১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ  । ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ 

ঢাকা-১৬ উত্তাপহীন প্রচার, মাঠে কেবল নৌকা

প্রতিদিনের ডেস্ক
ঢাকা-১৬ আসনটি চারটি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। ওয়ার্ডগুলো হলো- ২, ৩, ৫ ও ৬। এখানে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ পাঁচটি রাজনৈতিক দলের প্রার্থী। পাশাপাশি ক্ষমতাসীন দলের একজন নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন।
তবে ভোটারদের কাছে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লাহ ছাড়া বাকিরা অপরিচিত। তাদের প্রচার-প্রচারণাও নেই তেমন। মাঠে কেবল নৌকার প্রচার। পোস্টার, ব্যানার ও নির্বাচনী ক্যাম্প সবই নৌকার। যদিও অন্যান্য প্রার্থীদের দাবি তারাও প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন।
এলাকাবাসী বলছেন, শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় এলাকার ছেলে ও পরপর তিনবারের সংসদ সদস্য ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লা ফের সংসদ সদস্য হচ্ছেন এটা নিশ্চিত। কেননা বর্তমান এমপি প্রচার ও প্রভাবে অন্যদের চেয়ে এগিয়ে। বাকি প্রার্থীদের কেউ সেভাবে চেনেই না।
ঢাকা-১৬ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৭৪ হাজার। আর ভোটকেন্দ্র ১৩৮টি। এ আসনে ৬ প্রার্থী হলেন নৌকার ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লাহ, লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী আমানত হোসেন, ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট মনোনীত টেলিভিশন প্রতীকের প্রার্থী সজীব কায়সার, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি মনোনীত একতারার প্রার্থী তৌহিদুল ইসলাম, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির আম প্রতীকের প্রার্থী তরিকুল ইসলাম ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সালাউদ্দিন রবিন।
উত্তর সিটির ২, ৩, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ড সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি ওয়ার্ডেই আছে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর একাধিক নির্বাচনী প্রচার ক্যাম্প। তবে অন্য প্রার্থীদের কিছু পোস্টার মাঝে মধ্যে দেখা যায়। তাদের প্রচারণা শুধু মাইকিংয়ে সীমাবদ্ধ। তাও আবার সীমিত।
অন্যদিকে প্রচারে নিজেই অংশ নিচ্ছেন ইলিয়াস মোল্লাহ। মাঠে-ময়দানে ও ভোটারদের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন, চাচ্ছেন ভোট। শুক্রবারও মসজিদে গিয়ে ভোট চেয়েছেন তিনি। তার হয়ে ভোট চাইছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও।
মিরপুর-১২ নম্বর বাস স্টেশনে কথা হয় চা দোকানদার মিরাজ পারভেজের সঙ্গে। তিনি বলেন, ইলিয়াস মোল্লাহ ছাড়া বাকি সব প্রার্থী জামানত হারাবেন। এই পাঁচজন মিলে এক হাজার ভোট পান কি না দেখেন। বিএনপি নাই, জনপ্রিয় বা পরিচিত কেউ নাই। আওয়ামী লীগের লোকেরাই ভোটকেন্দ্রে যাবে।
এলাকাবাসী বলছেন, বিএনপির একটি বড় ভোটব্যাংক এ আসনে রয়েছে। প্রকাশ্যে না হলেও গোপনে নির্বাচনবিরোধী প্রচার করছে তারা। দু-এক জায়গায় জাতীয় পার্টির প্রার্থীর কিছু পোস্টার চোখে পড়ে।
মিরপুর ১২, ১১, ৬ নম্বরের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, প্রচারের এ কদিনে নৌকা ছাড়া অন্য কিছু তাদের চোখে পড়েনি। তরুণ ভোটাররা বলছেন, ‘উত্তাপহীন’ ভোটে তাদের আগ্রহ নেই। এলাকাবাসী বলছেন, আওয়ামী লীগের সমর্থক ছাড়াও নেতাদের ডাকে অনেকেই ভোটকেন্দ্রে যাবেন।
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বলছেন, বর্তমান সংসদ সদস্যের ‘জয় নিশ্চত’ থাকলেও তারা ভোট দিতে যাবেন। কেননা কেন্দ্রগুলোতে সম্মানজনক ভোটার উপস্থিতি নিশ্চিত করতে দল থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এদিকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ইলিয়াস মোল্লাহ বলেন, ১৫ বছর এলাকায় ভালো কাজ করেছি। তাই দল আমাকে আবারও মনোনয়ন দিয়েছে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে নির্বাচনের মাঠে আছি, প্রচার চালিয়ে যাচ্ছি। আওয়ামী লীগ সরকার এবার ফ্লাইওভার, মেট্রোরেলসহ বিভিন্ন উন্নয়ন করেছে। মানুষ দলে দলে নৌকা মার্কায় ভোট দিতে যাবে।আরেক প্রার্থী আমানত হোসেনকে ২ দশক ধরে ঢাকা-১৬ আসনে মনোনয়ন দিয়ে আসছে জাতীয় পার্টি। তবে বরাবরই ভোট ও প্রচারের মাঠে এ প্রার্থীর অবস্থান নড়বড়ে।
যদিও আমানত হোসেনের দাবি, প্রচার ভালোই চলছে তার। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় করছেন।
তিনি বলেন, একটি নির্বাচনী ক্যাম্প করেছি। ভোটের পরিবেশ ভালো। প্রচারে কোনো বাধার সম্মুখীন হইনি।এছাড়া রূপনগর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দীন রবিন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোট করছেন। তার মার্কা ঈগল। তিনি মিরপুর বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ভিপিও হয়েছিলেন।এলাকাবাসী বলছেন, তেমন পরিচিতি না থাকলেও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ভোট কিছু পাবেন তিনি।
দুই নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী মো. নাজমুল হোসেন বলেন, নির্বাচনের উত্তাপ বলতে কেবল পোস্টার, আর মাইকিং। মিছিল-সমাবেশ কিংবা ঘরে ঘরে যেয়ে ভোট চাওয়া। এবার এ বিষয়টা নেই। দেশের একটা বড় রাজনৈতিক দলসহ অনেকগুলো দল ভোট বর্জন করেছে। প্রার্থীরা অপরিচিত, এ জন্য নির্বাচনের উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়নি। ভোটের মাঠে শুধু নৌকা প্রার্থীদেরই প্রচারণা করতে দেখা যাচ্ছে।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়