Saturday, September 23, 2023
Homeআজকের পত্রিকামা গো আনন্দময়ী

মা গো আনন্দময়ী

Published on

সাম্প্রতিক সংবাদ

উদ্যোগ নেয়া হোক কার্যকরী

বাংলাদেশ এখনো রোহিঙ্গা সংকটের একটি স্থায়ী সমাধানের আশা রাখছে। রোহিঙ্গাদের দীর্ঘদিন বহন করার মতো...

নির্বাচন বাধাগ্রস্তকারী বাংলাদেশিদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

প্রতিদিনের ডেস্ক ধারণা করা হচ্ছিল, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করবে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু...

ধানক্ষেতে পোকার আক্রমণ: যা বিষেও মরছে না, দিশেহারা কৃষক

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি আমন ধান পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কৃষকরা। তবে এবার...

চৌগাছায় ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় দ্বিতল ভবন, দূর্ঘটনার আশংকা

চৌগাছা সংবাদদাতা যশোরের চৌগাছা বাজারে জরাজীর্ণ একটি দ্বিতল ভবন চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। পৌর কর্তৃপক্ষ...

শ্রী তিলককান্তি সেন

দুর্গাপূজা তথা দুর্গোৎসবের আবেদন। বাঙালি হিন্দুর সমাজজীবনে চিরকালীন। তা সে যেখানেই থাকুক না কেন, দেশে, বিদেশে, পরবাসে, দুর্গাপূজার সময় এলেই যেন মনের ভেতরে ঢাকটা আপনা থেকেই বাজতে শুরু করে। আর তারই তালে তালে প্রাণ-মণ নেচে ওঠে আনন্দে। এ আনন্দ সব দুঃখ-যন্ত্রণা দূরে যাবার আনন্দ। প্রিয়জন সান্নিধ্য লাভের আনন্দ। তাই তো এ দিনটির জন্য আমাদের কতই না অপেক্ষা, কতই না ব্যাকুলতা। আমরা যারা ঘর ছাড়া পরবাসী, মহাসিন্ধুর ওপার হতে ভেসে আসা সেই ঢাকের র্ম্ছূনাতে আমরাও উন্মনা হয়ে যাই। পরবাসী হয়ে যারা ঘর থেকে অনেক দূরে রয়েছে, তাদের কাছে দুর্গাপূজার আবেদন একটু অন্যরকম। প্রবাসের পুজোর আয়োজনে দেশের সেই ঝকঝকে বর্ণচ্ছটা হয়তো নেই, তবে সে রকম সমারোহ না থাকলেও প্রস্তুতি আর উদযাপনের ব্যস্ততাতে ঘাটতি তেমন কিছুই নেই। উৎসবের উদ্যোক্তাদের দেখা যায় প্রাণ-মণ ঢেলে দিতে যাতে করে এও আমাদের বহুচেনা দুর্গোৎসবই হয়ে উঠে সকল সীমাবদ্ধতা ছাপিয়ে। কালে কালে দুর্গাপূজা হয়ে উঠেছে দুর্গোৎসব। পূজা এবং উৎসব দুয়ের এ এক চমৎকার সমন্বয়। বিশ্ববরেণ্য প্রখ্যাত দার্শনিক এবং বৈষ্ণবকুল মুকুটমণি, পরাবিদ্যাচার্য, ভারত শিরোমণি মহামহোপাধ্যায় শ্রীল শ্রীমৎ ড. মহানামব্রত ব্রহ্মচারী মহারাজ তাই দুর্গাপূজাকে বলেছেন এক মহাপূজা (চ-ীতেও শরৎকালীন এ পূজাকে বলা হয়েছে মহাপূজা) যা কিনা বাস্তবিক অর্থেই এক মহাআনন্দ। আমরা যারা দেশে বড় হয়ে উঠেছি, তারা এই মহাপূজা আমাদের স্মৃতিতে -তখানি জড়িয়ে আছে। মহোউৎসাহে এই মহাউৎসবের কালে স্বজন-বন্ধু সকলে মিলে এ এক মহামিলন মেলা।
“আহা কি আনন্দ”। আর সেই আনন্দের বার্তা নিয়েই আনন্দময়ীর আগমন। ভক্ত প্রাণ খুশিতে গেয়ে উঠে– “মাগো। আনন্দময়ী, নিরানন্দ করো না।” আনন্দ! বিশ্বজুড়েই এর উপকরণ ছড়ানো। খুঁজে নিতে কিংবা চিনে নিতে জানতে হয়। সে জন্যে চাই শক্তি, যা কি আমাদেরকে নিরানন্দের ঘন আঁধার থেকে আনন্দের আলোকিত অলিন্দে পৌছে দেবে। মানুষের জীবনে নিরানন্দের উপস্থিতি তো বাস্তব। দুঃখদারিদ্র্য-দৈণ-হতাশার পশরা সাজিয়ে নিরানন্দ যে সংসারে জাঁকিয়ে বসে আছে, সে তো নিতান্তই অতি চেনা এক রূঢ বাস্তব। ব্যক্তি জীবন থেকে শুরু