২৯শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ  । ১২ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ 

দুই দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় মন্দার মুখে অ্যাপল

প্রতিদিনের ডেস্ক
প্রায় ১৭ বছর আগে প্রথম আইফোন উন্মোচন করে অ্যাপল। গান বাজানো ও ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধা থাকায় তথ্য এবং যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনে। এরপর কোম্পানিটি দ্রুত প্রযুক্তি খাতের অন্যতম কোম্পানি হয়ে উঠেছে। কিন্তু দুই দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় মন্দার মুখে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের এই কোম্পানি। খবর স্কাই নিউজ।
প্রায় ১৭ বছরেরও বেশি সময় ধরে আইফোনের মাধ্যমে বাজারে শীর্ষ স্থান দখলে রেখেছে অ্যাপল। ২০২৩ সালে বিশ্বের প্রথম কোম্পানি হিসেবে ৩ ট্রিলিয়ন ডলার মূল্যের কোম্পানিও হয়ে ওঠে এটি। তবে সুদিন অনেকটাই পেছনে ফেলে এসেছে অ্যাপল। প্রযুক্তি খাতে প্রতিযোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এছাড়া জীবনযাপন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় গ্রাহক পর্যায়ে চাহিদা হ্রাস, বিভিন্ন দেশের কঠোর নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ও আইনি জটিলতা বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সব মিলিয়ে কোম্পানিটি এখন সবচেয়ে বড় মন্দার মুখে রয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। চলতি বছরের শুরুতে ওয়াল স্ট্রিটের বিশ্লেষকরা অ্যাপলের শেয়ারে নিম্নমুখী হওয়ার বিষয়ে দ্বিতীয়বার পূর্বাভাস দিয়েছেন। যে কারণে পুরো বছর বাজার পরিস্থিতি কেমন হবে সে বিষয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।
চলতি সপ্তাহের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রে ইচ্ছাকৃতভাবে কিছু আইফোনের গতি কমিয়ে দেয়ায় দীর্ঘদিন ধরে চলমান ক্লাস অ্যাকশন মামলায় গ্রাহকদের ৫০ কোটি ডলার দেয়া শুরু করেছে অ্যাপল। এছাড়াও সবচেয়ে প্রভাবশালী এআই ব্যবস্থা বিকাশের জন্য অন্যান্য প্রযুক্তি জায়ান্টের মধ্যে চলমান প্রতিযোগিতায়ও অংশ নেয়নি কোম্পানিটি। বিশ্লেষকরা বলছেন, এমন পদক্ষেপের কারণেই বিশ্বের বৃহত্তম কোম্পানির প্রতিযোগিতায় ওপেনএআইয়ের প্রধান সমর্থক মাইক্রোসফটের কাছে হেরে গেছে অ্যাপল।
অনেকে এ যুক্তিও দিয়েছেন যে স্মার্টফোন বাজারের পরিপক্বতা কোম্পানিটির জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ। কারণ এটি গ্রাহকের মনোভাব পরিবর্তন করছে বলে প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রযুক্তি বিষয়ক গবেষণা কোম্পানি সিসিএস ইনসাইটের প্রধান বিশ্লেষক বেন উড বলেন, ‘গত দশক বা তারও বেশি সময় ধরে স্মার্টফোনের বাজার বদলেছে সমস্ত স্বীকৃতির বাইরে।’ –
তিনি আরো বলেন, ‘এটি মানুষের দৈনন্দিন পণ্যের মতো হয়ে গেছে। স্মার্টফোন এখন এমন একটি জিনিস যা মানুষের কাছে থাকতেই হবে এবং অনেক সময় ধরে তারা এটি সঙ্গেও রাখছে।’
অন্য বিশেষজ্ঞরা আশা প্রকাশ করেছেন, অ্যাপলের ইকোসিস্টেম অ্যাপ, পরিষেবা এবং অন্যান্য প্রযুক্তিতেই গ্রাহক ফিরে আসবেন। প্রযুক্তি বিশ্লেষক ও লেখক চার্লস আর্থার বলেন, ‘আইফোন বিক্রি কমলেও মানুষের হাতে এখনো আইফোন রয়েছে। যার অর্থ, তাদের কাছে ক্লাউড স্টোরেজ, অ্যাপল টিভি প্লাস, ফিটনেস অ্যাপ্লিকেশন ও এ ধরনের নানা পরিষেবা বিক্রি করতে পারে অ্যাপল।’
ফেব্রুয়ারি মাসটি অ্যাপলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হবে বলেও স্কাইনিউজের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। বিনিয়োগকারীরা মাসের শুরুতে আর্থিক ফল প্রকাশের জন্য অপেক্ষা করছেন। আগের বছরের বড়দিনের সময়ের হিসাবে, টানা পঞ্চম প্রান্তিকে কোম্পানির রাজস্ব কমেছে কিনা তা নিশ্চিত করবে আর্থিক প্রতিবেদন। আগামী মাসে অ্যাপলের নতুন পণ্য ভিশন প্রো অগমেন্টেড রিয়ালিটি হেডসেট যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে আনা হবে। এর দাম নির্ধারণ করা হয়েছে সাড়ে ৩ হাজার ডলার। প্রযুক্তিবিদদের মতে এ উন্মোচনই প্রমাণ করবে যে বিভিন্ন ধারণা দিয়ে বাজার বদলে দিতে অ্যাপল সক্ষম কিনা

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়