মাদারীপুর/খুলনা সংবাদদাতা
মাদারীপুর জেলার শিবচরের কুতুবপুর এলাকায় এক্সপ্রেসওয়ে থেকে ঢাকাগামী ইমাদ পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে ১৮ জনের প্রাণহানি হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে কমপক্ষে আরও ৩০ জন। রোববার (১৯ মার্চ) সকালে দূুর্ঘটনাটি ঘটে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রোববার সকালে খুলনা থেকে ছেড়ে আসা ইমাদ পরিবহনের একটি বাস পদ্মাসেতুর আগে এক্সপ্রেসওয়ের শিবচরের কুতুবপুর এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নিচে পড়ে যায়। এসময় দুমড়ে-মুচড়ে যায় বাসটি। সকাল সোয়া ৮টা পর্যন্ত বাসের মধ্যে থেকে ১৪ জনের মতো যাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়া হাসপাতালে নেয়ার পথে আরও ২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এদিকে শিবচরের একটি হাসপাতালে আহত আরেকজনের মৃত্যু হয়েছে। ওদিকে মাদারীপুরের ভয়াবহ দুর্ঘটনায় আহত ছয়জনকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসা হয়েছে। এর মধ্যে একজন মারা গেছেন। এ নিয়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ জনে। শিবচর হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু নাঈম মো. মোফাজ্জেল হক জানান, নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৮ জন হয়েছে। হতাহত বহু রয়েছে। ভোর ৫ টায় ইমাদ পরিবহনের গাড়িটি ঢাকার উদ্দেশ্যে খুলনা ত্যাগ করে। এসময় খুলনা রয়েল মোড় ও সোনাডাঙ্গা কাউন্টার থেকে মোট ৯ জন যাত্রী ছিল বলে কাউন্টারের দায়িত্বশীল এক কর্মী জানিয়েছেন। এদিকে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার কুতুবপুর এলাকায় ঢাকাগামী ইমাদ পরিবহনের বাস দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত ১২ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ১৭ জনের মরদেহ শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রাখা হয়েছে। শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইমারজেন্সি মেডিকেল অফিসার নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘যারা আহত হয়ে আমাদের এখানে এসেছেন তাদের সবার অবস্থা অনেক গুরুতর। তাই এখানে তাদের ভর্তি রাখা সম্ভব হয়নি। তাদেরকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে।’ এখানে যে ১৭টি মরদেহ আছে সেগুলোর হস্তান্তর প্রক্রিয়া চলছে,’ তিনি যোগ করেন। নিহতদের মধ্যে একজন সুইটি (২০)। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। তার বাবার নাম মাসুদ মিয়া। সুইটির বাড়ি গোপালগঞ্জ সদরের পাঁচুরিয়া গ্রামে। তাৎক্ষণিকভাবে নিহত অন্যদের পরিচয় জানা যায়নি। অন্যদিকে গুরুতর আহত ৯ জনকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেয়া হলে এর মধ্যে দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। বাকি সাতজন চিকিৎসাধীন। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ঢামেকে আসার পর মারা যাওয়া দুজনের নাম-পরিচয় এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। চিকিৎসাধীন সাতজন হলেন- ফয়সাল আহমেদ (৩৬), আব্দুল হামিম (৫০), বদরুদ্দোজা (৩০), পঙ্কজ কান্তিজ ঘোষ (৪০), ঝুমা (৩৪), বুলবুল (৫০), এনামুল (৪০)।
মাদারীপুরের শিবচর কুতুবপুর এলাকায় দুর্ঘটনা কবলিত বাসে খুলনার মোট ৯ জন যাত্রী ছিল। ৯ জন খুলনা থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। এদের মধ্যে ৬ জনের সাথে যোগাযোগ করা গেলেও বাকী ৩ জনের সাথে যোগাযোগ করা যায়নি বলে ইমাদ পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার জানিয়েছেন। রয়্যাল মোড়ের কাউন্টার মাস্টার শরীফ আল মামুন বলেন, ভোর ৪ টা ৫৫ মিনিটের দিকে ৪ জন যাত্রী নিয়ে ইমাদ পরিবহনের ২০৩ কোচ সোনাডাঙ্গায় যায়। সেখান থেকে আরও ৫ জন যাত্রী নিয়ে ৫ টার দিকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। পরবর্তীতে সকাল ৭ টার দিকে মাদারীপুর শিবচরের কুতুবপুর এলাকায় দুর্ঘটনার শিকার হয় পরিবহনটি। সকালে তিনি ৬ জনের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করেছেন, বাকী ৩ জনের সাথে যোগাযোগ করতে পারেনি।