বার্তাকক্ষ
২০০৫ সালের সিরিজ বোমা হামলায় দায়ের করা মামলার যাবজ্জীবন সাজা পাওয়া পলাতক আসামি তুহিন রেজাকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। তুহিন ১৮ বছর ধরে পলাতক ছিল। সে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন জামায়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি) এর সদস্য বলে র্যাব দাবি করেছে। পরিচয় গোপন করে সে একটি টেলিভিশন চ্যানেলেও কাজ করেছে।
বৃহস্পতিবার (২২ জুন) রাজধানীর তেজগাঁও থানাধীন তেজগাঁও রেলগেট এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুক্রবার (২৩ জুন) রাজধানীর কাওরান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট দেশের ৬৩টি জেলায় একসঙ্গে বোমা হামলা চালায় জেএমবি। এর মধ্যে ঝিনাইদহ শহরে ডিসি অফিস, জেলা জজ আদালত চত্বর, বাস টার্মিনাল ও কলেজ মোড়সহ বেশ কয়েকটি স্থানে একযোগে বোমা হামলা ও নিষিদ্ধ লিফলেট ছড়ানোর কার্যক্রম চালায় জেএমবি। একযোগে হামলার মাধ্যমে বাংলাদেশে নিজেদের সংঘবদ্ধ উপস্থিতির ঘোষণা করাই ছিল তাদের মূল লক্ষ্য।র্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, গ্রেফতারকৃত আসামি ২০০৪ সালে জেএমবি’র ঝিনাইদহ সদর শাখায় সদস্য হিসেবে যোগদান করে। যোগদানের পর থেকে সে ওই শাখার লিফলেট তৈরি, লিখিত প্রচার-প্রচারণার সম্পাদনা, গোপন ও নাশকতমূলক খবরাখবর আদান-প্রদান, বিভিন্ন ভিডিও এডিটিং এর মাধ্যমে তৈরিকৃত বিভ্রান্তিমূলক প্রামাণ্যচিত্র দেখিয়ে তরুণদের পথভ্রষ্ট করত। ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট হামলাকে কেন্দ্র করে তারা হামলার নীলনকশা সাজায়। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৭ আগস্ট ভোর থেকে অন্যান্য হামলাকারীদের সঙ্গে আসামি আদালত চত্বরের আশেপাশে অবস্থান নেয় এবং হামলার সময় সক্রিয় ভূমিকা পালন করে। এলোপাতাড়ি বোমা হামলার পর তারা বিভিন্ন দিকে দৌড়ে পালিয়ে যায়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ১৭ আগস্ট বোমা হামলার পর ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে এসে ঝিনাইদহ সদরে জঙ্গি ক্যাম্পে কিছুদিন গা ঢাকা দেয় গ্রেফতারকৃত তুহিন। এরপর তাদের বিরুদ্ধে মামলা হলে এবং গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলে কিছুদিনের মধ্যে সে পালিয়ে ঢাকায় চলে আসে। প্রথমে যাত্রাবাড়ী পরবর্তীতে খিলগাঁও, উত্তরা, মহাখালীসহ বিভিন্ন জায়গায় স্থান পরিবর্তন করে বসবাস করতে থাকে। ২০২১ সাল থেকে সে তেজগাঁও এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতে থাকে এবং সেখান থেকেই গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়।পলাতক অবস্থায় গ্রেফতারকৃত তুহিন একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে ভিডিও এডিটিংসহ বিভিন্ন সফট্ওয়্যার ভিত্তিক কাজ করে আসছিলো বলে জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
