বৈশ্বিক নানা সংকটে বাংলাদেশসহ বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই মূল্যস্ফীতি দেখা দেয়। অধিকাংশ দেশ মূল্যস্ফীতিতে লাগাম টানতে সফল হলেও আমরা এখনো পারিনি। আর এটার প্রভাব পড়ছে সাধারণ মানুষের ওপর। জানা গেছে, দেশে গত আগস্টে খাদ্য খাতে রেকর্ড পরিমাণ ১২ দশমিক ৫৪ শতাংশ মূল্যস্ফীতি হয়েছে। মুরগি ও ডিমের বর্ধিত দামের কারণে তা হয়েছে বলে দাবি করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। গত মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করার সময় তিনি এ দাবি করেন। অর্থনীতিবিদ ও খাত বিশ্লেষকরা বলছেন, বাজারে মূল্যস্ফীতি দু-একটি পণ্যের জন্য এত বেশি হতে পারে না। এর পেছনে অন্যান্য পণ্যেরও ভূমিকা রয়েছে। দেখার দায়িত্ব সরকারের। মূল্যস্ফীতি কমানোর ব্যবস্থা সরকারকেই করতে হবে। মূল্যস্ফীতি বলতে এমন একটি অবস্থা বোঝায় যে, একই পরিমাণ দ্রব্য বা সেবা ক্রয় করতে আগের তুলনায় বেশি পরিমাণ অর্থ ব্যয় করতে হয়। অর্থাৎ বলা যায় যে, মূল্যস্ফীতি হলে অর্থের মূল্য কমে যায়। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য মতে, চলতি বছরের মার্চ মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ৯০ দশমিক ৯ শতাংশ আর খাদ্যবহির্ভূত পণ্যে মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৭২ শতাংশ। সে সময় বাজারে মুরগি (ব্রয়লার) প্রতি কেজির দাম ২৬০-২৭০ টাকা ছিল। এক ডজন ডিমের দাম ছিল ১৩৫-১৪০ টাকা। আবার গত আগস্টে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১২ দশমিক ৫৪ শতাংশ এবং খাদ্যবহির্ভূত পণ্যে মূল্যস্ফীতি ৭ দশমিক ৯৫ শতাংশ। এই সময় বাজারে মুরগির দাম ছিল ১৭০-১৮০ টাকা আর প্রতি ডজন ডিমের দাম ছিল ১৫৫-১৬০ টাকা। মূল্যস্ফীতি না কমালে দেশে বর্তমান পরিস্থিতি কোনোভাবেই মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। দ্রব্যমূল্য, পরিবহন ব্যয়, বিদ্যুৎ-গ্যাসের খরচ- সব মিলিয়ে জীবন চালাতে হিমশিম খাচ্ছে সীমিত আয়ের সাধারণ মানুষ। গ্রাম ও শহর মিলিয়ে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১২ দশমিক ৫৪ শতাংশ। আলাদাভাবে দেখলে গ্রামাঞ্চলের খাদ্য মূল্যস্ফীতি শহরের থেকে বেশি। পরিকল্পনামন্ত্রী বলছেন, মূল্যস্ফীতি বেড়েছে, এটাকে অ্যাড্রেস করার চেষ্টা করা হচ্ছে। শিগগিরই এটা কমাবে। সরকার এরই মধ্যে নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছে। শিগগিরই মূল্যস্ফীতিকে সরকার নিয়ন্ত্রণ করে ফেলতে পারবে, এ কথা মনে করা ঠিক হবে না। বৈশ্বিক অর্থনীতির চাপ আছে, এছাড়া নিকট অতীতে আমরা যে ভুলগুলো করেছি, পরিকল্পনাগত ভুল এবং আমরা অনেক বেশি বাস্তবমুখী চিন্তা না করে অনেকটা উচ্ছ¡াসে ভেসে গিয়ে তার চাপও আমাদের এখন নিতে হচ্ছে। সব মিলিয়ে সামষ্টিক অর্থনীতি চাপের মধ্যেই থাকবে অনেক দিন। এমতাবস্থায় আমাদের করণীয় কী? আর্থিক ব্যবস্থা, রাজস্ব-সংক্রান্ত ব্যবস্থা, প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি সর্বোপরি বাজার ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। উৎপাদন ও সরবরাহ ঠিক থাকলেও কারসাজি করে বাড়ানো হয়েছে ডাল, আলু ও ডিমের দাম। ফলে নিম্ন আয়ের মানুষের খাবারের তালিকায় এখন ডাল, আলুভর্তা ও ডিমের জোগান দেয়াও কঠিন হয়ে পড়েছে। এমন অবস্থায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যেমন বাজার মনিটরিং জোরদার করা প্রয়োজন।

সাম্প্রতিক সংবাদ
সম্পাদকীয়
উদ্যোগ নেয়া হোক কার্যকরী
বাংলাদেশ এখনো রোহিঙ্গা সংকটের একটি স্থায়ী সমাধানের আশা রাখছে। রোহিঙ্গাদের দীর্ঘদিন বহন করার মতো...
জাতীয়
নির্বাচন বাধাগ্রস্তকারী বাংলাদেশিদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র
প্রতিদিনের ডেস্ক
ধারণা করা হচ্ছিল, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করবে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু...
কুষ্টিয়া
ধানক্ষেতে পোকার আক্রমণ: যা বিষেও মরছে না, দিশেহারা কৃষক
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
আমন ধান পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কৃষকরা। তবে এবার...
যশোর
চৌগাছায় ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় দ্বিতল ভবন, দূর্ঘটনার আশংকা
চৌগাছা সংবাদদাতা
যশোরের চৌগাছা বাজারে জরাজীর্ণ একটি দ্বিতল ভবন চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। পৌর কর্তৃপক্ষ...
এধরণের সংবাদ আরো পড়ুন
সম্পাদকীয়
উদ্যোগ নেয়া হোক কার্যকরী
বাংলাদেশ এখনো রোহিঙ্গা সংকটের একটি স্থায়ী সমাধানের আশা রাখছে। রোহিঙ্গাদের দীর্ঘদিন বহন করার মতো...
সম্পাদকীয়
দুর্গাপূজা: রুখতে হবে এ অস্থিতিশীলতা
শারদীয় দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে প্রতি বছর একটি গোষ্ঠী অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির পাঁয়তারা করে। ধর্মীয়...
সম্পাদকীয়
ডিম আমদানিতে কি সুফল মিলবে?
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তিনটি পণ্যের দাম বেঁধে দেয়। এসব পণ্য হলো ডিম, আলু ও দেশি...