Thursday, June 1, 2023
Homeঅর্থনীতিভবন নির্মাণে চুক্তি করেও ফ্ল্যাট বুঝিয়ে না দেওয়ার অভিযোগ

ভবন নির্মাণে চুক্তি করেও ফ্ল্যাট বুঝিয়ে না দেওয়ার অভিযোগ

Published on

সাম্প্রতিক সংবাদ

নতুন আইফোনে অপরিবর্তিত থাকবে ক্যামেরা ও ডিসপ্লে

বার্তাকক্ষ আইফোন ১৫ প্রো ম্যাক্সের উন্মোচনকে ঘিরে ব্যাপক আগ্রহ জেগেছে অ্যাপলপ্রেমীদের মধ্যে। সম্প্রতি স্মার্টফোনবিষয়ক তথ্যদাতা...

সেলফ রিপেয়ার প্রোগ্রাম চালু করছে স্যামসাং

বার্তাকক্ষ সেলফ রিপেয়ারিং প্রোগ্রামের বিষয়ে বর্তমানে অনেকেই অবগত। বিশ্বের সব দেশে সেভাবে এটি চালু না...

সাড়ে ৪৩ কোটি ডলার বিনিয়োগ চায়না টেলিকমের

বার্তাকক্ষ কোয়ান্টাম ইনফরমেশন টেকনোলজি গ্রুপ প্রতিষ্ঠায় ৩০০ কোটি ইউয়ান বা ৪৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার...

এমএসআইয়ের নতুন ল্যাপটপ স্টেলথ ১৬ মার্সিডিজ-এএমজি

বার্তাকক্ষ জার্মানির অন্যতম গাড়ি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান মার্সিডিজের সঙ্গে চুক্তি করেছে তাইওয়ানের প্রযুক্তি কোম্পানি মাইক্রো স্টার...

