প্রতিদিনের ডেস্ক
দীর্ঘদিন ধরে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের গলার কাঁটা হয়ে আছে ফ্লোর প্রাইস (সর্বনিম্ন দাম)। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের রক্ষায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দামে ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণ করে দেয়। কিন্তু সেই ফ্লোর প্রাইসই শেয়ারবাজারের উন্নয়নে হয়ে দাঁড়িয়েছে কড় অন্তরায়। স্বাভাবিক পরিবেশ হারিয়েছে দেশের শেয়ারবাজার। কারও কারও মতে, ফ্লোর প্রাইস দিয়ে শেয়ারবাজারের মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়া হয়েছে।
গত দেড় বছরে অর্ধেকের বেশি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকায় গতি হারিয়েছে লেনদেন। এ পরিস্থিতিতে ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়ার দাবি উঠেছে সব মহল থেকে। শেয়ারবাজারের গতি ফেরাতে সাবধানতার সঙ্গে ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়া উচিত বলে মনে করছেন শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্ট ও বিশ্লেষকরা।
তারা বলছেন, ফ্লোর প্রাইসের কারণে গত দেড় বছর শেয়ারবাজার মূলত বন্ধ করে রাখা হয়েছে। এতে নষ্ট হয়েছে বাজারের স্বাভাবিক পরিবেশ। ফ্লোর প্রাইসের কারণে কিছু কারসাজি চক্র সুবিধা পেয়েছে। প্রকৃত বিনিয়োগকারী ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ফ্লোর প্রাইসে খুব একটা লাভ হয়নি। বরং দীর্ঘদিন ধরে বিনিয়োগকারীদের টাকা এক জায়গায় আটকে রয়েছে।
বুধবার (১০ জানুয়ারি) দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং ব্রোকারেজ হাউজের মালিকদের সংগঠন ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) নেতারাও বৈঠক করে দ্রুত ফ্লোর প্রাইস তুলে শেয়ারবাজার স্বাভাবিক লেনদেনে ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছেন।
পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন অ্যাসোসিয়েশন থেকে দাবি জানানো হচ্ছে। তবে কমিশন এখনো ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়নি। পরিস্থিতি ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে তারপর কমিশন এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
শেয়ারবাজারে টানা দরপতন দেখা দিলে ২০২২ সালের ২৮ জুলাই এক নির্দেশনা দিয়ে প্রতিটি সিকিউরিটিজের ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেয় বিএসইসি। ৩১ জুলাই ফ্লোর প্রাইস কার্যকর হওয়ার পর থেকেই শেয়ারবাজারে লেনদেন খরা দেখা দেয়। দুই হাজার কোটি টাকার ওপরে উঠে যাওয়া লেনদেন ধারাবাহিকভাবে কমতে কমতে এক পর্যায়ে দুইশ কোটি টাকার ঘরে নেমে যায়।
একটি সুস্থ ও গতিশীল শেয়ারবাজারের জন্য ফ্লোর প্রাইস তুলে দিতে হবে। তবে ফ্লোর প্রাইস তুলে দিলে বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। এ কারণে প্রয়োজনীয় সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে এবং গোপনীয়তার সঙ্গে ফ্লোর প্রাইস তুলে দিতে হবে।- ডিএসইর সাবেক পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন
লেনদেন খরা প্রকট হয়ে উঠলে ২০২২ সালের ২১ ডিসেম্বর শেয়ারবাজার থেকে ১৬৯ প্রতিষ্ঠানের ফ্লোর প্রাইস তুলে দেয় বিএসইসি। ফ্লোর প্রাইস তুলে এসব প্রতিষ্ঠানের সার্কিট ব্রেকারের (দাম বাড়া বা কমার সীমা) ক্ষেত্রে নতুন নিয়ম চালু করা হয়। দাম বাড়ার ক্ষেত্রে স্বাভাবিক সার্কিট ব্রেকার দেওয়া হলেও, দাম কমার সর্বোচ্চ সীমা বেঁধে দেওয়া হয় এক শতাংশ। তবে তাতে পরিস্থিতির উন্নতি না হলে এবং কিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমে যেতে থাকলে ২০২৩ সালের ১ মার্চ আবার এসব প্রতিষ্ঠানের ফ্লোর প্রাইস ফিরিয়ে আনা হয়।
