বার্তাকক্ষ ,,সুপ্রিম কোর্ট বারের নির্বাচন হবে ১৫ ও ১৬ মার্চ। সে হিসেবে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি বার অ্যাসোসিয়েশন থেকে ঘোষণা করা হয় তফসিল। এরই মধ্যে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির কার্যকরী কমিটির ২০২৩-২৪ সেশনের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ সমর্থিত সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের (সাদা প্যানেল) প্রার্থিতা ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু বিএনপি ও জামায়াত সমর্থিত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেল (নীল প্যানেল) এখনো প্রার্থী ঠিক করেনি। বিএনপির আইনজীবী ফোরাম সূত্রে জানা গেছে, দু-একদিনের মধ্যে তাদের প্রার্থীও ঠিক করা হতে পারে। তাই এখন বিএনপির প্রার্থিতা ঘোষণার অপেক্ষা।
এদিকে মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে সাদা প্যানেলের মনোনয়ন বোর্ডের সভা শেষে ১৪টি পদের বিপরীতে সরকার সমর্থকদের এ প্রার্থিতা ঘোষণা করা হয়। এতে সভাপতি পদে বর্তমান সভাপতি সিনিয়র অ্যাডভোকেট মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির ও সম্পাদক পদে বর্তমান সভাপতি আবদুন নূর দুলালকে ফের মনোনয়ন দেওয়া হয়।
দুই সহ-সভাপতি পদে মোহাম্মদ আলী আজম ও জেসমিন সুলতানা, কোষাধ্যক্ষ পদে এম. মাসুদ আলম চৌধুরী এবং দুই সহ-সম্পাদক পদে এবিএম নূরে আলম (উজ্জ্বল) ও এম হারুন উর রশিদকে দেওয়া হয় মনোনয়ন।
বাকি সাত সদস্য পদে মনোনয়ন পেয়েছেন মো. সাফায়েত হোসেন সজীব, মহিউদ্দিন রুদ্রু, শফিক রায়হান শাওন, সুভাষ চন্দ্র দাস, নাজমুল হোসেন স্বপন, মো. দেলোয়ার হোসেন ও মনিরুজ্জামান রানা।
এদিকে রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) থেকে ফরম বিক্রি শুরু করে বিএনপি। এরমধ্যে অর্ধশত ফরম বিক্রি হয়েছে। সভাপতি পদে মাত্র একজন মনোনয়নপত্র কিনেছেন, সহ-সভাপতি পদে চারজন, আর সম্পাদক পদে ১১ জন, ট্রেজারার পদে ছয়জন, সহ-সম্পাদক পদে ১৩ জন এবং সদস্য পদে ১৪ জন কিনেছেন। এখন দেখার পালা বিএনপির দলীয় মনোনয়ন কোন আইনজীবীকে দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের (সুপ্রিম কোর্ট ইউনিট) সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট গাজী মো. কামরুল ইসলাম বলেন, শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নিয়ে অচিরেই ঘোষণা করা হবে সুপ্রিম কোর্ট বারের নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী।
এদিকে গত রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) থেকে মনোনয়ন ফরম বিক্রি করে সরকার দলীয় বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ। যা চলে পরের দিন সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত। দুদিনে ৭৮ জনেরও বেশি মনোনয়ন ফরম নেন।
এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সহ-সম্পাদক ও আওয়ামী লীগ নেতা ব্যারিস্টার মো. শফিকুল ইসলাম জানান, সভাপতি পদে পাঁচটি ফরম, সহ-সভাপতি পদে ছয়জন, আর সম্পাদক পদে ১৪, ট্রেজারার পদে সাতজন, সহ-সম্পাদক পদে ১৬ এবং সদস্য পদে ২৯ জন ফরম কিনেছেন।
নির্বাচনী তফসিল অনুযায়ী, ৫ মার্চ বিকেল ৫টার মধ্যে মনোনয়ন ফরম জমা দেওয়া যাবে। এরপর একই দিন বিকেল সাড়ে ৫টায় বাছাই করা হবে মনোনয়নপত্র। আর ৮ মার্চ বিকেল ৫টার মধ্যে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে।
কার্যকরী কমিটির সভাপতি পদে একটি, সহ-সভাপতি পদে দুটি, সম্পাদক পদে একটি, কোষাধ্যক্ষ পদে একটি, সহ-সম্পাদক পদে দুটি এবং কার্যকরী কমিটির সদস্য পদে সাতটি পদসহ মোট ১৪টি পদে নির্বাচন হবে।
তবে নির্বাচন পরিচালনার জন্য উপ-কমিটি গঠন নিয়ে বর্তমান কার্যকরী কমিটি বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এরই মধ্যে আইনজীবী শাহ খসরুজ্জামানের নেতৃত্বে সাত সদস্যের উপ-কমিটি ঘোষণা করেন কার্যকরী কমিটির সম্পাদক (আওয়ামী লীগ সমর্থিত) আবদুন নূর দুলাল। আর সদস্যরা হলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মনিরুজ্জামান, অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য্য, আব্দুল মালেক, এস এম গোলাম মোস্তফা তারা, মো. আলতাফ হোসেন আমানি ও আবু নাসের স্বপন।
অপরদিকে বিএনপি সমর্থিত কার্যকরী কমিটির জ্যেষ্ঠ সহ-সম্পাদক মাহফুজ বিন ইউসুফ সাত সদস্যের উপ-কমিটি ঘোষণা করেন। এতে আহ্বায়ক হলেন ড. এজেডএম ফরিদুজ্জামান ফরহাদ। সদস্যরা হলেন এ এস এম মোক্তার কবির খান, ড. মো. গোলাম রহমান ভূইয়া, মোহাম্মদ আশরাফ-উজ্জ-জামান খান, মাহমুদ হাসান, মোহাম্মদ কামাল হোসেন ও মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান খান।
এর আগে ২০২২-২৩ কার্যকরী কমিটির নির্বাচনে ১৪টি পদের মধ্যে সভাপতি-সম্পাদকসহ সাতটি পদে বিজয়ী হয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সমর্থকরা। বাকি সাতটি পদে জিতেছিলেন বিএনপি সমর্থকরা।