পা‌রিবা‌রিক কলহে আত্মগোপনে যান ব্যাংক কর্মকর্তা রাজিব

0
22

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
পারিবারিক অশান্তির কারণে স্বেচ্ছায় আত্মগোপন করেছিলেন ব্যাংক কর্মকর্তা রা‌জিব আহমেদে (৪০)। ২২ দিন পর শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) রাত ৮টার দিকে খুলনার হো‌টেল থেকে তাকে উদ্ধার করে পু‌লিশ। শ‌নিবার (১৩ জানুয়া‌রি) সকালে এ তথ‌্য নি‌শ্চিত করেছেন কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকিবুল ইসলাম। তবে ওই ব‌্যাংক কর্মকর্তার স্ত্রী জানান, তার স্বামী নিজে থেকে বা‌ড়ি ফিরে আসেন। পরে প‌রিবা‌রের লোকজন তাকে থানায় নিয়ে যায়। গত ২২ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ১০টায় কুমারখালী পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের শেরকান্দি এলাকা থেকে রাজিব নিখোঁজ হন। ওই দিন রাতে কুমারখালী থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন তার স্ত্রী রায়হানা পারভীন। তাকে উদ্ধারের দা‌বি‌তে মানববন্ধনও করেন প‌রিবারের লোকজন। রাজিব আহমেদ পূবালী ব্যাংকের কুমারখালী শাখার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত। তিনি কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার বামনপাড়া গ্রামের ইব্রাহিম আলীর ছেলে। ওসি আকিবুল ইসলাম জানান, পা‌রিবা‌রিক অশা‌ন্তির কার‌ণে রা‌জিব আহমেদ স্বেচ্ছায় আত্ম‌গোপনে ছিলেন। তি‌নি মান‌সিকভা‌বে কিছুটা বির্পযস্ত। নি‌খোঁজের পর থে‌কে তি‌নি একা‌ধিক মোবাইল সিম ব‌্যবহার করে‌ছেন। প্রযু‌ক্তি ব‌্যবহা‌র ক‌রে তাকে শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) রাত ৮টার দিকে খুলনার সোনাডাঙ্গা এলাকার হোটেল থেকে উদ্ধার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে তার প‌রিবারের কা‌ছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ওই ব‌্যাংক কর্মকর্তার স্ত্রী রায়হানা বেগম মুঠোফোনে সাংবাদিকদের বলেন, ‘স্বামী নিখোঁজের পর থেকে আমি সন্তানদের নিয়ে বাবার বাড়ি খোকসাতে আছি। শুক্রবার সন্ধ‌্যা ৬টার দিকে আমার স্বামী আমাকে ফো‌ন দি‌য়ে জিজ্ঞাসা করেন, আমি কোথায় আছি? এর ঘণ্টা খা‌নেক প‌র তি‌নি বা‌ড়িতে এসে বলেন, তাকে কেউ কিছু জিজ্ঞাসা করবে না। তিনি অসুস্থ ও ক্লান্ত। তার ফিরে আসার খবর শ্বশুর বা‌ড়ির আত্মীয়-স্বজন ও পু‌লিশকে জানাই। রাত সাড়ে ১১টার দি‌কে শ্বশুর বা‌ড়ির লোকজন এসে তাকে কুমারখালী থানায় নিয়ে যায়। সঙ্গে আমিও ছিলাম। থানা থেকে আমি জি‌ডি তুলে নেওয়ার পর শ্বশুর বা‌ড়ির লোকজন তাকে ভেড়ামারা নিয়ে যায়।’ রায়হানা বেগম বলেন, ‘আমরা কুমারখালীর শেরকান্দি এলাকার ভাড়া বাসা‌য় থাকতাম। সেখান থে‌কে রা‌জিব নিয়মিত ব্যাংকে যাওয়া-আসা করতেন। নি‌খোঁজের কয়েক‌ দিন আগে আমি খোকসায় বাবার বা‌ড়িতে যায়। ২১ ডিসেম্বর রাতে তিনি আমা‌কে মুঠোফোনে জানিয়েছিল, শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) গ্রামের বাড়ি ভেড়ামারা যাবেন। এরপর ২২ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আমার সঙ্গে কথা বলে গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে রওয়ানা দেন। কিন্তু বের হওয়ার ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর থেকে তার ফোন বন্ধ পাই।’ পা‌রিবা‌রিক কলহের ব‌্যাপারে তি‌নি বলেন, ‘প্রতি‌টি সংসারে একটু-আধটু কল‌হ থাকেই।’ ব্যাংক কর্মকর্তার বড় ভাই সাইদুল ইসলাম সান্টু বলেন, ‘রাজিবের পারিবারে কলহ আছে। তাই মান‌সিক চাপ সহ‌্য করতে না পেরে আত্ম‌গোপনে চলে যায়। শুক্রবার রাতে রাজিবের শ্বশুর বা‌ড়ি থে‌কে জানতে পা‌রি, রাজিব ফিরে এসেছে। পরে আমরা‌ গিয়ে তাকে থানায় নিয়ে যায়।’