এভাবে ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেওয়ার কারণে গত দেড় বছর ধরে তালিকাভুক্ত অর্ধেকের বেশি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট কার্যত খুব একটা লেনদেন হয়নি। ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকা বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট প্রতিদিন হাতে গোনা কয়েকটি লেনদেন হয়েছে। লেনদেন শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সর্বনিম্ন দামে প্রতিদিন লাখ লাখ শেয়ার বিক্রির বিক্রির আদেশ আসায় সাধারণ বিনিয়োগকারীরা তাদের কাছে থাকা শেয়ার বিক্রির সুযোগ পাননি। ফলে মাসের পর মাস তাদের বিনিয়োগ এক জায়গায় আটকে রয়েছে।
অবশ্য এর মধ্যেও কিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। যেগুলো কারসাজি চক্র পরিকল্পিতভাবে দাম বাড়িয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এর মাধ্যমে কারসাজি চক্র শেয়ারবাজার থেকে মোটা অঙ্কের মুনাফা করলেও বাস্তবে বেশিরভাগ সাধারণ বিনিয়োগকারীর খুব একটা লাভ হয়নি। বরং ফ্লোর প্রাইসের সঙ্গে রাজনৈতিক অস্থিরতাসহ নানান ইস্যু যুক্ত হয়ে শেয়ারবাজারের পরিস্থিতি আরও নাজুক হয়ে উঠেছে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর শেয়ারবাজার কিছুটা ইতিবাচক ধারায় ফেরার ইঙ্গিত দেওয়ায় আবার আলোচনায় উঠে এসেছে ফ্লোর প্রাইস। শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, একটি সুস্থ, স্বাভাবিক ও গতিশীল শেয়ারবাজারের জন্য ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়া এখন জরুরি হয়ে উঠেছে। তবে ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। ফ্লোর প্রাইস তুলে দিলে বাজারে একটি নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে, সে বিষয়টি মাথায় রেখেই এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে তুলে দিতে হবে।
এ বিষয়ে ডিএসইর সাবেক পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন বলেন, ‘একটি সুস্থ ও গতিশীল শেয়ারবাজারের জন্য ফ্লোর প্রাইস তুলে দিতে হবে। তবে ফ্লোর প্রাইস তুলে দিলে বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। এ কারণে প্রয়োজনীয় সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে এবং গোপনীয়তার সঙ্গে ফ্লোর প্রাইস তুলে দিতে হবে।’
এদিকে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ড. এটিএম তারিকুজ্জামান সম্প্রতি ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরাম (সিএমজেএফ) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে শেয়ারবাজারের মন্দার জন্য ফ্লোর প্রাইসকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, ফ্লোর প্রাইস কোনো সমাধান নয়। এটা শেয়ার প্রাইস নির্ধারণে সরাসরি হস্তক্ষেপ। রেগুলেটর বা স্টক এক্সচেঞ্জ কেউ প্রাইস ফিক্স (নির্ধারণ করে দেওয়া) করতে পারে না, এটা আমাদের অর্ডিন্যান্সে বলা আছে। দামে হস্তক্ষেপ করা পৃথিবীর কোথাও নেই। স্টক এক্সচেঞ্জ প্রাইস ডিসকভারের জায়গা। সুতরাং ফ্লোর প্রাইস কোনো সমাধান নয়।
