Friday, June 9, 2023
Homeজাতীয়সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণ: ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী-কর্মচারীদের ঘরে ‘ঈদ নেই’

সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণ: ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী-কর্মচারীদের ঘরে ‘ঈদ নেই’

Published on

সাম্প্রতিক সংবাদ

অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশিদের হস্তক্ষেপ দুঃখজনক

আসন্ন সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিদেশি কূটনীতিকরা দিন দিন তৎপর হয়ে উঠছেন। গতকাল ভোরের কাগজের...

সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত

বার্তাকক্ষ চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরসমূহকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উত্তর...

ইউক্রেনে সেনা পাঠাতে পারে জোট মিত্ররা: ন্যাটোর সাবেক মহাসচিব

বার্তাকক্ষ আসন্ন সম্মেলনে ইউক্রেনকে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতে না পারলে ন্যাটো জোটের কয়েকটি মিত্র দেশ কিয়েভকে...

জাপোরিজ্জিয়াতে রুশ অবস্থানে ‘সর্বাত্মক আক্রমণ’ শুরু করেছে ইউক্রেন?

বার্তাকক্ষ রাশিয়ার দখলকৃত ভূখণ্ড পুনরুদ্ধারে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী বহুল প্রতীক্ষিত পাল্টা আক্রমণ শুরু করেছে। সোশ্যাল মিডিয়া...

