৫ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ  । ১৯শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ 

ব্যক্তিগত যান ছেড়ে সারথি যখন মেট্রোরেল

প্রতিদিনের ডেস্ক
মতিঝিলে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন ইনজামামুল ইসলাম। নিজস্ব মোটরসাইকেল থাকলেও অফিসে যেতে বেশিরভাগ সময়ই যাতায়াত করেন মেট্রোরেলে। রাত অবধি মেট্রোরেল চালু হওয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন এই যাত্রী।মেট্রোতে যাতায়াত করতে অনেকেই অফিস যেতে গাড়ি ছেড়ে কাটেন মেট্রোর টিকিট।
রোববার (২১ জানুয়ারি) সকালে পল্লবী, আগারগাঁওসহ প্রায় প্রত্যেকটা স্টেশনে ছিল যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড়৷
প্রথমবারের মতো সময় বাড়িয়ে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত উত্তরা-মতিঝিল রুটে চলছে মেট্রোরেল। শনিবার (২০ জানুয়ারি) থেকে ১৩ ঘণ্টার নতুন সূচি অনুযায়ী মেট্রোরেল চালু হয়। এখন থেকে সকাল ৭টা ১০ মিনিট রাত ৮টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত মেট্রোরেল চলাচল করছে।
নতুন সূচি অনুযায়ী সকাল ৭টা ১০ মিনিটে উত্তরা থেকে মেট্রোরেল ছাড়ে। শেষ ট্রেনটি মতিঝিল থেকে ছেড়ে যায় রাত ৮টা ৪০ মিনিটে। তবে এ সময়ে শুধু এমআরটি ও র্যাপিড পাসধারীরা যাতায়াত করতে পারবেন। আর কাউন্টার থেকে সাধারণ টিকিট কিনে যাত্রীরা সকাল ৭টা ৩০ মিনিট থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলাচল করতে পারবেন।
যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাত অবধি মেট্রো চালু হওয়ায় ব্যক্তিগত পরিবহন ছেড়ে অনেকেই অফিসে যাচ্ছেন মেট্রোরেলে।
রোববার সকালে পল্লবী স্টেশনে ইনজামামুল বলেন, মোটরসাইকেলে মিরপুর থেকে মতিঝিল যেতে এক থেকে দেড় ঘণ্টা সময় লাগছে। রোদ, বৃষ্টিতে যানজটে বসে থাকতে হচ্ছে। এছাড়া লম্বা সময় মোটরসাইকেল চালানো ক্লান্তিকর। এ কারণে অফিসে যাতায়াতে এখন মেট্রো ব্যবহার করি। আর এখন যেহেতু রাত পর্যন্ত চলাচল করছে, সব ধরনের যাত্রীদের সুবিধাই হচ্ছে।
পল্লবী স্টেশনে কথা হয় ব্যবসায়ী আতিকের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমার গাড়ি আছে। নিজে ড্রাইভ করি কিন্তু প্রায়ই মেট্রোতে যাতায়াত করি। কেননা উপরে জ্যাম থাকে না, রাস্তায় যতই জ্যাম থাকুক না কেনো। কোন কাজে দেরি করা আমার পছন্দ না। এ জন্য ফার্মগেট, মতিঝিল কোন কাজ বা মিটিং থাকলে মেট্রোতে যাতায়াত করি। এটা সবার পরিবহন।
সবগুলো স্টেশন খুলে দেওয়া অফিসের গাড়িও সকাল থেকে রাত পর্যন্ত উত্তরা-মতিঝিল রুটে চলাচল করা যাত্রীরা যানজটকে বলছেন বিদায়। কেননা নিকটবর্তী গন্তব্যে পৌঁছাতে অনেকেই ব্যবহার করছেন এই যানটি।
লালমাটিয়া মহিলা কলেজের ছাত্রী তাসনুভা তারিন। ফার্মগেট থেকে নেমে তিনি রিকশায় যাচ্ছেন গন্তব্যে। তিনি বলেন, মিরপুর থেকে ধানমন্ডি যাওয়ার বাস একটাই। সেটা সব সময় পাওয়া যায় না। বিশেষ করে ক্লাস টাইমে। আর বাসে উঠা নামা করাও অত্যন্ত পীড়াদায়ক। এ জন্য মেট্রোতেই যাতায়াত করি।
রাজু আহমেদ নামের এক যাত্রী বলেন, মেট্রোরেল অনেক সময় বাঁচিয়ে দিয়েছে। এটার ভেতরের পরিবেশও খুবই ভালো। সব স্টেশন চালু হওয়ায় এখন সঠিক সময়ে গন্তব্যে পৌঁছানো যায়।
মেট্রোর কারণে তিন মাস আগে অফিস গাড়ির সুবিধা ছেড়েছেন মোহাম্মদ শামীম নামের একজন। তিনি বলেন, সকালে ১০টায় কাজে যেতে অফিস গাড়িতে উঠতে হকো সকাল ৮ টায়৷ পল্টনে যেতে ২ ঘণ্টা লাগতো। এখন অফিস গাড়ি বাদ দিতেছি। কেননা সাড়ে ৯টায় মেট্রো ধরতে পারলেই সঠিক সময়ে অফিস পৌঁছানো সম্ভব। ৩-৪ মাস ধরে প্রত্যেকদিনই মেট্রোতে যাতায়াত করছি। এখন অনেক আরামেই চলাচল করতে পারছি।

আরো দেখুন

Advertisment

জনপ্রিয়