তিনি বলেন, মার্কেট এখন খারাপ। লেনদেনের ভলিউম কম। অনেকে ব্লক হয়ে আছেন। তারা কোনো সেল করতে পারছেন না, ক্রেতাও পাচ্ছেন না। সবাই জানে এটা নিয়ম নয়। অবশ্যই এখন বাজারের এ অবস্থার জন্য এটা (ফ্লোর প্রাইস) একটি কারণ। এর সঙ্গে আন্তর্জাতিক কিছু ইস্যুও আছে। আমি কখনোই ফ্লোর প্রাইসের পক্ষে না। এটা যদি চালু করার আগে আমাকে বলতো আমি বলতাম না।
ডিএসইর এক সদস্য বলেন, ২০১০ সালে শেয়ারবাজারে ধস নামার পর মার্জিন ঋণ নিয়ে বিনিয়োগ করা বিনিরয়োগকারীদের রক্ষায় ফোর্সড সেল বন্ধ করা হয়। এর মাধ্যমে শেয়ারবাজারের বড় ধরনের ক্ষতি হয়। ফোর্সড সেল বন্ধ করার কারণে শেয়ারবাজারে যে ক্ষতি হয়, তার রেশ এখনো রয়ে গেছে। আর গত দেড় বছর ফ্লোর প্রাইস দিয়ে শেয়ারবাজার মূলত বন্ধ করে রাখা হয়েছে। এই ফ্লোর প্রাইস দিয়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কোনো লাভ হয়নি। বরং দেশের শেয়ারবাজারের মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, বাজারের গতি ফেরানোর জন্য ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়ার কোনো বিকল্প নেই। বাজারের পরিস্থিতি ভালো হবে, তারপর ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়া হবে, এটা কোনো যুক্তি হতে পারে না। কারণ ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়া ছাড়া বাজারের গতি ফেরার কোনো লক্ষণ নেই। ক্যানসার হলে যেমন কেমোথেরাপি দিতে হয়, এখন শেয়ারবাজারেও সে রকম কেমোথেরাপি দিতে হবে। এই কেমোথেরাপি হলো ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়া। ফ্লোর প্রাইস তুলে নিলে হয়তো বাজারে সাময়িক নেতিবাচক প্রভাব পড়বে, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদের জন্য বাজারের স্বাস্থ্য ভালো হবে।
ডিএসইর আরেক সদস্য বলেন, ফ্লোর প্রাইসের কারণে গত দেড় বছরে শেয়ারবাজারের লেনদেন আশঙ্কাজনক হারে কমে গেছে। এতে লোকসানের মধ্যে পড়েছে বেশিরভাগ ব্রোকারেজ হাউজ। কারণ ব্রোকারেজ হাউজগুলোর আয়ের উৎস লেনদেন থেকে পাওয়া কমিশন। ফ্লোর প্রাইসের কারণে বিনিয়োগকারীরা লেনদেন করতে না পারায় ব্রোকারেজ হাউজগুলোর আয় আশঙ্কাজনক হারে কমে গেছে। লোকসানে পড়ে অনেক ব্রোকারেজ হাউজ কর্মীদের বেতন ঠিকমতো দিতে পারছে না। এভাবে চলতে থাকলে কিছু হাউজ দেউলিয়া হয়ে যেতে পারে। ব্রোকারেজ হাউজ এবং সার্বিক শেয়ারবাজার রক্ষায় ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়ার কোনো বিকল্প দেখছি না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও শেয়ারবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ বলেন, ‘ফ্লোর প্রাইস দিয়ে শেয়ারবাজারের মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়া হয়েছে। বাজারের বিরাট ক্ষতি হয়ে গেছে ফ্লোর প্রাইসের কারণে। দুই হাজার কোটি টাকা লেনদেন হওয়া বাজারে ৩০০-৪০০ কোটি টাকার লেনদেন হচ্ছে। শেয়ারবাজারের গতি ফেরার জন্য ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়ার কোনো বিকল্প নেই।’
ফ্লোর প্রাইস দিয়ে শেয়ারবাজারের মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়া হয়েছে। বাজারের বিরাট ক্ষতি হয়ে গেছে ফ্লোর প্রাইসের কারণে। দুই হাজার কোটি টাকা লেনদেন হওয়া বাজারে ৩০০-৪০০ কোটি টাকার লেনদেন হচ্ছে। শেয়ারবাজারের গতি ফেরার জন্য ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়ার কোনো বিকল্প নেই।- শেয়ারবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, ‘ফ্লোর প্রাইস আমাদের শেয়ারবাজারের বড় ধরনের ক্ষতি করেছে। অবশ্যই ফ্লোর প্রাইস দিয়ে শেয়ারবাজারের মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়া হয়েছে, এটা বলা যায়। দুটি জিনিস আমাদের শেয়ারবাজারের বড় ধরনের ক্ষতি করেছে। এর একটা হলো ২০১০ সালে ফোর্সড সেল বন্ধ করা, আর একটা হলো এখনকার ফ্লোর প্রাইস।’
