মাগুরা সংবাদদাতা
হতদরিদ্র ভ্যান চালকের মেয়ে কেয়া। বাবার অল্প আয়ের সংসারে কোনো মতে চলছে তার পড়ালেখা। বাড়ি থেকে স্কুলের দূরত্ব চার কিলোমিটার হওয়ায় ঠিকমতো বিদ্যালয়ে যাওয়া আসা করতে পারে না সে। অবশেষে কেয়ার প্রতিদিন স্কুলে যাওয়া নিশ্চিত করতে গোলাপি রঙের একটি নতুন চকচকে বাইসাইকেল কিনে দিয়েছেন মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলা সদরের অবসরপ্রাপ্ত প্রবীণ শিক্ষক আফছার উদ্দিন আহমেদ। শনিবার (৮ অক্টোবর) দুপুরে কেয়া খাতুনের হাতে সাইকেলটি তুলে দেন আফছার উদ্দিন। কেয়াদের বাড়ি উপজেলা সদরের পোয়াইল গ্রামে। সে সদরের সরকারি আর.এস.কে.এইচ ইনস্টিটিউশন মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। তার আরেক ভাই একই স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। কেয়া খাতুন বলেন, ‘কেউ আমারে নতুন একটি বাইসাইকেল কিনে দেবেন আমি স্বপ্নেও ভাবিনি। আমার স্বপ্ন পূরণ হওয়ায় আমি দারুণ খুশি। আমি পড়ালেখা করতে চাই। আমি নিজের পাঁয়ে দাঁড়াতে চাই।’
কেয়ার বাবা মো. রিজাউল বলেন, ‘ভ্যান চালায়ে দৈনিক যে টাকা আয় করি, তা দিয়ে ছাওয়াল মায়ের খাবারই ঠিক মতো জুটাতি পারিনে। মায়েডা পড়ালেহায় খুব ভালো। বাড়িত্তে স্কুল চার কিলোমিটার দূর। ভ্যান ভাড়া দিতি না পারায় প্রায়ই হাঁটে স্কুলি যাতি হয়। স্কুলে যাতি দেরি হয়ে যায়। মায়েডা প্রায়েই এট্টা সাইকেলের আবদার করে। কিন্তু সাইকেল আমি কোহানতে কেনব? পরে আফছার স্যার খবর পায়ে আমার মনিরে নতুন একখান সাইকেল কিনে দেছে। এহন আমার মনি সাইকেল চালায়ে স্কুলি যাতি পারবি। ভালো করে লেহাপড়াও করতি পারবি। স্যারের জন্য আমি দোয়া করি।’ শিক্ষক আফছার উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘এলাকায় শিক্ষা বিস্তারের জন্য আমি ও আমার পরিবারের সদস্যরা যথাসম্ভব সহযোগিতা করার চেষ্টা করি। মেয়েটি সাইকেলের অভাবে স্কুলে যেতে পারছে না জেনে একটি সাইকেলের ব্যবস্থা করে দেই। এতে তার পড়ালেখা, স্কুলে যাওয়া আসায় অনেক সুবিধা হবে।’
