২৩শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ  । ৭ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ 

ভোটের পর সচিবালয়ে উৎসবের আমেজ

প্রতিদিনের ডেস্ক
সরকারের শীর্ষ প্রশাসনিক দফতর সচিবালয়ে বিরাজ করেছে উৎসবের আমেজ। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেষে সোমবার (৮ জানুয়ারি) তিন দিনের ছুটির পর খুলেছে সচিবালয়। দুদিন সাপ্তাহিক ছুটির সঙ্গে যোগ হয় ভোটের দিনের সরকারি ছুটি। কাজে যোগ দিয়ে নির্বাচনের আলাপ-আলোচনা-বিশ্লেষণ করে অনেকটাই নিস্তেজ কর্মহীন দিন পার করেছেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সোমবার সচিবালয় ঘুরে এমন দৃশ্যই চেখে পড়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সকাল ৯টায় অফিস শুরু হলেও অধিকাংশ দফতরের কর্মকর্তা কর্মচারীরা এসেছেন সকাল ৯টার অনেক পরে। প্রথমত ভোটের পরের দিন, দ্বিতীয়ত শীতের সকাল দেরির কারণ বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অধিকাংশ মন্ত্রী রবিবার সচিবালয়ে আসেননি। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ কিছু সময়ের জন্য নিজ দফতরে এসে কুশল বিনিময় করেছেন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে। মতবিনিময় করেছেন উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে।
আলাপ করলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দফতরে কর্মরত পুলিশ কনস্টেবল আলমগীর হোসেন জানিয়েছেন, রাজধানীতে পুলিশের ডিউটি করি। ভোট দেওয়ার সুযোগ পাই না কোনও সময়েই। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। দায়িত্বের কারণেই সচিবালয়ে এসেছি। মন্ত্রী মহোদয় এলাকায় রয়েছেন। তাই অনেকটাই কর্মহীন রয়েছি। গতকাল ভোট হয়ে গেলো। চাকরির সুবাদে এলাকায় যেতে পারিনি। তাই এখন দেশের খবরা-খবর নিচ্ছি। বিভিন্ন জনের জয়-পরাজয়ের তথ্য বিশ্লেষণ করছি।
অপরদিকে ‘ম’ আদ্যক্ষরের অর্থ মন্ত্রণালয়র একজন উপসচিব জানিয়েছেন, দফতরে নতুন মন্ত্রী কে আসছেন তা নিয়ে আলোচনা করছি। অতীতের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড পর্যালোচনা করছি। নিজের অঞ্চলের ভোটে কে জিতলো কে হারলো তার খোঁজ-খবর নিচ্ছি। ভোটের পরের দিন বলে কাজ কম। তাই এই সুযোগটুকু পেলাম। কয়েকটা দিন পরেই তো আবার শুরু হবে কর্মযজ্ঞ।
সচিবালয়ের কর্মচারীদের আনা-নেওয়ার কাজে নিয়োজিত বিআরটিসির গাড়িগুলোকে অন্যদিনের মতো ব্যস্ত দেখা যায়নি। অপেক্ষাকৃত কম সংখ্যক কর্মচারী নিয়ে কম সংখ্যক গাড়ি সচিবালয়ে এসেছে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিআরটিসি গাড়ির চালক মোহাম্মদ হোসেন জানিয়েছেন, সব রুটেই গাড়ি গেছে, তবে সংখ্যায় কম। যেসব রুটে গাড়ি গেছে সেসব রুটের যাত্রীও কম এসেছে। ভোটের পরের দিন বলেই এই অবস্থা।
ব্যতিক্রম নয় রাজধানী ঢাকার অন্যদিকের চিত্রও। একাধারে দেশের সবচেয়ে জনবহুল ও ব্যস্ততম নগরী হওয়ায় জীবনের তাগিদে এখানে সর্বদা মানুষের ছুটে চলা। সেই ব্যস্ততম রাজধানী ঢাকা নগরী এখন অনেকটাই যেন বিশ্রাম নিচ্ছে।
রবিবার (৭ জানুয়ারি) দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে আওয়ামী লীগ। নিরঙ্কুশ জয় পেয়ে টানা চতুর্থবার ক্ষমতা নিশ্চিত করলো দলটি। ভোট শেষ হলেও এখনও রাজধানীতে নির্বাচনের আমেজ কাটেনি। গাড়ির চাপ কম। অসহনীয় যানজট নেই। রাস্তাঘাট ফাঁকা। মানুষজনও কম। সবকিছু বেশ শান্ত।
রাজধানীর ব্যস্ত রাস্তাগুলো এখন প্রায় ফাঁকা। গতকালের চেয়ে আজ সোমবার রাস্তায় অটোরিকশা ও রিকশার পাশাপাশি ব্যক্তিগত গাড়িও চলতে দেখা গেছে। কিছু কিছু এলাকায় যাত্রীদের অপেক্ষা করতে দেখা গেছে কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য। সকালে অফিস এলাকাগুলোতেও যানবাহনের চাপ তেমন লক্ষ করা যায়নি। সর্বদা ব্যস্ত নগরী এখন অনেকটাই বিশ্রাম নিচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রাজধানীতে রিকশাচালক তোফাজ্জেল হোসেন জানিয়েছেন, ভোটের পরের দিন বলে সর্বত্রই ঈদের আমেজ বিরাজ করছে। সবাই খুশি। কারণ, কোনও গণ্ডগোল ছাড়া সুন্দর একটি ভোট উৎসব দেখলো দেশবাসী। তবে যারা ভোটে যাননি বা ভোটে হেরে গেছেন তাদের কথা অবশ্য আলাদা। বাজারে-অফিসে সবখানেই মানুষ কম। রাস্তায়ও মানুষ কম। এ কারণে আজ আমার আয়ও কম হবে বলে জানান তিনি।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়