তিনি বলেন, ‘ফোর্সড সেল বন্ধ করার কারণে যেসব মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউজ মার্জিন ঋণ দিয়েছিল, তাদের প্রত্যেকের পোর্টফোলিও ঋণাত্মক হয়ে যায়। ফোর্সড সেল বন্ধের মাধ্যমে শেয়ারবাজারের যে ক্ষতি করা হয় গত ১১-১২ বছরে তা পূরণ করা সম্ভব হয়নি। এখন ফ্লোর প্রাইস দিয়ে আবার বাজারের বড় ক্ষতি করা হয়েছে। দেশি-বিদেশি সব ধরনের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এটি নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।’
‘ফ্লোর প্রাইসের কারণে ভালো ভালো প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম এক জায়গায় আটকে রয়েছে। কিছু জাঙ্ক শেয়ারের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। এর মাধ্যমে কারসাজি চক্র এবং তাদের সঙ্গে থাকা কিছু মানুষ বড় ধরনের মুনাফা তুলে নিয়েছে। বিপরীতে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা লোকসান গুনেছেন।’
ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়ার জন্য অ্যাসোসিয়েশনগুলো থেকে দাবি জানানো হয়েছে। কমিশন বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখছে। তবে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়ার বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।- বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম
বিএসইসির সাবেক এই চেয়ারম্যান বলেন, ‘টাকা যেহেতু আটকে যাচ্ছে, বিক্রি করা যাচ্ছে, সেহেতু ভালো শেয়ারে কেউ বিনিয়োগ করেনি। দেশি বা বিদেশি বিনিয়োগকারী। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের ক্ষেত্রে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। কারণ বিদেশিরা বুঝে গেছে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করলে যে কোনো সময় এটা তোলা যায় না, টাকা আটকে যায়। সুতরাং, এটা সুদূরপ্রসারী বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য ক্ষতি হয়েছে এবং দেশীয় দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের ক্ষতি হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ফ্লোর প্রাইসের কারণে শেয়ারবাজারে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি হয়েছে। লেনদেন না হওয়ায় অনেক ব্রোকারেজ হাউজ লোকসানের মধ্যে পড়েছে। বাজারের গতি ফেরাতে হলে ফ্লোর প্রাইস তুলে দিতে হবে। ফ্লোর প্রাইস তুলে দিলে বাজার হয় তো সাময়িকভাবে একটা ফল করবে। বাজার যদি পড়ে জোর করে তো আটকে রাখা যাবে না। তারপর একটা সময় আসবে আবার বাড়বে। এটাই শেয়ারবাজারের ধর্ম। আপনি জোর করে বছরের পর বছর এক জায়গায় আটকে রাখবেন এটা কোনো রেশনাল (বিচারবুদ্ধিসম্পন্ন) মানুষ চিন্তা করতে পারে না।’
যোগাযোগ করা হলে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ‘ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়ার জন্য অ্যাসোসিয়েশনগুলো থেকে দাবি জানানো হয়েছে। কমিশন বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখছে। তবে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়ার বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’