ জানাই। তবে বাঁধ নির্মাণে বরাদ্দকৃত অর্থের সুষ্ঠু ব্যবহার জরুরি। তা না হলে বরাদ্দ কাজে লাগবে না। আমরা আশা করি, হাওড়ে বাঁধ নির্মাণে নিয়ম-শৃঙ্খলা ফিরবে। বাঁধ নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণে কোনোরকম গড়িমসি ও অনিয়ম যাতে না হয় সেদিকে সজাগ থাকতে হবে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। ফসল রক্ষাসহ বৃহত্তর জনবসতিকে বন্যার কবল থেকে রক্ষায় বাঁধের গুরুত্ব অপরিসীম। সঠিক সময়ে এবং মানসম্মতভাবে বাঁধগুলো নির্মাণ করা খুবই জরুরি।