Saturday, December 9, 2023
Homeসম্পাদকীয়শারদীয় দুর্গোৎসব : শুভ চেতনা সঞ্চারিত হোক সবার মনে

শারদীয় দুর্গোৎসব : শুভ চেতনা সঞ্চারিত হোক সবার মনে

Published on

সাম্প্রতিক সংবাদ

নাটোরে জয়িতাদের সংবর্ধনা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

জামিল হায়দার জনি, নাটোর ‘শেখ হাসিনার বারতা, নারী-পুরুষ সমতা’ এইপ্রতিবাদ্যকে সামনে রেখে নাটোরের নলডাঙ্গায় আন্তর্জাতিক...

‘এখানেই শেষ নয়’, মাইলফলক ম্যাচ জিতে রোনালদো

প্রতিদিনের ডেস্ক ক্যারিয়ারের ১২০০তম ম্যাচ খেলে ফেলেছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। এমন মাইলফলক ছোঁয়া ম্যাচে তার...

‘উন্নতি নয়, জিততে এসেছিলাম’, হারের পর শান্ত

প্রতিদিনের ডেস্ক জয় দিয়ে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ শুরু করলেও, বাংলাদেশের শেষটা হয়েছে হার দিয়ে।...

তীরে এসে তরি ডোবাল বাংলাদেশ

প্রতিদিনের ডেস্ক ৬৯ রানেই ৬ষ্ঠ উইকেটের পতন। মিরপুরের গ্যালারিতে হাজারখানেক দর্শকও তখন রীতিমত গর্জন-হুঙ্কারে...

বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান শারদীয় দুর্গোৎসব শুরু হয়েছে। দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে গত শুক্রবার ষষ্ঠীপূজার মাধ্যমে। পূজা শেষ হবে মঙ্গলবার বিজয়া দশমীতে। এবার সারাদেশে ৩২ হাজার ৪০৭টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা হবে। এ হিসাবে গত বছরের চেয়ে এ বছর ২৪০টি বেশি পূজামণ্ডপ হচ্ছে সারাদেশে। দুর্গাপূজা শুধু হিন্দু সম্প্রদায়ের উৎসবই নয়, এটি এখন সার্বজনীন উৎসব। অশুভ শক্তির বিনাশ এবং সত্য ও সুন্দরের আরাধনা শারদীয় দুর্গোৎসবের প্রধান বৈশিষ্ট্য। অশুভ অসুর শক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শুভ দেবশক্তির চূড়ান্ত বিজয়ের দিন হিসেবেই দুর্গাপূজার দশমীর দিনটিকে বলা হয় ‘বিজয়া দশমী’। অসুরকুলের দম্ভ-দৌরাত্ম্য থেকে দেবকুলকে রক্ষায় মাতৃরূপী ও শক্তিরূপী দেবী দুর্গার আগমন। অসুরদের দলপতি মহিষাসুরকে বধ করে দুর্গতিনাশিনী দেবী দুর্গা দেবকুলকে রক্ষা করেন। অন্যায় ও অশুভকে পরাস্ত করার মাধ্যমে ন্যায় ও শুভবোধের প্রতিষ্ঠা ঘটে। দেবী দুর্গা সত্য, শুভ ও ন্যায়ের পক্ষের সংগ্রামে মর্ত্যরে মানুষকেও সাহসী করে তোলেন। দূর করে দেন যত গøানি, হিংসা-দ্বেষ, মনের দৈন্য ও কলুষ। যাবতীয় মহৎ গুণাবলির প্রতি দেবী দুর্গা মানুষকে আকৃষ্ট করেন। এটি অনুপম সম্প্রীতি চেতনারই বহিঃপ্রকাশ। বর্তমানে এ দেশে দুর্গোৎসব কেবল একটি ধর্মীয় সম্প্রদায়ের আচার-অনুষ্ঠান ও আনন্দ-উৎসব উদযাপনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। দেশের মিডিয়াগুলোও এটিকে সার্বজনীন উৎসব গণ্য করে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সাজায়। এটি অনুপম সম্প্রীতি চেতনারই বহিঃপ্রকাশ। কিন্তু এই সম্প্রীতিও মাঝে মাঝেই অসুরের অবাঞ্ছিত কালো ছায়ায় ঢাকা পড়ে। দেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দু সম্প্রদায়ের কিছু মন্দিরে হামলা-ভাঙচুর শুভবোধসম্পন্ন সব মানুষকেই লজ্জিত, আহত এবং শঙ্কিত করে। তারই প্রেক্ষাপটে সরকার পূজা উপলক্ষে নিরাপত্তার ব্যবস্থা জোরদার করেছে। এর মধ্যেও দেশের কয়েকটি স্থানে মন্দিরে হামলা, মণ্ডপ ভাঙচুরের বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। এগুলো দুঃখজনক। দোষীদের আইনের আওতায় আনতে না পারা উদ্বেগজনক। ২০২১ সালে হিন্দুদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার সময় যেভাবে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে, তাতে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। হামলার শিকার ভুক্তভোগীরা পুনরায় হামলার ভয়ে এবং নিরাপত্তাহীনতার কারণে মামলা করতে ভয় পান। হামলাকারীদের মূল লক্ষ্য, দেশকে অস্থিতিশীল করে তোলা। দেশের সাধারণ মানুষের জীবনে উন্নতি ঘটেছে; সামাজিক ও ধর্মীয় সম্প্রীতি বৃদ্ধি পেয়েছে। এসবকেই ধ্বংস করতে চায় মৌলবাদী জনগোষ্ঠী। আসলে মুসলিমদের সঙ্গে হিন্দু ও বৌদ্ধ জনগোষ্ঠীর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করে ফায়দা লুটছে কেউ কেউ। এ ধরনের সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্পকে প্রতিহত না করার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের শৈথিল্য এবং বিচারের দীর্ঘসূত্রতার দায় রয়েছে। হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে অবিলম্বে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা জরুরি। হাজার বছরের সাম্প্রদায়িক ঐতিহ্যের বাংলায় ধর্মীয় উন্মাদনা সৃষ্টি করে ফায়দা হাসিলের অপচেষ্টা নতুন কিছু নয়। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অটুট রাখতে সুযোগসন্ধানীদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে সবাইকে। সবাই মিলে এই উৎসব পালনের মধ্য দিয়েই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এবং পারস্পরিক সৌহার্দের বন্ধন আরো দৃঢ় করতে হবে- সেই প্রত্যাশায় রইলাম। সবাইকে শারদীয় দুর্গোৎসবের শুভেচ্ছা।

spot_img
spot_img

এধরণের সংবাদ আরো পড়ুন

গ্যাসের পরিকল্পিত ব্যবহার জরুরী

প্রতি বছর শীত এলেই গ্যাসের সংকট মারাত্মক আকার ধারণ করে। এবারো ব্যতিক্রম নয়। এতে...

নির্বাচন নির্বিঘ্নে করতে অস্ত্র উদ্ধার জরুরি

আগামী শনিবার থেকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নির্বিঘ্ন করতে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও চিহ্নিত...

শিশুশ্রম বন্ধে সম্মিলিত প্রয়াস জরুরি

শিশুশ্রম রোধে সরকারি-বেসরকারি কোনো উদ্যোগ যেন কাজে আসছে না। দিন দিন যেন শিশু শ্রমিকের...