বার্তাকক্ষ
রাজধানীর বেশ কয়েকটি এলাকায় ভবন নির্মাণের জন্য চুক্তি করে ডেভেলপার কোম্পানি ‘দ্য বেঙ্গল ওয়ান ক্রিয়েশন লিমিটেড (বিওসিএল)’। তবে চুক্তির এক দশক বা কোনোটি তার বেশি সময় হলেও ক্রেতার কাছে ফ্ল্যাট হস্তান্তর করেনি প্রতিষ্ঠানটি। এমনকি জমির মালিককেও ফ্ল্যাটের চুক্তি অনুযায়ী পাওনা বুঝিয়ে না দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। জমির মালিকের অংশের ফ্ল্যাটও বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ আছে বিওসিএল-এর এমডি সোহেল রানার বিরুদ্ধে। দীর্ঘ সময় পার হলেও ক্রেতাকে ব্যর্থতার কোনো ক্ষতিপূরণও দেয়নি প্রতিষ্ঠানটি। এভাবেই চুক্তির পরও ফ্ল্যাট হস্তান্তর না করেই টাকা আত্মসাৎ করে সটকে পড়েন সোহেল রানা। আর এসব নিয়ে কেউ তার বিরুদ্ধে কথা বললেই ঠুকে দেন মামলা। এমনকি জমির মালিকের বিরুদ্ধেও মামলা করেছেন। এমনই ভুয়া মামলা করে ফেঁসে যাচ্ছেন নিজেই।
তার অনিয়ম নিয়ে একের পর এক মামলা হয়েছে আদালতে। অনেক মামলায় তদন্তের দায়িত্বে রয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। তদন্ত শেষে পুলিশের বিশেষায়িত এ প্রতিষ্ঠানটিও সত্যতা পেয়েছে। পিবিআই’র কাছে আরও অভিযোগ জমা পড়েছে। জানা গেছে, এখন অবস্থা দেখে দেশের বাইরে পালানোর পাঁয়তারা করছে বিওসিএল’র এমডি প্রকৌশলী সোহেল রানা। তিনি আবার রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিহ্যাবের সহ-সভাপতির (অর্থ) দায়িত্বে রয়েছেন। তার নানা অনিয়মের তথ্য এসেছে জাগো নিউজের হাতে।
পিবিআই’র তদন্তে উঠে আসে গেরিলা বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী রইস উদ্দিন ওরফে কালু ওরফে রুমি ২০০৭ সালে বাড্ডা এলাকায় তার নিজস্ব ৯ শতক জমির ওপর একটি বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য সোহেল রানার মালিকানাধীন দ্য বেঙ্গল ওয়ান ক্রিয়েশন লিমিটেডের (বিওসিএল) সঙ্গে চুক্তি করে। ২০০৮ সালে নির্মাণকাজ শুরু হয় এবং ২০১১ সালের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ করে তা বুঝিয়ে দেওয়ার কথা। ২০০৯ সাল পর্যন্ত ভবনের কিছু কাজ করার পর বাদী অধিকাংশ ফ্ল্যাট বিক্রি করেন কিন্তু এখন পর্যন্ত ভবনের কাজ শেষ না করার কারণে এবং অধিকাংশ পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকায় বিবাদী গেরিলা বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী রইস উদিন ওরফে কালু ওরফে রুমি আদালত, স্থানীয় থানা, কলাবাগান থানায় মামলা ও জিডি করেন এবং রিহ্যাব অফিসেও অভিযোগ করে মীমাংসার চেষ্টা করেন। ওই ভবনের বিপরীতে বাদী ব্যাংক এশিয়া থেকে ৮ কোটি টাকা লোন নিয়েছেন, যাতে জমির মালিককেই বিবাদী করা হয়েছে। টাকা ফেরত না দেওয়ায় ব্যাংক তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে।
এসব অনিয়ম নিয়ে প্রতিবেদন করা হলে একটি গণমাধ্যমের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক এবং জমির মালিকের বিরুদ্ধে দুই লাখ টাকার চাঁদাবাজির মামলা করেন সোহেল রানা। অথচ জমির দাম আকাশচুম্বি। এ মামলাটি আদালত পর্যন্ত গড়ালে আদালত পিবিআইকে তদন্তের দায়িত্ব দেন। পিবিআই’র তদন্তেও সোহেল রানার করা ভুয়া মামলার কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি।
অন্য একটি মামলায় পিবিআই তদন্ত শেষে এরইমধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোহেল রানা ভবন নির্মাণে ব্যর্থ হয়েছেন। ব্যর্থতার কোনো ক্ষতিপূরণও দেননি। এমনকি ক্রেতাদের কাছ থেকে ফ্ল্যাটের দাম নেওয়ার পরও ফ্ল্যাট বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। সম্প্রতি সোহেল রানার বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা করেন শিল্পী আক্তার নামে অন্য এক ভু্ক্তভোগী। তিনি টাকা দিলেও বুঝে পাননি ফ্ল্যাট, তার করা মামলায়ও আদালতে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে।
