বুলিং প্রতিরোধে জনসচেতনতা

0
13

বিশ্বায়নের ছোঁয়ায় আমাদের জীবনে যুক্ত হয়েছে কিছু বৈপ্লবিক পরিবর্তন। বর্তমানে অপরাধ জগতে এক নতুন আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে সাইবার বুলিং। সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে বিরাজ করেছে এই ভয়ংকর অপরাধ তথা সাইবার বুলিং। সাধারণত ‘বুলিং’ বলতে বোঝায়, কাউকে শারীরিক বা মানসিকভাবে হেনস্তা করা, হেয় অপদস্ত করে মজা করা, তার ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করা এবং সেগুলো নিয়ে অতিরিক্ত মাতামাতি করা। বুলিং মূলত সচেতন বা অবচেতনভাবে এক ধরনের আক্রমণাত্মক আচরণ, কাউকে অপমান, অপদস্থ বা হেয় করা। বুলিং হলো অপ্রত্যাশিত ও আক্রমণাত্মক আচরণ। মানুষ সাধারণত চার ধরনের বুলিংয়ের শিকার হয়ে থাকে। যেমন-শারীরিক, মৌখিক, সামাজিক এবং সাইবার। এদের মধ্যে সাইবার বুলিং খুবই ভয়ংকর। ‘সাইবার বুলিং’ বলতে মূলত অনলাইন ব্যবহার করে বা অনলাইনের মাধ্যমে কারো ব্যক্তিগত বিষয়ে হেয় অপদস্ত করা বা হেয় করার উদ্দেশ্যে ব্যক্তিগত বা জনসম্মুখে কটাক্ষ করা, কারো গোপন তথ্য, ব্যক্তিগত ফটো বা ভিডিও ধারণ করে তা প্রকাশ করা, আক্রমণাত্মক ব্যবহার, অযথা ভয় দেখানো বা প্রাণনাশের হুমকি প্রদান ইত্যাদি। বতর্মান সময়ের অপ্রাপ্ত বয়স্ক কিশোর-কিশোরী ও নারীরাই সবচেয়ে বেশি সাইবার বুলিংয়ের শিকার হচ্ছে। বিশেষ করে বাংলাদেশে সাইবার বুলিংয়ের সর্বোচ্চ আক্রমণের শিকার হচ্ছেন নারীরা। এর প্রভাব মাদকের মতোই ভয়াবহ। স্ট্যাটিস্টা তথ্যমতে, বাংলাদেশের ৭৬ শতাংশ নারী বিভিন্ন সময়ে সাইবার বুলিংয়ের শিকার হয়েছে। বুলিংয়ের ফলে ভিকটিম হীনম্মন্যতায় ভোগে, আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলে, সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটাতে পারে না, নিজেকে অযোগ্য ভাবতে শুরু করে, এমনকি বুলিং একটা তাজা প্রাণকে তিলে তিলে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যায়। বুলিং প্রতিরোধে কঠোর আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের পাশাপাশি বুলিং সম্বন্ধে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে বাবা-মা, শিক্ষকসহ গণমাধ্যমকেও এগিয়ে আসতে হবে। সর্বোপরি সমাজের সর্বস্তরে বুলিং প্রতিরোধে জনসচেতনতার বিকল্প নেই।