প্রতিদিনের ডেস্ক
রফতানিতে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ২০২৩ সালে এনভিডিয়ার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চিপ কিনেছে চীনের বিভিন্ন সামরিক অবকাঠামো, রাষ্ট্রীয় এআই গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয়। সম্প্রতি এক নথি পর্যালোচনার মাধ্যমে রয়টার্স প্রকাশিত খবরে এ তথ্য উঠে এসেছে।
তথ্যানুযায়ী, মার্কিন চিপ নির্মাতা কোম্পানিটি যেসব চিপ বিক্রি করেছে, তার সিংহভাগই কিনেছে চীনের বিভিন্ন অপরিচিত কোম্পানি। এর মাধ্যমে একটি বিষয় পরিষ্কার সেটি হলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় যুগান্তকারী উদ্ভাবন ও সামরিক বাহিনীর মাধ্যমে ব্যবহার হতে পারে এমন শঙ্কায় চীনে উন্নতমানের চিপ রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়ার পরও চ্যালেঞ্জের মধ্যে রয়েছে ওয়াশিংটন।
নথি অনুসারে, চীনের কাছে যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি উন্নত মানের চিপ কেনাবেচার বিষয়টি অবৈধ নয়। এমনকি মার্কিন নিষেধাজ্ঞা জারির পরও চীনের বিভিন্ন অবকাঠামো এনভিডিয়ার সেমিকন্ডাক্টর কিনেছে। চীনের কাছে যেসব মার্কিন চিপ বিক্রি নিষিদ্ধ, তার মধ্যে রয়েছে এনভিডিয়ার এ১০০ ও এইচ১০০। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর থেকেই চীন ও হংকংয়ে চিপ দুটি বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। পরবর্তী সময়ে এ নিষেধাজ্ঞার বিভিন্ন শর্ত মেনে এনভিডিয়া তুলনামূলক ধীর গতির এ৮০০ ও এইচ৮০০ চিপ তৈরি করে। কিন্তু গত বছরের অক্টোবরে জারি করা নতুন নিষেধাজ্ঞায় চীনে এ দুটি বিক্রিও বন্ধ করে দেয় এনভিডিয়া।
এআই সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কাজের জন্য সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য চিপ হলো এনভিডিয়ার গ্রাফিক্স প্রসেসিং ইউনিট (জিপিইউ) চিপ। মেশিন লার্নিং ব্যবস্থায় যে বিশাল তথ্য প্রক্রিয়া করতে হয় তাতে বিভিন্ন প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানির চেয়ে ঢের এগিয়ে মার্কিন এ চিপ জায়ান্ট। এদিকে, চীনে এনভিডিয়ার চিপ নিয়ে যে চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে, তা থেকে ইঙ্গিত মেলে, হুয়াওয়ের মতো বিভিন্ন চীনা কোম্পানি নতুন এআই চিপ বিকাশ করলেও তা এনভিডিয়ার সত্যিকারের বিকল্প নয়। আর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আগে চীনের এআই চিপ বাজারের ৯০ শতাংশ দখল করে রেখেছিল এনভিডিয়া।
এনভিডিয়ার উন্নত চিপগুলোর ক্রেতাদের মধ্যে রয়েছে চীনের বিভিন্ন অভিজাত ইউনিভার্সিটি ও দুটি এমন অবকাঠামো, যেগুলো মার্কিন রফতানি নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়ে। সেগুলো হলো হার্বিন ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি ও ইউনিভার্সিটি অব ইলেকট্রনিক সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি অব চায়না। প্রতিষ্ঠান দুটির বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা চীনের সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন বিষয়ের সঙ্গে জড়িত, যা যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ পরিপন্থী। এর মধ্যে গত বছরের মে মাসে এনভিডিয়ার কাছ থেকে ছয়টি এ১০০ চিপ কিনেছে হার্বিন ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি। পরবর্তী সময়ে, একই বছরের ডিসেম্বরে কোম্পানিটির কাছ থেকে একটি এ১০০ চিপ কিনেছে ইউনিভার্সিটি অব ইলেকট্রনিক সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি অব চায়না। তবে চিপগুলো কেনার উদ্দেশ্য শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি বলে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এছাড়া এনভিডিয়া বা কোম্পানির অনুমোদিত খুচরা বিক্রেতারা চীনের কাছে এ চিপগুলো সরবরাহ করেছে কিনা, সেটি শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি বলে উঠে এসেছে রয়টার্সের পর্যালোচনায়। আর সরবরাহকরা কীভাবে এনভিডিয়ার চিপ সংগ্রহ করেছে, সেটিও পরিষ্কার নয়।