Tuesday, September 26, 2023

মাতৃপূজা

Published on

সাম্প্রতিক সংবাদ

সংখ্যালঘু কমিশন এবার বাস্তবায়ন হোক

বিভিন্ন সময় দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন, অবৈধভাবে ভূমি দখল ও সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনার...

এমারেল্ড অয়েলের সঙ্গে যমুনা এডিবল অয়েলের চুক্তি

প্রতিদিনের ডেস্ক পুঁজিবাজারে খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি এমারেল্ড অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ...

শিল্পীর নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় পূর্ণতা পাচ্ছে দূর্গাপূজার প্রতিমা

নিজস্ব প্রতিবেদক আর কয়েক দিন পর শুরু হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা।...

‘কোনো কিছু না পাওয়ার চেয়ে কিছু পাওয়া ভালো’

প্রতিদিনের ডেস্ক ২০১০ সালে এশিয়ান গেমসে রৌপ্য পদক জিতেছিল বাংলাদেশ। এরপর ২০১৪ সালে আরও একবার...

সুন্দর সাহা
মা দুর্গা জ্যোতির্ময়ী জগন্মাতা। তিনি এক কিন্তু বিভিন্নরূপে প্রকাশমানা। ব্রহ্মাদি দেবগণ তাঁর স্বরূপ জানে না, তাই তিনি ‘অজ্ঞেয়া’। তাঁর অন্ত নেই, তাই তিনি ‘অনন্তা’। দুর্গাদেবীকে কেউ বলে উমা, কেউ বলে ক্যাত্যায়নী, শিবানী, গৌরী, শংকরী। আবার কেউ কেউ বলে ভগবতী ভারতী, বিজয়া, জয়া, গিরিজা, অম্বিকা, ভদ্রকালী, চন্ডী, মহাকালী, মহালক্ষ্মী। মায়ের নামের শেষ নেই। মা বিচিত্ররূপে পূজিত হন। মা বিষ্ণুমায়া। নারায়ণের শক্তি অংশ। তাই দুর্গার অপর নাম নারায়ণী। মা দুর্গা নামের ব্যুৎপত্তি বড় সুন্দর, বড় মাধুরী ও তাৎপর্যপূর্ণ। ‘দ’- দৈত্যনাশ, ‘উ’-বিঘœনাশ, ‘রেফ’-রোগ বিনাশ, ‘গ’-পাপঘœবাচক, এবং ‘আ’ কারটি ভয় ও শত্রুনাশকবাচী। যে মহাদেবীর নাম স্মরণ, মনন ও শ্রবণ করলে সকল পাপ তাপ, দুঃখ, ভয়-ভীতি, রোগ-শোক ও বিপদ বিনষ্ট হয় তিনিই দুর্গা। রাজা সুরথ দুর্গা পুজোর অকাল বোধনের উদ্গাতা। রাজা রাম চন্দ্র দেবী দুর্গার পূজা করেছিলেন শরতকালে। রাবণ ও তার পুত্র মেঘনাথও দুর্গা পূজা করতেন। কিন্তু সে পূজা হতো বাসন্তীরূপে বসন্তকালে। সুতরাং দুর্গা পূজা সুপ্রাচীনকাল থেকেই বাঙালি সমাজে হয়ে আসছে, তবে রাম চন্দ্রের শরতের অকাল বোধনের পূজোই সর্বজন গৃহীত। এই মাতৃপূজাই হিন্দুদের সর্বশ্রেষ্ঠ উৎসব। মা ব্রহ্মময়ী, আদ্যাদেবী ও আনন্দময়ী। তিনি সর্বশক্তির আধার। সর্বজীবে তিনি মাতৃরূপে বিরজিতা। মা দশভূজা দশপ্রহরণধারিণী। দশটি হাতে দশটি অস্ত্র। ডানদিকে ত্রিশূল, খডুগ, চক্র, তীক্ষবান ও শক্তি। বামদিকে শঙখ, ঢাল, কুঠার, ধনু ও ঘন্টা। এই দশটি অস্ত্রের দশটি মহাভাব। তিনি ধনী, দরিদ্র, আর্ত, দুর্গত সকলের মা। তিনি সকলকে সন্তানরূপে পালন করেন। অসুরের হাত হতে সন্তানদের এমনকী দেবতাদের রক্ষার জন্য যুদ্ধ করেন।
