বার্তাকক্ষ গত অক্টোবরে চীনের শীর্ষ মেমোরি চিপ নির্মাতা ইয়াংটজি মেমোরি টেকনোলজিস কোম্পানিসহ (ওয়াইএমটিসি) ৩০টি প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করে যুক্তরাষ্ট্র। এরপর চীনের প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে প্রযুক্তি ও চিপ সরবরাহ বন্ধে বিধিনিষেধ আরোপ করে দেশটির সরকার। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওয়াইএমটিসির চিপ ব্যবহারের পরিকল্পনা বাতিল করে প্রযুক্তি জায়ান্ট অ্যাপল। খবর সিএনবিসি।
অ্যাপলের বিভিন্ন গ্যাজেটে ব্যবহূত চিপের একটি বড় অংশ উৎপাদন হয় চীনে। কিন্তু বিভিন্ন কারণেই চীনের ওপর উৎপাদননির্ভরতা কমাতে চাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। চীন থেকে তাই আইপ্যাড উৎপাদন কার্যক্রমের কিছু অংশ ভারতে স্থানান্তরের কথা ভাবছে প্রতিষ্ঠানটি। ভারত মূলত এ সুযোগই কাজে লাগাতে আগ্রহী। ভারত সরকারের ঘনিষ্ঠ দুটি সূত্র অনুসারে, চীন থেকে অ্যাপল আইপ্যাডের যন্ত্রাংশ উৎপাদন নিজ দেশে আনার সুযোগ অন্বেষণ করছে তারা। এরই ধারাবাহিকতায় অ্যাপলের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে তারা।
তবে এখনো সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ ঠিক হয়নি যে ঠিক কবে থেকে এটি কার্যকর হবে। ভারতের এ প্রচেষ্টা যদি সফল হয় তাহলে দেশটিতে অ্যাপলের যন্ত্রাংশ উৎপাদনের কার্যক্রম আরো এক ধাপ সম্প্রসারিত হবে।
চলতি বছরের শুরুর দিকে অ্যাপল ঘোষণা দেয়, তারা দক্ষিণ ভারতে আইফোন ১৪ সন্নিবেশ করা শুরু করেছে। টেক জায়ান্টটি কয়েক বছর ধরে এখানে আইফোনের পুরনো মডেল তৈরি করছে।
এদিকে চীনের শূন্য কভিড-সংক্রান্ত বিধিনিষেধের মধ্যে দুই সপ্তাহ ধরে দেশজুড়ে বিক্ষোভ পরিস্থিতিতে অ্যাপল তার পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে বিকল্প ভাবছে বলে মনে করা হচ্ছে। নভেম্বরের শুরুতে অ্যাপল সতর্ক করেছিল যে চীনে সংশ্লিষ্ট যন্ত্রাংশ উৎপাদন বিঘ্নতার কারণে আইফোনের চালান বিলম্বিত হবে।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদন অনুসারে, অ্যাপল সক্রিয়ভাবে চীন থেকে ভারত, ভিয়েতনামসহ এশিয়ার অন্যান্য দেশে উৎপাদন স্থানান্তর করতে চাইছে।
তবে এক্ষেত্রে আইপ্যাডের মতো জটিল ডিভাইস তৈরিতে দক্ষতাসম্পন্ন কর্মীর অভাব রয়েছে ভারতের, যা পরিকল্পনাটিকে শ্লথ করে দিতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিশ্লেষকরা।তাছাড়া ভারত ও চীনের মধ্যে সম্পর্কের উত্তেজনা বৃদ্ধির পাশাপাশি দেশ দুটির বৈদেশিক নীতিও সহযোগী ভূমিকা পালন করে না। বিশেষ করে আঞ্চলিক বিরোধের জের ধরে ভারত-চীন সীমান্তে সামরিক উপস্থিতি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশ দুটিকে আরো বেশি বিভক্ত করেছে।
গবেষণাপ্রতিষ্ঠান লুপ ভেঞ্চারসের জিন মুনস্টারের মতে, ১০ শতাংশ আইফোন ভারতে তৈরি হয়। তবে তিনি আশা করেন, উৎপাদন ধীরগতিতে বাড়বে। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘পাঁচ বছরের মধ্যে ৩৫ শতাংশ আইফোন ভারতে তৈরি হবে। তাছাড়া আমি আরো মনে করি, অ্যাপল আগামী পাঁচ বছরে ভারত ও চীনের বাইরে অন্যান্য দেশে আইফোন উৎপাদন সম্প্রসারণ করবে। বিশেষ করে ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তারা উৎপাদন কার্যক্রম প্রসারিত করতে পারে।’