করে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র হয়ে সমস্ত বিশ্বজগৎ জুড়েই নানা রকমের দ্বন্দ্ব-সংঘাতের প্রকট উপস্থিতি বিদ্যমান। সে কারণে স্বস্তিস্বাচ্ছন্দ্য, নিরাপত্তা-আনন্দিত হবার এসব উপকরণ, যা কি না অতি আবশ্যিক, আজ সহজলভ্য নয়। নিরানন্দের আঁধার কেটে বেরিয়ে যেতে চাই বলেই আমরা তাই বারে বারেই ফিরে আসি আনন্দময়ীর কাছে। দুঃখকে ভয় না পেয়ে জয় করার জন্যই শক্তি পূজার এ আয়োজন। ভক্ত-সাধকের কাছে এ দুঃখের আঘাত তেমন করে লাগে না। তার কণ্ঠে তাই “বারে বারে যত দুঃখ দিয়েছ দিতেছ তারা। সে কেবলি দয়া তব, জেনেছি গো দুঃখ হরা কিন্তু আমাদের মতো সংসারী মানুষের কাছে এই আয়োজনের অন্য একটা দিকও রয়েছে। এতো আয়োজন, এতো উদ্যোগ, চারদিকে যেন সাজ রব। যদিও “মাতৃরূপেণ সংস্থিতা” দেবীর আরাধনাতেই এই আয়োজন, প্রকৃত অর্থে যুদ্ধে জয়লাভের জন্য শক্তিসংগ্রহের মানসেই আমাদের এই সম্মিলিত উদ্যোগ। হ্যাঁ, যুদ্ধই তো করছি আমরা। অহরহ লড়াই বিভিন্নভাবে। দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে, বঞ্চনার। বিরুদ্ধে-সর্বোপরি সব রকমের হতাশা স্বাস্থ্যহীনতা আর অনিশ্চয়তার বিরুদ্ধে। মনোজগতে এরা প্রত্যেকেই এক একটি অসুর। প্রত্যেকেই প্রচুর ধ্বংস ক্ষমতার অধিকারী। আমাদেরকে দুর্বল পেলেই আক্রমণে উদ্যত হয়। যদি যথাসময়ে এদেরকে দমন করতে না পারা যায়, তাহলেই এরা সব মিলে মহাপরাক্রমশালী এক মহিষাসুরে পরিণত হয়। সেই নির্মম মহিষাসুর প্রচ- হিংসা আর উন্মত্ততায় আমাদের পরম কাক্সিক্ষত আনন্দকে ধ্বংস করে আমাদেরকে গভীর নিরানন্দের দিকে ঠেলে দেয়। অতএব আমাদের সজাগ থাকা জরুরি এদের অস্তিত্ব সম্পর্কে। জেনেই হোক বা না জেনেই হোক, এদের বিরুদ্ধে আমাদের যুদ্ধ চলছেই। শান্তির বাগানে অশান্তির আগুন লাগাতে এরা সিদ্ধহস্ত । অতএব এদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে হেরে যাওয়া মানেই হলো ব্যর্থ প্রাণের আবর্জনার স্তুপের নিচে হারিয়ে যাওয়া। আনন্দ থেকে নিরানন্দে নির্বাসন। চিহ্নিত এই আসুরিক শক্তি যা কি না । আমাদেরকে ধ্বংসের পথে, অকল্যাণে পথে নিয়ে যায়, তাকে মোকাবিলা করার জন্যই আমরা সমবেত হয়েছি দৈবী শক্তির আরাধনায়। আকুল কণ্ঠে তাই । ভক্ত-প্রাণ দেবীর চরণে প্রার্থনা জানায় “দেবী প্রপন্না্িত্তহরে প্রসীদ, প্রসীদ মাতর্জগতেহখিলস্য।” হে দেবী, তুমি এই প্রসন্ন অর্থাৎ সম্পূর্ণ শরণাগত ও আর্ত বা দুঃখী নাশিনী, তুমি প্রসন্না হও, হে অখিল জগজননী, প্রসন্না হও। আসুন, এ সময়ে গেয়ে উঠি “আনন্দময়ী মা গো আমার, আনন্দে মন ভরিয়ে দে। জ্ঞানের আলো দিয়ে মা গো, অজ্ঞানতা সরিয়ে দে।”

spot_img
spot_img

এধরণের সংবাদ আরো পড়ুন

নড়াইল পৌরসভায় সাড়ে ৩ কোটি টাকার ‘দুর্নীতি’

নড়াইল সংবাদদাতা : নড়াইল পৌরসভার মেয়র, সচিব, প্রধান সহকারীসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে সাড়ে তিন কোটি টাকা...

মোল্লাহাটে ইদুর মারা ঔষধ খেয়ে শিশু নিহত

বাগেরহাট সংবাদদাতা : বাগেরহাটের মোল্লাহাটে বাগানে ফেলে রাখা ইদুর মারার বিষ মিশ্রিত চালভাজা খেয়ে আসমা...

যশোর এম এম কলেজে অর্থনীতি বিভাগের সেমিনার

নিজস্ব প্রতিবেদক : যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজের অর্থনীতি বিভাগে বৃহস্পতিবার সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেমিনারের...