১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ  । ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ 

জাপানে শক্তিশালী ভূমিকম্প ৭২ ঘণ্টা পরেও নিখোঁজ প্রায় ২৫০ জন

প্রতিদিনের ডেস্ক
জাপানে নতুন বছরের শুরুতেই আঘাত হানা শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর এখনও ২৪২ জন নিখোঁজ রয়েছে। তাদের উদ্ধারে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে জীবিতদের উদ্ধারে গুরুত্বপূর্ণ ৭২ ঘণ্টা সময় পার হয়ে গেছে। কিন্তু আর কাউকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
৭ দশমিক ৬ মাত্রার শক্তিশালী ওই ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত ৯২ জন নিহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। গত সোমবার (১ জানুয়ারি) জাপানের প্রধান দ্বীপ হোনশুতে ৭ দশমিক ৬ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। এই ভূমিকম্পের জেরে দেশটিতে সুনামিও আঘাত হানে। ভূমিকম্পের ১০ মিনিটের মধ্যে ইশিকাওয়ার ওয়াজিমা শহরে ১.২ মিটার (প্রায় ৪ ফুট) উচ্চতার ঢেউ আঘাত হানে
বার্তা সংস্থা কিয়োডো জানিয়েছে, উদ্ধার ও ত্রাণকাজে অংশ নেওয়া সেনা সদস্যদের সংখ্যা দ্বিগুণ বাড়িয়ে ৪ হাজার ৬শ’ করেছে জাপানের সেল্ফ ডিফেন্স ফোর্সেস। ভূমিকম্পে ধসে যাওয়া বাড়িঘরের নিচে অনেক মানুষ চাপা পড়ে আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাদের অধিকাংশ সুজু ও ওয়াজিমা শহরের বাসিন্দা। ওই দুই শহরের কাঠের বাড়িগুলো শক্তিশালী ভূমিকম্প সহনশীল করে নির্মাণ করা হয়নি।
এখনও লাখ লাখ মানুষ পানি ও বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। এছাড়া ভূমিধসের কারণে রাস্তা-ঘাট বন্ধ থাকায় কয়েকশ মানুষের কাছে কোনো ত্রাণ সহায়তা পৌঁছায়নি।
শুক্রবার দুর্যোগ সাড়াদান কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা বলেছেন, আমরা হাল ছাড়ব না। ভূমিকম্পের পরপরই তিনি ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনকে সব ধরনের সহায়তা দেওয়ার নির্দেশ দেন।
ভূমিকম্পের কারণে বিভিন্ন স্থানে বাড়ি-ঘর ধসে পড়েছে, ভবনে আগুন ধরেছে এবং রাস্তা-ঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভূমিকম্পটির কেন্দ্র ছিল জাপানের মধ্যাঞ্চলীয় নোটো দ্বীপে।
ইশিকাওয়া প্রিফেকচারের উপকূলীয় শহর সুজুর মাসুশিরো ইজুমিয়া জানিয়েছেন, সেখানকার প্রায় ৯০ শতাংশ বাড়ি সম্পূর্ণ বা প্রায় পুরোটাই ধ্বংস হয়ে গেছে। লোকজন বাড়ি-ঘর ছেড়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। লোকজনকে খাবার, পানি এবং কম্বল সরবরাহ করেছে জাপানের সামরিক বাহিনী। জাপান সরকার বলছে, ৫৭ হাজার ৩৬০ জনকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
এর আগে ২০১১ সালে শক্তিশালী এক ভূমিকম্পে জাপানের ফুকুশিমা প্রিফেকচারের দাইচি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়েছিল। ১৯৮৬ সালে চেরনোবিল পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ভয়াবহ বিস্ফোরণের পর সবচেয়ে ভয়াবহ পরমাণু দুর্ঘটনা ছিল এই দাইচি পরামাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়া।
অনেকেই বলছেন, এবারের ভূমিকম্প তাদের ২০১১ সালের পরিস্থিতির কথা মনে করিয়ে দিয়েছে। ওই ভূমিকম্পে প্রায় ১৮ হাজার মানুষ প্রাণ হারায়। গত আগস্টে জাপানের হোক্কাইদো শহরে ৬ মাত্রার একটি ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। ওই ভূমিকম্পের উপকেন্দ্র ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে ৪৬ কিলোমিটার গভীরে।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়