জাতীয় পরিচয়পত্র বা এনআইডি কার্ড দৈনন্দিন জীবনে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। কিন্তু অনেক কার্ডে তথ্য ভুল থাকায় সাধারণ মানুষকে প্রতিনিয়ত ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। পরিচয়পত্রে ভুল থাকায় চাকরি হচ্ছে না, কেউ বেতন বা পেনশন পাচ্ছেন না, কেউ ব্যাংকে লেনদেন করতে পারছেন না। কারো পাসপোর্ট ও ভিসা হচ্ছে না, কেউ করোনার টিকা নিতে পারছেন না। পরিচয়পত্রে ভুল থাকায় অনেক হতদরিদ্র ভিজিএফসহ বিভিন্ন ত্রাণ নিতে পারছেন না। এ রকম অসংখ্য সমস্যার সম্মুখীন সাধারণ মানুষ। জাতীয় পরিচয়পত্রের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজে নানা ধরনের ভুল উঠে এসেছে বারবার। লাখ লাখ মানুষের এনআইডিতে রয়েছে নিজের নামে ভুল, কারো বাবা-মায়ের নাম, কারো ঠিকানা বা কারো জন্ম সাল ভুল। আবার দেখা গেছে, কারো বাবার নামের স্থলে স্বামীর নাম ছাপা হয়েছে। এমনকি পুরুষের এনআইডিতে দেখা গেছে নারীর ছবি। এমনকি ভুল সংশোধনেও কেটে যাচ্ছে বছরের পর বছর। আবার অনেকে মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে কোনোমতে ভুল সংশোধনে সমর্থ হচ্ছেন। রাষ্ট্রীয় কাজে জনগণের এমন ভোগান্তি খুবই দুঃখজনক। গতকাল ভোরের কাগজে প্রকাশ, ভোলার লালমোহন উপজেলার এক তরুণের জাতীয় পরিচয়পত্রে নারীর ছবি দেয়া হয়েছে। এছাড়া এনআইডিতে নাম ও বয়সের ভুল সংশোধনের জন্য প্রায় ৬ মাস ধরে নির্বাচন কমিশন ভবনে ঘোরাঘুরি করছেন রাজশাহীর এক ভুক্তভোগী। জানা গেছে, ৬ মাস আগে তিনি উপজেলা নির্বাচন অফিসে জাতীয় পরিচয়পত্রে তার বয়স সংশোধনের জন্য আবেদন করেন। কিন্তু জেলা ও বিভাগীয় অফিসে বহুবার ঘুরেও কোনো কাজ না হওয়ায় তিনি প্রধান কার্যালয়ে এসে এনআইডি সংশোধনের চেষ্টা করেও এখনো সমাধান পাননি। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, এই ভুলের জন্য ইসির কর্মীরাই দায়ী। তাদের ভুলের খেসারত দিতে হচ্ছে সাধারণ নাগরিকদের। এমন অবস্থার জন্য দায়ী কে? অদক্ষ কর্মী ও দায়িত্বে অবহেলার জন্য এই ভুলের ছড়াছড়ি। যখন জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়ার কার্যক্রম শুরু হয় তখন ইসির অদক্ষ কর্মীরা তথ্য সংরক্ষণে যে ভুল করেছেন তারই কারণে আজকে নাগরিকদের এই ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। তবে জাতীয় পরিচয়পত্রে কিছু ভুলের দায় গ্রাহকদেরও রয়েছে। সচেতনতার অভাবে কখনো গ্রাহক ফরম পূরণ করার সময় নিজেই ভুল লিখেছেন। আবার কখনো অফিসের কর্মীরা ভুল টাইপ করেছেন। ভোগান্তি দূর করতে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে বিকেন্দ্রীকরণ করা হয় জাতীয় পরিচয়পত্র প্রাপ্তির সেবা কার্যক্রম। জাতীয় পরিচয়পত্রের সংশোধন, হারানো কার্ড উত্তোলন এবং নতুন কার্ড মুদ্রণে উপজেলা অফিস, জেলা অফিস, আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস এবং জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগের কার কী ক্ষমতা তাও নির্ধারিত হয় প্রজ্ঞাপনে। তারপরও বিড়ম্বনা কমছেই না। জানা গেছে, ভোটার তালিকা হালনাগাদে প্রতিবারই তথ্য সংগ্রহের সময় উভয়পক্ষের গাফিলতির কারণে তথ্যের গরমিল থাকছে। আমরা মনে করি, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আন্তরিকতা, সচেতন নজরদারি ও মাঠপর্যায়ের অনিয়ম পর্যবেক্ষণ করা জরুরি। কর্মীদের গাফিলতি ও অদক্ষতার দায় কর্তৃপক্ষ কোনোভাবেই এড়াতে পারে না। দায়ী মাঠকর্মীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া দরকার। তবে কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কিনা তা আমাদের জানা নেই। এনআইডি এখন জীবনের অপরিহার্য অংশ। ভুলত্রæটি সংশোধনের সহজ সমাধানে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে উদ্যোগী হতে হবে। নির্বাচন কমিশনের পক্ষে বর্তমান লোকবল দিয়ে নির্ধারিত সময়ে নির্ভুল জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান করা সম্ভব কিনা তাও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। সর্বোপরি নাগরিকদের ভোগান্তি কমাতে হবে।

সাম্প্রতিক সংবাদ
সম্পাদকীয়
উদ্যোগ নেয়া হোক কার্যকরী
বাংলাদেশ এখনো রোহিঙ্গা সংকটের একটি স্থায়ী সমাধানের আশা রাখছে। রোহিঙ্গাদের দীর্ঘদিন বহন করার মতো...
জাতীয়
নির্বাচন বাধাগ্রস্তকারী বাংলাদেশিদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র
প্রতিদিনের ডেস্ক
ধারণা করা হচ্ছিল, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করবে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু...
কুষ্টিয়া
ধানক্ষেতে পোকার আক্রমণ: যা বিষেও মরছে না, দিশেহারা কৃষক
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
আমন ধান পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কৃষকরা। তবে এবার...
যশোর
চৌগাছায় ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় দ্বিতল ভবন, দূর্ঘটনার আশংকা
চৌগাছা সংবাদদাতা
যশোরের চৌগাছা বাজারে জরাজীর্ণ একটি দ্বিতল ভবন চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। পৌর কর্তৃপক্ষ...
এধরণের সংবাদ আরো পড়ুন
সম্পাদকীয়
উদ্যোগ নেয়া হোক কার্যকরী
বাংলাদেশ এখনো রোহিঙ্গা সংকটের একটি স্থায়ী সমাধানের আশা রাখছে। রোহিঙ্গাদের দীর্ঘদিন বহন করার মতো...
সম্পাদকীয়
দুর্গাপূজা: রুখতে হবে এ অস্থিতিশীলতা
শারদীয় দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে প্রতি বছর একটি গোষ্ঠী অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির পাঁয়তারা করে। ধর্মীয়...
সম্পাদকীয়
ডিম আমদানিতে কি সুফল মিলবে?
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তিনটি পণ্যের দাম বেঁধে দেয়। এসব পণ্য হলো ডিম, আলু ও দেশি...