গেরিলা বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী রইস উদ্দিন শারীরিকভাবে অসুস্থ হওয়ায় কথা হয় তার আইনজীবীর সঙ্গে। তিনি বলেন, সোহেল রানা প্রকল্প শেষ না করেই ফ্ল্যাট বিক্রি করে চলে যান এবং মূল মালিককে তার পাওনা বুঝিয়ে দিতে পারেননি। এনিয়ে আদালতে মামলা হয় এবং গণমাধ্যমে প্রতিবেদন হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে কাজী রইস উদ্দিন কালু ও সাংবাদিক শ্যামল কান্তি নাগের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা করেন সোহেল রানা। পিবিআই’র তদন্তে যার কোনো সত্যতা উঠে আসেনি
এ প্রসঙ্গে কথা হয় শ্যামল কান্তি নাগের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমিসহ জমির মালিকের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন বিওসিএল এমডি। আমি পিবিআই তদন্তের সময় জানতে পারি। তদন্তে আমার বিরুদ্ধে এমনকি জমির মালিকের বিরুদ্ধে করা মামলায় যেসব অভিযোগ করা হয় তার কোনো প্রমাণ নেই।
তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে যেহেতু ভুয়া মামলা হয়েছে তাই আমি মানহানি মামলা করবো সোহেল রানার বিরুদ্ধে। একইসঙ্গে ফৌজদারি মামলা করা যাবে কি না সে বিষয়েও পরামর্শ নেব।
অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, মিরপুর ডিওএইচএ ‘র ১৩২ নম্বর ভবনটির অনুমোদন আছে ছয়তলার। অথচ বিওসিএল এমডি সোহেল রানা সাততলা তৈরি করেছেন। অবৈধভাবে করা সাততলার ফ্ল্যাটগুলোও বিক্রি করেছেন। এখান থেকে জমির মালিককে কোনো অর্থ না দিয়ে পুরো টাকাই আত্মসাৎ করেন তিনি। একই অভিযোগ রয়েছে মিরপুর সেনপাড়ার একটি নির্মাণাধীন ভবন নিয়ে। জমির অংশীদার আইনুল হকের সঙ্গে ২০১০ সালে ভবন নির্মাণের চুক্তি করে বিওসিএল। তবে ১১ বছর পার হলেও ভবন নির্মাণ শেষ হয়নি আজও। আবার আবাসিক ভবনের অনুমতি নিয়েই দোতলায় গড়েছেন মার্কেট।
পল্লবীর পুরোনো থানার উল্টো পাশে বাড়ি নির্মাণে জমির মালিক জিল্লুর রহমানের সঙ্গে চুক্তি হয় সোহেল রানার। চুক্তির ১১ বছর পার হলেও ভবন নির্মাণ হয়নি এখনও। এরইমধ্যে মারা গেছেন জমির মূল মালিক। এখানেও ভবন নির্মাণের আগেই ফ্ল্যাট দেওয়ার কথা বলে একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এনিয়ে আদালত ও থানা উভয় জায়গায়ই মামলা রয়েছে। শুধু এসব প্রতারণা নয়, তার ও তার প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে থানা এবং আদালত মিলে অন্তত ডজন খানেক মামলা রয়েছে।
রিহ্যাব পরিচালনা পর্ষদের একাধিক সদস্যের সঙ্গে এ নিয়ে কথা হলে কেউই কথা বলতে চাননি। তারা জানান, যে অন্যায় করবে তার বিচার হবে। প্রকল্প শেষ করতে না পারার ব্যর্থতা নিজেকেই নিতে হবে, রিহ্যাব নেবে না।
এ বিষয়ে দ্য বেঙ্গল ওয়ান ক্রিয়েশন লিমিটেডের (বিওসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও রিহ্যাব সহ-সভাপতি (অর্থ) প্রকৌশলী সোহেল রানার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমার প্রকল্প নিয়ে মামলা হয়েছে। পিবিআই’র তদন্তে মামলায় যেটা আসেনি তা নিয়ে আমি অন্য কোনো সংস্থায় যাবো। যেসব অভিযোগ ছিল তার অনেকগুলোর সমাধান শেষ পর্যায়ে।’

spot_img
spot_img

এধরণের সংবাদ আরো পড়ুন

যেসব পণ্যের দাম বাড়তে-কমতে পারে

বার্তাকক্ষ রাজস্ব আয়ের উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আগামী বাজেটে করহার ব্যাপকভাবে বাড়ানো হচ্ছে। বিশেষ করে নিত্যব্যবহার্য...

ডলারের দাম আরও বাড়লো

বার্তাকক্ষ রেমিট্যান্স ও রফতানি আয়ে ডলারের দাম বাড়িয়ে পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। এখন থেকে বৈধ পথে...

অর্থনীতিকে প্রাণবন্ত রাখার সর্বাত্মক চেষ্টা করছি: প্রধানমন্ত্রী

বার্তাকক্ষ করোনা মহামারি ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যেও সরকার দেশের অর্থনীতিকে প্রাণবন্ত...