বার্তাকক্ষ
বিকট শব্দে বিস্ফোরণের পর এক নিমিষেই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় রাজধানীর সিদ্দিকবাজারের ‘ক্যাফে কুইন’ স্যানিটারি মার্কেট ভবন। ওই মার্কেটের তিনটি ফ্লোরে ৯টি স্যানিটারি সামগ্রীর দোকান ও গুদাম ছিল। এছাড়া বিস্ফোরিত ভবনের দুপাশের ভবনেও কয়েকটি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঈদের আগে এমন দুর্ঘটনা এই ব্যবসায়ীদের সবকিছু কেড়ে নিয়েছে। তাদের ঈদও কাটছে নিরানন্দেই।
স্যানিটারি মার্কেটে এক নামে পরিচিত আনিকা এজেন্সি (স্যানিটারি সামগ্রীর দোকান)। ক্যাফে কুইন মার্কেটের মতো অন্য মার্কেটে আরও তিনটি দোকান রয়েছে তার। কিন্তু আনিকা এজেন্সি মালিক মনির উদ্দীন সুমন বেশিরভাগ সময়ই বসতেন সিদ্দিকবাজারের মেইন রাস্তা সংলগ্ন ক্যাফে কুইন মার্কেটের ওই দোকানে। বিস্ফোরণের ঘটনায় মারা যান এই ব্যবসায়ী।
ঘটনার পর থেকে অন্য দুটি দোকান পরিচালনা করছেন সুমনের স্ত্রী ও বড় ভাই। মসজিদ মার্কেটের গ্রাউন্ডে আনিকা এজেন্সির শোরুমের ম্যানেজার জহির হোসেন বলেন, ‘আনিকা এজেন্সিতে চাকরি জীবনে এই প্রথম একটি দুর্বিষহ ঈদ কাটছে আমাদের। সুমন স্যার বেঁচে থাকতে আমাদের স্টাফদের কখনও কোনও সমস্যা হতো না। ঈদের আগে দোকানের স্টাফরা স্যারসহ শপিং করতাম। আর এবার মনে হচ্ছে আমাদের ঈদই হচ্ছে না। কোনও স্টাফই সেভাবে শপিং করিনি।’
গত ৪ মার্চ বিকালে সিদ্দিকবাজার ক্যাফে কুইন স্যানেটারি মার্কেটে বিস্ফোরণের ঘটনায় ২৬ জন মারা গেছেন। আহত হয়েছেন ১০০ জনেরও বেশি। ওই ঘটনাই এখনও দুর্বিষহ স্মৃতি বয়ে বেড়াচ্ছেন অনেকেই।
স্যানিটারি মার্কেটের পাশের ফাতেমা মার্কেটের নিচতলায় ছিল রবিউল হক বাদশার বাদশা ট্রেডিং। বিস্ফোরণে বাদশা ট্রেডিংয়ের দোকানও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বর্তমানে বাদশা ট্রেডিং ঘুরে দাঁড়াতে সংস্কারের কাজ চলছে। আর চায়না পয়েন্টর সালু এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড ট্রেডিংস এখান থেকে ঠিকানা পরিবর্তন করে অন্যত্র চলে গেছে।
বিস্ফোরণের দিনের দুর্বিষহ স্মৃতির কথা ঠিক মনে করতে পারছিলেন না রবিউল হক বাদশা। বলেন, ‘ঘটনার ঠিক আগে আমার দোকানের (বাদশা ট্রেডিং) সামনে দাঁড়িয়ে বেশ সময় কথা বলেছি আমি (বাদশা), আনিকা এজেন্সির মালিক মনির উদ্দীন সুমন ও মসজিদ মার্কেটের গ্রাউন্ডের ব্যবসায়ী ইসমাইল হোসেন। আলাপের একপর্যায়ে মনির বলেছিলেন—ভাই চলেন, আমার দোকানে বসে (আনিকা এজেন্সি) চা খেতে খেতে কথা বলি।’
তিনি বলেন, ‘কথা বলার ফাঁকে আমি সমিতির অফিসে যাবো বলে সেখান থেকে চলে আসি। আর তারা দুজন আনিকা এজেন্সিতে যায়। আমি রাস্তা পার হবো, ঠিক এমন সময় বিকট শব্দে ছিটকে পড়ি। পেছনে তাকিয়ে দেখি ধোঁয়ায় কিছু দেখা যাচ্ছে না।’
ক্যাফে কুইন ভবনের নিচতলায় (গ্রাউন্ড ফ্লোর) ‘একমী স্যানেটারি’র মালিক জয়নাল আবেদিন বলেন, ‘আমরা দুই পার্টনার এই স্যানিটারি ব্যবসা করতাম। আমার পার্টনার সিদ্দিকবাজারের ক্যাফে কুইন মার্কেটের নিচতলায় দোকানে বসতেন। আর আমি মিরপুর এলাকা আমাদের আরেকটি দোকানে বসতাম এবং মাল সাপ্লাইয়ের কাজ করতাম। ওই দিন ঘটনার সময় আবার পার্টনার দোকানেই ছিল। সৌভাগ্যবশত তিনি বেঁচে গেছেন। এই দোকান দিয়েই আমাদের দুটি পরিবার চলতো। কিন্তু এক নিমিষেই সব শেষ। এবার ঈদে পরিবারের জন্য শপিং পর্যন্ত করতে পারিনি।’
‘বিসমিল্লাহ স্যানেটারি’ নামে আরেক প্রতিষ্ঠানের মালিক আবুল বাশার বলেন, ‘সিদ্দিকবাজারে এই দোকানের ওপরেই আমার পুরো পরিবার নির্ভরশীল। কিন্তু সেদিন কোনও কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমাদের সঙ্গে যা ঘটলো, এটা এখনও কল্পনা করতে পারিনি। আর এমন একটি ভালো জায়গা, তারপরও কি যে হইলো, এখনও জানতেই পারলাম না।’
দুর্ঘটনার পরে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে মালামাল উদ্ধার করতে পারেননি উল্লেখ করে এই ব্যবসায়ী বলেন, ‘ওই ঘটনার পর থেকে পরিবারকে কুমিল্লায় গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছি। এছাড়া বর্তমানে ক্যাফে কুইনের পাশে ফাতেমা মার্কেটের তিনতলায় বন্ধুর দোকানে বসছি। আমরা ব্যবসা করে খাই, কোনও মাধ্যম থেকে একটু ঘুরে দাঁড়ানোর সহযোগিতা পেলে আমরা আবার পূর্বের অবস্থায় ফিরতে পারতাম।’
বাংলাদেশ পাইপ অ্যান্ড টিউবওয়েল মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রবিউল হক বাদশা বলেন, ‘আমাদের ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পাশে সমিতির পক্ষ থেকে যতটুকু পারি সহযোগিতা করা হচ্ছে। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে যদি সিদ্দিকবাজার ব্যবসায়ীদের পাশে একটু দাঁড়াতো, তাহলে অল্প সময়ে ব্যবসায়ীরা ঘুরে দাঁড়াতে পারতেন।’
রবিউল হক বাদশা বলেন, ‘অন্য যেকোনোবারের তুলনায় এবার ঈদে বেচাকেনা একবারেই কম হয়েছে। রাজধানীর গুলিস্তানে একটার পর একটা দুর্ঘটনায় সাধারণ মানুষজনের পদচারণা কমে গেছে। আগের তুলনায় খুচরা বিক্রিও একেবারেই কম হচ্ছে। পাইকারি ব্যবসায়ী এবং বিভিন্ন প্রজেক্টে মালামাল সাপ্লাই দিয়েই ব্যবসায়ীরা কোনোরকম টিকে থাকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’

spot_img
spot_img

এধরণের সংবাদ আরো পড়ুন

সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত

বার্তাকক্ষ চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরসমূহকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উত্তর...

বাজেট পাসের আগেই নিয়ম বদল, শত শত প্রবাসীর স্বর্ণ জব্দ

বার্তাকক্ষ সৌদি প্রবাসী আব্দুল মোমেন দুটি সোনার বার নিয়ে গত ৩১ মে সৌদি আরব থেকে...

অতিরিক্ত দামে চার্জার ফ্যান বিক্রি অভিযানের খবরে পালালেন নবাবপুরের ব্যবসায়ীরা

বার্তাকক্ষ অতিরিক্ত মূল্যে চার্জার ফ্যান বিক্রির অপরাধে রাজধানীর নবাবপুরে অভিযান চালিয়ে দুই আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা...