বার্তাকক্ষ
কোনও ধরনের সংঘর্ষ, ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া ছাড়া সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন। এখন চলছে গণনা। এর আগে বৃহস্পতিবার (২৫ মে) সকাল ৮টায় সিটির ৫৯ ওয়ার্ডের ৪৮০ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। চলে বিকাল ৪টা পর্যন্ত।
এই নির্বাচনে প্রায় সব কেন্দ্রেই ভোটারদের লম্বা ছিল। দুয়েকটি কেন্দ্রে ইভিএমে ধীরগতি ছিল। এতে ভোটারদেরকে বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে। ফলে রৌদে অপেক্ষমাণ ভোটারদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। এদিকে, গোপন কক্ষে ঢুকে প্রভাবিত করায় নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ দুই কেন্দ্র থেকে দুজনকে আটক করা হয়েছে। তারা হলেন- ১০১ নম্বর কেন্দ্রে রিয়াদুল ইসলাম রিয়াজ ও ১০৩ নম্বর কেন্দ্রে আবু তাহের
মহানগরীর ২৬নং ওয়ার্ডের মদিনাতুল উলুম হাফিজিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রে ভোট দিতে আসা রাশিদা আক্তার বলেন, সকাল সাড়ে ৭টায় কেন্দ্রে এসে দাঁড়িয়েছি। ৮টা থেকে ভোট শুরু হলে প্রথমেই সুযোগ পেয়ে ইভিএমে ভোট দিতে পেরে খুশি। এক মিনিটেরও কম সময় লেগেছে ভোট দিতে।
একই কেন্দ্রে হাজেরা বেগম (৬০) বলেন, অনেক সুন্দর ভোট হচ্ছে। কোনও ঝামেলা নেই। ভোট শুরু হওয়ার ১০ মিনিট আগে কেন্দ্রে এসে দাঁড়িয়েছি। কক্ষে প্রবেশ করে অল্প সময়ের মধ্য ভোট দিতে পেরে অনেক খুশি।
আরেকটি কেন্দ্রে বাবুল চন্দ্র ঘোষ (৫০) নামে এক ভোটার জানান, পৌনে ৯টার দিকে লাইনে এসে দাঁড়িয়েছি। ভোটার উপস্থিতি বেশি থাকায় আধা ঘণ্টা দাঁড়িয়েও কক্ষে প্রবেশ করতে পারিনি। ভোট দেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছি। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারের নির্বাচনে ভোটার সকাল থেকেই কেন্দ্রে উপস্থিত হয়েছে। এতে বোঝা যায় মানুষ এ নির্বাচনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দেওয়ার জন্য এসেছে।
নজরুল ইসলাম (৫২) বলেন, সকাল ৮টায় লাইনে দাঁড়ানোর দেড় ঘণ্টা পর কক্ষে প্রবেশ করে ভোট দিয়েছি। দেড় ঘণ্টা কেন লাগলো- এমন প্রশ্নে তিনি বলে, ভোটার উপস্থিতি অনেক। ধারণা করিনি এত ভোটার আসবে। আগে জানলে সকাল ৭টায় এসে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতাম। তিনি ভোট দিতে চার মিনিট সময় লেগেছে বলে জানান।
ভোটের পরিস্থিতি তুলে ধরে নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, কোনও কেন্দ্রে কোনও ভোটার ভোট না দিয়ে ফেরত গেছে এমন ঘটনা নেই। সকালে ভোটার উপস্থিতি কিছুটা কম থাকলেও এখন অনেক বেড়েছে। ভোটাররা উৎসবের মতো স্বতঃস্ফূর্তভাবে কেন্দ্রে এসে সুশৃঙ্খলভাবে ভোট দিয়েছেন। কোথাও আইনশৃঙ্খলা অবনতির অভিযোগ কোনও প্রার্থী দেননি।
জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান বলেন, সুষ্ঠু ও উৎসবমুখরভাবে ভোট হয়েছে। ভোটারের উপস্থিতিতো দেখলেনই। কোনও সহিংসতা নেই। মূল কথা, যার ভোট সে দিয়েছেন। আগেতো বলতো একজনের ভোট আরেকজন দিচ্ছে। কেউ ভোট দিতে পারেননি এমন একটি অভিযোগও পাইনি। তবে ইভিএম নতুন তাই একটু সময় লাগছে।
জিএমপি কমিশনার মোল্লা নজরুল ইসলাম কাজী আজিম উদ্দিন কলেজ কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের বলেন, মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়েছেন। আমরা নির্বাচন কমিশনের বিধি মোতাবেক অনুযায়ী কাজ করেছি। ভালো একটা নির্বাচন হয়েছে। আশা করি, দেশবাসী সন্তুষ্ট হবেন।
নির্বাচনে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা এ এইচ এম কামরুল হাসান জানান, সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণের নিয়ম আছে। তবে ৪টার মধ্যে যেসব ভোটার কেন্দ্রের নির্ধারিত জায়গার মধ্যে ভোট দেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন তাদের ভোট নেওয়া হচ্ছে। তবে ৪টার পর যারা কেন্দ্রে এসেছেন তাদের ভোট নেওয়া হয়নি।
এদিকে, সকাল ৮টা থেকে আগারগাঁও নির্বাচন ভবনের পঞ্চম তলায় কন্ট্রোল রুমে বসে ৪৪৩৫ সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে এই নির্বাচন মনিটরিং করেছে কমিশন। সকাল থেকেই নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অবসরপ্রাপ্ত আহসান হাবীব খান, মো. আলমগীর, রাশেদা সুলতানা, নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান কন্ট্রোল রুমে উপস্থিত থেকে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেন।
