কামরুজ্জামান মুকুল, বাগেরহাট:
আত্মসমর্পনের পর ফের সুন্দরবনে দস্যুতা শুরু করা ‘ফজলু বাহিনী’র প্রধান ফজলু ও তার সেকেন্ড ইনকমান্ড মজনুসহ কুখ্যাত ৪ দস্যুকে পুলিশ অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করেছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের শ্যালা নদী সংল্গন সূর্যমুখী খাল থেকে মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) ভোরে বাগেরহাট ডিবি তাদের গ্রেফতার করে। এদিন বিকেলে বাগেরহাট সুলিশ সুপার কে.এম আরিফুল হক (পিপিএম) এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান। এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আসাদুজ্জামান, মোঃ রাসেলুর রহমান, সদর মডেল থানার ওসি আজিজুর রহমার, ডিবি’র ওসি সুরেশ চন্দ্র হাওলাদার, জেলা পুলিশ মিডিয়া সেলের পুলিশ পরিদর্শক এস.এম আশরাফুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে ডাকাতির দস্যুতায় ব্যবহৃত একটি নৌকা, একটি বন্দুক, একটি দেশীয় তৈরি ওয়ান সুটার গান, সাতটি কার্তুজ, ২টি কাঠের বাটসহ রামদা, ০২ টি লোহার হাতুড়ী, ০১ টি লোহার পাইপ, চারটি টর্চ লাইট, চারটি পুরাতন সুতি চেকের গামছা, ১০ টুকরা নাইলনের রশি, ২ টি স্কচ টেপ, ০৪ টি বিভিন্ন সাইজের গাছের ডালের লাঠি ও ২ টি মানকি টুপি জব্দ উদ্ধার করা হয়। আটককৃত বনদস্যুরা হলেন, রামপাল উপজেলার আড়ুয়াডাঙ্গার বাসিন্দা মৃত আহাদ আলীর ছেলে মোঃ ফজলু শেখ (৪২),শিকিরডাঙ্গা এলাকার মোঃ মোতালেব শেখের ছেলে মজনু শেখ (৩০), পেড়িখালী মৃত জোনাব আলী মোড়লের ছেলে শাহাদাৎ মোড়ল (৪০) ও জিগিরমোল্লা এলাকার নজরুল শেখের ছেলে ফয়সাল শেখ (৩২)। আটককৃতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বাগেরহাটের পুলিশ সুপার কেএম আরিফুল হক (পিপিএম) বলেন, দস্যু ফজলু ও তার বাহিনী এত ভয়ঙ্কর যে ত্রাস সৃষ্টির জন্য মুক্তিপণ আদায়ে জেলেদের সামনে অন্য ২/১ জন জেলেকে হাসুয়া বা’ রামদা দিয়ে কেটে সমূদ্রে ফেলে দিত এবং অন্যদের হাত-পা বেঁধে নির্মম নির্যাতন চালাতো। ফলে চাঁদার বা’ মুক্তিপণের টাকা বেড়ে যেত। ওই জেলেদের দিয়ে তাদের পরিবার ও মহাজনের নিকট মোবাইল করাত। মহাজন ও তাদের পরিবার তখন মুক্তিপণ পৌছে দিতে বাধ্য হত। এই বাহিনী এত দুর্ধর্ঘ ছিল য়ে, ভিকটীম মুখ খুলতে সাহস পেত না। গোপনে এসব ভিকটীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে দীর্ঘ অভিযানের পর দস্যু বাহিনী প্রধান ফজলু ও তার সেকেন্ড ইন কমান্ডসহ ৪ জনকে অবশেষে মঙ্গলবার ভোরে সুন্দরবন থেকে অস্ত্র-গুলি-নৌকাসহ গ্রেপ্তার করা হয়। ’ এদের আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চাওয়া হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। গত ৯ ডিসেম্বর রাতে দস্যুরা জেলেবহরে হামলা ও লুটপাট করে ১৫ জেলেকে মুক্তিপণের দাবিতে অপহরণ করে। এরপর ২০ ডিসেম্বর মুক্তিপণের বিনিময়ে দস্যুদের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া জেলে ফারুক খাঁন বলেছিলেন, ‘আমাদের নিয়ে যাওয়ার সময় তাদের কাছে অস্ত্র, ছয়টি রামদা ও বেশকিছু লাঠি ছিল। দুটি ডিঙ্গি নৌকায় আটজন দস্যু ছিল। তাদের কাছে এখনো আরও ৩০-৩৫ জেলে জিম্মি আছে।’ প্রসঙ্গত: গত ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর অনান্য দস্যু বাহিনীর সাথে ফজলু সেখ তার বাহিনী নিয়ে অস্ত্রসহ আত্মসমর্পণ করেছিল।
সুন্দরকনের ভয়ঙ্কর বাহিনী প্রধান ফজলুসহ ৪ দস্যু গ্রেফতার : অস্ত্র-গুলি উদ্ধার
Published on
