১৭ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ  । ১লা জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ 

ভারতে ওয়্যারেবল ডিভাইসের বাজার আরো বাড়বে

প্রতিদিনের ডেস্ক
বিগত বছর প্রযুক্তি খাতে প্রবৃদ্ধির দিক থেকে ভারতের বাজার অনেকটাই এগিয়ে ছিল। স্মার্টফোন থেকে শুরু করে স্মার্টওয়াচসহ বিভিন্ন ওয়্যারেবল ডিভাইসের বাজার প্রবৃদ্ধিতে ছিল। ২০২৪ সালে দেশটির ওয়্যারেবল ডিভাইসের বাজার আরো বাড়বে। বিভিন্ন ব্র্যান্ড ও বিশ্লেষকদের পূর্বাভাসের বরাতে ইটি টেলিকমের খবরে এ তথ্য উঠে এসেছে।
সাশ্রয়ী মূল্যের কারণে দেশটির গ্রাহক পর্যায়ে ট্রু ওয়্যারলেস স্টেরিও (টিডব্লিউএস) ইয়ারবাডস ব্যবহার বাড়ছে। এছাড়া বিশ্লেষকদের অভিমত, বর্তমানে ভারতে ফ্যাশন অ্যাকসেসরিজ হিসেবে স্মার্টওয়াচের ব্যবহার বাড়ছে। তরুণ থেকে শুরু করে নারীদের মধ্যেও স্মার্টওয়াচের চাহিদা ঊর্ধ্বমুখী। এছাড়া স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিভিন্ন ফিচার গ্রাহক বাড়াতে ভূমিকা রাখছে।
আইডিসি ইন্ডিয়ার ওয়্যারেবল ডিভাইস বিভাগের সিনিয়র বাজার বিশ্লেষক ভিকাশ শর্মা বলেন, ‘চলতি বছর ইউআই/ইউএক্সের স্থানীয়করণ, ইন-হাউজ অ্যাপ তৈরি, সিমভিত্তিক কলিং, ওয়াই-ফাই সংযোগসহ স্মার্টওয়াচগুলোয় বিভিন্ন সুবিধা যুক্তের বিষয়টি প্রাধান্য পাবে।’
মিড থেকে প্রিমিয়াম পর্যায়ের স্মার্টওয়াচগুলোয় এসব ফিচার আগে থেকেই রয়েছে। কিন্তু বর্তমানে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মধ্যে প্রতিযোগিতা বাড়ছে। যে কারণে বাজেট স্মার্টওয়াচগুলোয়ও এসব ফিচার যুক্ত করা হতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। কেননা প্রতি প্রান্তিকে এ ক্যাটাগরির ডিভাইস বেশি বিক্রির রেকর্ডও রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ নয়েজ ও বোট উভয় কোম্পানিই গত বছর ফোরজি ইসিম কলিং সুবিধাযুক্ত স্মার্টওয়াচ উন্মোচন করেছে।
স্মার্টওয়াচ নির্মাতা নয়েজের সহপ্রতিষ্ঠাতা অমিত খাত্রি জানান, সিমনির্ভর কলিং সুবিধা, ওয়াই-ফাইসহ বিভিন্ন অ্যাডভান্সড ফিচার পণ্যে যুক্ত করার জন্য কোম্পানি ভালো অবস্থানে রয়েছে। মূলত ব্যবহারকারীদের প্রত্যাশা পূরণের পাশাপাশি এ খাতে অন্যতম উদাহরণ তৈরির জন্যই কোম্পানির এ উদ্যোগ।
অমিত খাত্রি জানান, ২০২৩ সালে কোম্পানিটি বছরওয়ারি হিসাবে ১০০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। আইডিসি প্রকাশিত তৃতীয় প্রান্তিকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কোম্পানিটি স্মার্টওয়াচের বাজারে ১০ দশমিক ৮ শতাংশ হিস্যা নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল। অন্যদিকে সামগ্রিকভাবে প্রযুক্তি খাতে হিস্যা ছিল ২০ দশমিক ৭ শতাংশ। আইডিসির তথ্যানুযায়ী, চতুর্থ স্থানে থাকা ফাস্ট্র্যাক (Fastrack) বছরওয়ারি হিসাবে ২০২৩-এর তৃতীয় প্রান্তিকে ৩১৩ দশমিক ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে এবং বাজার হিস্যা ১ দশমিক ৭ থেকে ৫ দশমিক ১ শতাংশে উন্নীত করেছে।
টাইটানের ওয়্যারেবল বিভাগের সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং প্রধান আদিত্য রাজ বলেন, ‘অন্য কোম্পানির তুলনায় কোম্পানির গড় বিক্রিমূল্য (অ্যাভারেজ সেলিং প্রাইস বা এএসপি) টাইটান বাজারে ভালো অবস্থান তৈরি করতে পেরেছে। তবে চ্যালেঞ্জ যে একেবারেই নেই তা নয়। বাজারে অনেক ব্র্যান্ড রয়েছে এবং তারা সাশ্রয়ী মূল্যে গ্রাহককে ডিভাইস অফার করছে।’
২০২৩ সালে ওয়্যারেবল ডিভাইসের গড় বিক্রিমূল্য নিম্নমুখী ছিল। মূলত কোম্পানিগুলো ২ হাজার রুপির সেগমেন্টকে প্রাধান্য দেয়ায় তা গড় মূল্যে প্রভাব বিস্তার করে। ইন্টারন্যাশনাল ডাটা করপোরেশনের (আইডিসি) তথ্যানুযায়ী, ২০২৩ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে স্মার্টওয়াচের গড় বিক্রিমূল্য বছরওয়ারি হিসাবে ৩৫ দশমিক ৫ শতাংশ কমে ২৬ ডলার ৭০ সেন্টে নেমে এসেছিল। অন্যদিকে টিডব্লিউএসের গড় বিক্রি মূল্য বছরওয়ারি হিসাবে ১৭ দশমিক ১ শতাংশ কমে ১৯ ডলার ৫০ সেন্টে নেমে এসেছে।
তালিকার দ্বিতীয় স্থানে থাকা বোল্ট অডিও ভারতের বাজারে দ্রুত প্রবৃদ্ধি অর্জন করছে। ২০২৩ সালের তৃতীয় প্রান্তি;কে কোম্পানিটির বিক্রি বছরওয়ারি হিসাবে ২৬৭ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়েছে এবং বাজার হিস্যা ছিল ৮ দশমিক ৬ শতাংশ।
বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান কাউন্টারপয়েন্টের সিনিয়র রিসার্চ অ্যানালিস্ট আনশিকা জেইন বলেন, ‘সামনের বছরগুলোয় স্মার্টওয়াচের বাজার দুই অংকের প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে। কোম্পানিগুলো পণ্যের পরিধি বাড়ানোর যে উদ্যোগ নিয়েছে সেটির প্রভাবেই প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদন ও বড় পরিসরের খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে চুক্তিও বড় প্রভাবক হিসেবে কাজ করবে।’

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়