পুরাকালে একশ বছর ধরে দেবতা ও অসুরগণের সাথে যুদ্ধ হয়েছিল। পরাজিত দেবগণ মহিষাসুরের কাছে তাদের। পরাজয়ের বিবরণ ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও শিবের কাছে বর্ণনা করেন। দেবগণের তেজে দেবী আবির্ভূত হলেন। দেবীর তেজে ত্রিলোক ব্যাপ্ত। তিনি অগ্নিবর্ণা, অগ্নিলোচনা হয়ে মহাসুর নিধনে রনন্মোাত্ত হলেন। মহাসুর বহু ছলাকলা করে বাঁচতে চেয়েছিল। শেষে মহিষরূপ ধারণ করেছিল। মহাসুর দেবীর চরণে পিষ্ট হয়ে দেবীর তেজে পুরোপুরি বের হতে পারলো না। মহাদেবী তখন বিশাল খড়গ দিযে মহাদৈত্যের শিরোচ্ছেদ করলেন। জগজ্জননীর এই মহিষমর্দিনী রূপটিই শারদীয় উৎসবে পুজিত হয়। মা ত্রিনয়না, নিরুপমা ও অনুপমা যে রূপে মাতৃপূজা হয় তা বর্ণনা করা যায় এই রূপে ‘ত্রিনয়নী দুর্গা মা তোর, রূপের সীমা পাইনা খুঁজে। চন্দ্র তপন লুটায় মা তোর, চরণতলে- দশভুজে।’
মায়ের মৃন্ময়ী মূর্তি নির্মাণ করে আমরা মাতৃপূজা করি। শ্রীমূর্তি প্রতীক হতে পারে, কিন্তু ভক্তের অর্চনার ফলে তিনিই হয়ে যান চিবিগ্রহ, মৃন্ময়ী হয় চিন্ময়ী। ভক্ত ভক্তি চন্দনমাখা পুষ্প মায়ের পায়ে সমর্পণ করে। এই পরম শ্রদ্ধা ভক্তিভরে বিগ্রহের পূজা করতে করতে জীবনটাই পূজাময় হয়ে ওঠে। শেষে জীবনের সকল কর্মই তাঁর পূজায় পরিণত হয়। যথাযথভাবে পূজা অনুষ্ঠিত হলে বিগ্রহে দেবতা মূর্তিময়ী হয়ে ভক্তের সাথে ভাব বিনিময় করেন এতে কোনো সন্দেহ নেই। মা অসুর দমনে ভীষণা ও ভয়ঙ্করী; রণে ঢলে রণময়ী হয়ে; আবার ভক্তের ডাকে অপার করুণায় করুণাময়ী হয়ে ঘরের বেড়া বাঁধেন তনয়া রূপে। তাইতাে মা মহামাতৃকা, কৃপাময়ী, করুণা সাগরা। সন্তান যেমন মাকে ছাড়া থাকতে পারে না। তেমনি আমাদের মা সন্তানের কল্যাণ কামনায়, সন্তানকে সাক্ষাতে এসে দেখেন। আকাশের নীল, সাদা মেঘের ভেলায়, কাশের সাদায়, শিউলীর সুঘ্রাণে যখন শরত তার আগমনী জানায়, তখনি জগন্মাতা মর্ত্যে আগমন করে। আকুল প্রাণে ব্যাকুল হয়ে অপেক্ষা করে বাংলার মানুষ সুশোভনা মায়ের শ্রীমুখ দর্শনের নিমিত্তে। মা আসেন দশদিক আলো করে, ধরণী হয়ে উঠে প্রাণময়ী।
বাংলার আকাশ-বাতাস মায়ের আগমনী বার্তায় মুখরিত। শুধু বাংলায় নয় পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে। অনুষ্ঠিত হচ্ছে জগজ্জননীর এ মহাপূজা। ক্রমে ক্রমেই বেড়ে চলেছে দুর্গাপূজার আবেদন ও মাহাত্ম্য। দুঃখ-দৈন্য, নৈরাশ্য, প্রপীড়িত সন্তানেরা মাতৃচিন্তায় ডুবে থাকে। মঙ্গলময়ী সকলকে যেন মঙ্গলের পথ দেখান। জাগিয়ে দেন শুভ ও কল্যাণ বুদ্ধি।

spot_img
spot_img

এধরণের সংবাদ আরো পড়ুন

নড়াইল পৌরসভায় সাড়ে ৩ কোটি টাকার ‘দুর্নীতি’

নড়াইল সংবাদদাতা : নড়াইল পৌরসভার মেয়র, সচিব, প্রধান সহকারীসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে সাড়ে তিন কোটি টাকা...

মোল্লাহাটে ইদুর মারা ঔষধ খেয়ে শিশু নিহত

বাগেরহাট সংবাদদাতা : বাগেরহাটের মোল্লাহাটে বাগানে ফেলে রাখা ইদুর মারার বিষ মিশ্রিত চালভাজা খেয়ে আসমা...

যশোর এম এম কলেজে অর্থনীতি বিভাগের সেমিনার

নিজস্ব প্রতিবেদক : যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজের অর্থনীতি বিভাগে বৃহস্পতিবার সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেমিনারের...