Saturday, September 23, 2023
Homeশহর-গ্রামখুলনা৯ বছরে ২০৬টি কুমির ও ১২ টি কচ্ছপ অবমুক্ত

৯ বছরে ২০৬টি কুমির ও ১২ টি কচ্ছপ অবমুক্ত

Published on

সাম্প্রতিক সংবাদ

উদ্যোগ নেয়া হোক কার্যকরী

বাংলাদেশ এখনো রোহিঙ্গা সংকটের একটি স্থায়ী সমাধানের আশা রাখছে। রোহিঙ্গাদের দীর্ঘদিন বহন করার মতো...

নির্বাচন বাধাগ্রস্তকারী বাংলাদেশিদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

প্রতিদিনের ডেস্ক ধারণা করা হচ্ছিল, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করবে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু...

ধানক্ষেতে পোকার আক্রমণ: যা বিষেও মরছে না, দিশেহারা কৃষক

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি আমন ধান পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কৃষকরা। তবে এবার...

চৌগাছায় ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় দ্বিতল ভবন, দূর্ঘটনার আশংকা

চৌগাছা সংবাদদাতা যশোরের চৌগাছা বাজারে জরাজীর্ণ একটি দ্বিতল ভবন চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। পৌর কর্তৃপক্ষ...

খুলনা সংবাদদাতা
কয়েক দশক আগেও সুন্দরবন ও আশপাশের নদ-নদীতে প্রচুর লোনা পানির কুমির দেখা যেতো। ধীরে ধীরে এই কুমিরের সংখ্যা কমতে শুরু করে। একই অবস্থা বাটাগুর বাসকা নামের কচ্ছপের। ২০০০ সাল থেকেই কচ্ছপের এই প্রজাতিটি দেখা যায় না। প্রকৃতি সংরক্ষণ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা আইইউসিএন ২০১৫ সালে বাংলাদেশে বিপন্ন প্রাণীর একটি তালিকা করে, যা আইইউসিএন রেড লিস্ট নামে পরিচিত। ওই তালিকায় লোনা পানির কুমিরকে বাংলাদেশে বিপন্ন প্রজাতি হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। আর বাটাগুর বাসকাকে তালিকাভুক্ত করা হয় মহাবিপন্ন প্রজাতি হিসেবে। আশার কথা হচ্ছে, বিপন্ন প্রজাতির প্রাণিগুলো কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে প্রকৃতিতে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। গত ৯ বছরে কৃত্রিম প্রজনন ঘটিয়ে ২০৬টি বিপন্ন প্রজাতির লোনা পানির কুমির সুন্দরবনের নদীতে অবমুক্ত করা হয়েছে। একইভাবে কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে বাটাগুর বাসকা অবমুক্ত করা হয়েছে ১২টি। বিপন্ন প্রজাতির প্রাণি প্রকৃতিতে ফিরিয়ে আনার এই কার্যক্রম চলছে পূর্ব সুন্দরবনের করমজলে। বন বিভাগের উদ্যোগে প্রায় দুই দশক ধরে চলছে এই কাজ। বর্তমানে করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে ১২৯টি কুমির এবং ৪৩২টি কচ্ছপ রয়েছে।
বন বিভাগ থেকে জানা গেছে, ২০০২ সালে পূর্ব সুন্দরবনের করমজল পর্যটন কেন্দ্রে ৮ একর জমির গড়ে তোলা হয় বন্যপ্রাণি প্রজনন কেন্দ্র। শুরুতে রেমিও ও জুলিয়েট নামে দুটি কুমির দিয়ে শুরু হয়েছিলো প্রজনন কেন্দ্রের কার্যক্রম। ২০০৫ সালে কুমির দুটি ডিম পাড়লে সেখানে আনুষ্ঠানিকভাবে কুমির প্রজনন শুরু হয়।
একইভাবে বাটাগুর বাসকা প্রজাতির কচ্ছপের কৃত্রিম প্রজননের কাজ শুরু হয় ২০১৪ সালে। অবশ্য বন বিভাগের সঙ্গে বাটাগুর বাসকার গবেষণায় সঙ্গী হয় প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন, অস্ট্রিয়ার জু ভিয়েনার গবেষণা দল ও যুক্তরাষ্ট্রের টার্টল সারভাইভাল অ্যালায়েন্স। ২০১৭ সাল থেকে কেন্দ্রটিতে ডিম দিতে শুরু করে মহাবিপন্ন প্রজাতির বাটাগুর বাসকা কচ্ছপগুলো। গত এক যুগ ধরে করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করছেন হাওলাদার আজাদ কবীর। তার হাত ধরেই প্রকৃতিতে ফিরতে শুরু করেছে লোনা পানির কুমির। তিনি বলেন, রোমিও-জুলিয়েটের পর প্রজননের জন্য পিলপিল ও আলেকজান্ডার নামে আরও দুটি কুমির আনা হয়। মধ্যে জুলিয়েট ও পিলপিল ডিম দেয়। ডিমগুলো ইনকিউবেটরে রেখে বাচ্চা ফোটানো হয়। তিনি বলেন, সাধারণত কুমিরের বয়স ৭-৮ বছর হলে এবং দৈর্ঘ্য দুই মিটারের বেশি হলে এগুলো প্রকৃতিতে অবমুক্ত করা হয়। ২০১৩ সাল থেকে বনের নদীতে কুমির অবমুক্ত শুরু করে বন বিভাগ। গত ৯ বছরে ২০৬টি কুমির অবমুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে গতবছরই অবমুক্ত করা হয়েছে ৯০টি কুমির। অবমুক্ত করা এসব কুমির কী অবস্থায় আছে-তার তথ্য নেই বনবিভাগের কাছে। এ প্রসঙ্গে হাওলাদার আজাদ কবীর বলেন, কুমির মনিটরিংয়ে কোনো ব্যবস্থা নেই। তবে ২০১৭ সালে দুটি, ২০১৮ সালে ৫টি এবং ২০১৯ সালে ৫টি কচ্ছপে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার লাগিয়ে সুন্দরবনে অবমুক্ত করা হয়। প্রতিটি কচ্ছপ কোথায় যাচ্ছে প্রতি ১৫ মিনিট পর পর জিপিএস লোকেশন পাওয়া যাচ্ছে। আফসোসের বিষয় হচ্ছে, প্রজনন মৌসুমে তাদের শব্দ সংকেতের মাধ্যমে স্ত্রী কচ্ছপের সঙ্গে একত্রিত হওয়ার কথা। কিন্তু তারা কোনো সঙ্গীর সন্ধান পায়নি। তাতে ধারণা করা হয়, সুন্দরবনে বাটাগুর বাসকা প্রজাতির কোনো কচ্ছপ নেই।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নাইমুল নাসের বলেন, এটা খুবই ভালো উদ্যোগ। প্রাকৃতিক পরিবেশের বাইরে প্রজনন ঘটালে কিছুটা সতর্ক থাকতে হবে। কারণ এই প্রক্রিয়ায় প্রাণির মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে যায়। এজন্য প্রাণিটি বড় করে কিছুটা নিরাপদ জায়গায় তাদের ছাড়া, যাতে নিজেরা প্রকৃতির সঙ্গে মিশে নিজেদের রক্ষা করতে পারে। করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবীর বলেন, লোনা পানির কুমির কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ বংশবিস্তারের সুযোগ কমে যাওয়া।সুন্দরবনের লোনা পানির কুমির উঁচু জায়গায় ডিম পাড়ে। নির্দিষ্ট সময় শেষে বাচ্চা ফুটে বের হয়। কিন্তু বনের ভেতর এখন উঁচু জায়গা কমে গেছে। জোয়ারে অধিকাংশ এলাকা প্লাবিত হয়। কৃত্রিম প্রজনন সফল হলেও বিপন্ন প্রজাতি টিকিয়ে রাখতে হলে প্রাকৃতিক প্রজনন ফিরিয়ে আনা জরুরি।

spot_img
spot_img

এধরণের সংবাদ আরো পড়ুন

ধানক্ষেতে পোকার আক্রমণ: যা বিষেও মরছে না, দিশেহারা কৃষক

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি আমন ধান পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কৃষকরা। তবে এবার...

চৌগাছায় ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় দ্বিতল ভবন, দূর্ঘটনার আশংকা

চৌগাছা সংবাদদাতা যশোরের চৌগাছা বাজারে জরাজীর্ণ একটি দ্বিতল ভবন চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। পৌর কর্তৃপক্ষ...

শ্যামনগরে যাতায়াতে জনদুর্ভোগের গ্রামের নাম পূর্ব জেলেখালি

উৎপল মণ্ডল,শ্যামনগর সাতক্ষীরা শ্যামনগরে মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের পূর্ব জেলেখালি গ্রামের ১ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা কয়েক...